ডাউন সিনড্রোম নিয়েই এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে
সাধ আর সাধ্যর ফারাক ঘুচিয়ে এ যেন অলৌকিক স্বপ্নপূরণ। জন্ম থেকেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল ভয়ঙ্কর রোগ। যার পোশাকি নাম ডাউন সিনড্রোম। তাই বলে কি আর অধরা থাকতে পারে নিজের স্বপ্ন? হাজারো বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছল মার্কিন কিশোর এলি রেইমার।
বয়স সবে পনেরো। খাতায় কলমে তা বেড়েছে ঠিকই কিন্তু জিনের মারপ্যাঁচে সেই আন্দাজে আসেনি মানসিক পরিণতি। নিজের ছোটখাটো কাজেও লাগে অন্যের সাহায্য। সেই নিয়েই গত মাসে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছে গিয়েছিল এলি। সে-ই প্রথম মার্কিন কিশোর, যে ডাউন সিনড্রোমের শিকার হয়েও এই অসাধ্য সাধন করেছে। এলির মতোই বিভিন্ন রোগের শিকার যে শিশুরা, তাদের পাশে দাঁড়াতে এই অভিযানের আয়োজন করেছিল তার পরিবার।
ঠিক কী অসুবিধায় পড়তে হয় ডাউন সিনড্রোমের শিকার শিশুদের? মনস্তত্ববিদদের মতে, মূলত বৌদ্ধিক বিকাশের দিক থেকে পিছিয়ে থাকে এরা। এ ছাড়া থাকে কিছু শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও। আর তাই বাকিদের তুলনায় এলির এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ওঠাটা আলাদা। এক মার্কিন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে নিজেদের সেই অসাধারণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন এলিরবাবা জাস্টিন রেইমার।
বেস ক্যাম্পে এলি।
এভারেস্টের দক্ষিণ দিকে ১৭,৬০০ ফুট উঁচুতে রয়েছে একটা বেস ক্যাম্প। এখান থেকেই এভারেস্ট জয়ের জন্য রওনা হন অভিযাত্রীরা। কনকনে ঠান্ডা, তার মধ্যে মাঝেমাঝেই তুষারঝড়ের ভয়। সব কিছুকে পেরিয়ে পাক্কা দু’সপ্তাহ ধরে ১১৩ কিলোমিটার পথ একা একাই হেঁটে উঠেছে এলি।
জাস্টিনের কথায়, একে ‘স্যুরিয়াল’ বললেও বোধ হয় ঠিক মতো বোঝানো যায় না। চারিদিক ছেয়ে বিশাল প্রকৃতি। “এত কষ্ট করে এত উঁচুতে উঠে এলির মুখে যে হাসি দেখতে পেয়েছি, তার তুলনায় আসে না কিচ্ছুটি।” পাহাড়ে ওঠার আনন্দ আর উত্তেজনায় সকলের আগে আগেই চলছিল এলি। এমনকী তখন বাকিদের থেকে তার শরীর অনেকটাই ভাল ছিল বলে দাবি জাস্টিনের। যদিও যাত্রাপথের পুরোটাই যে মসৃণ ছিল, তা মোটেই নয়। কিছু ক্ষণ পর পরই এলির রক্তচাপ মাপা, অক্সিজেন ঠিক মতো নিতে পারছে কি না তা দেখা পালা দিয়ে করে গিয়েছিলেন দলের সকলে।
ডাউন সিনড্রোমে আক্তান্ত বছর পঁয়ত্রিশের এক ব্যক্তি এর আগেও এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। কিন্তু এত কম বয়সে এই কীর্তি কেবল এলিরই। শুধু ইচ্ছে আর মনের জোর সঙ্গী করেও যে চূড়ায় ওঠা যায়, প্রমাণ করল সে। অসুস্থতা কখনও কখনও প্রতিবন্ধকতা নয়, বরং তা-ই বাঁধন ছেঁড়ার জোর, অন্যদের সেই বার্তাই দিতে চায় এই কিশোর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.