কেউ বয়সের ভারে কাবু। কেউ স্বামীকে হারিয়ে সহায়সম্বলহীন। কেউ প্রতিবন্ধী। মাসে মাসে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ভাতা পেয়েই কোনও রকমে জীবীকা নির্বাহ করেন ওঁরা। পাঁচ মাসেরও বেশি ওই ভাতা পাচ্ছেন না কেউই। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় দশ হাজারের বেশি বাসিন্দা ভাতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ভাতার টাকা এলেই তা ব্লক প্রশাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কী কারণে ওঁরা ভাতা পাচ্ছেন না তা খোঁজ নিয়ে দেখব।” মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি পাসকেল মিঞ্জ বলেন, “পাঁচ মাস ধরে ভাতা না পাওয়ার ফলে মানুষ সমস্যায় পড়েছেন এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। আমরা সে সমস্যার কথা জানিয়েই দ্রুত ভাতার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছি। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ওই ভাতা পঞ্চায়েত সমিতিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” তিনি অভিযোগ করেন, অনেক সময় প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ওই ভাতা পৌঁছতে দেরি করা হয়। কয়েক বছর ধরে মহকুমা পরিষদের চারটি ব্লক ফাঁসিদেওয়া, খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি ও মাটিগাড়ার প্রায় দশ হাজার বাসিন্দা ভাতা পেয়ে আসছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পে গরিব বাসিন্দাদের ওই ভাতা দেওয়া হয়। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও বীরুপাক্ষ মিত্র জানান, ২০১২ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হয়েছে। তার পর সরকারি ভাবে সমস্ত বেনিফেসিয়ারিকে অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া যারা ভাতা পাচ্ছেন তাদের উপর একটি সমীক্ষাও হয়। তিনি বলেন, “অ্যাকাউন্ট তৈরি ও সমীক্ষার কারণে ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হচ্ছে। ব্লকে ওই কাজ হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটবে।”
বালাসন কলোনির বাসিন্দা মাধব বর্মন, মোহিনী বর্মনেরা বার্ধক্য ভাতা পান। তাঁরা বলেন, “ছেলেরা দিনমজুরি করে সংসার চালায়। যে দিন কাজ হয় খাবার জোটে। যে দিন কাজ হয় না, অর্ধাহারে থাকতে হয়। তাই মাসে ৫০০ করে টাকাই আমাদের খুব কাজে লাগে। পাঁচ মাস ধরে পাচ্ছি না। পঞ্চায়েত সমিতিতে গিয়েছি। গ্রাম পঞ্চায়েয়তে গিয়েছি। কেউ কিছু বলতে পারছেন না। কবে ভাতা পাব বুঝতে পারছি না।” ওই এলাকার সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য বিজয়কৃষ্ণ রায় বলেন, “গ্রামের সব থেকে গরিব মানুষরাই ভাতা পান। সেটা দিয়েই তাঁদের অনেকটা দিন চলে। এবারে পাঁচ মাস ধরে তা না পাওয়ায় খুব কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাঁদের।” আঠারখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিনা বর্মন জানান, ভাতা না পেয়ে বাসিন্দারা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
|
একনজরে উপভোক্তা |
|
• বিধবা ভাতা-১,৭৬৬ • বার্ধক্য ভাতা-৭৭৮৯ • কৃষি ভাতা-৯২১ • খাদি ভাতা-৭৪
• প্রতিবন্ধী ভাতা-২৯
• মৎস্য ভাতা-১৩৫ • তফসিলি উপজাতি-১২৪২
• তফসিলি উপজাতি--১০০০ টাকা
ও বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা-সহ
অন্যান্য-- ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে প্রতি মাসে |
|