নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বাজেট পাশ হয়েছে কি না তা নিয়ে বিতর্কের জেরে নতুন আর্থিক বছরের (২০১৩-১৪) প্রথম দিনেই জটিলতা তৈরি হয়েছে পুর ভবনে। পুরসভা সূত্রের খবর, ‘বিতর্কিত’ চেয়ারম্যান নান্টু পাল বাজেট পাশ হয়নি বলে জানান। মেয়র দাবি করেন, ধ্বনিভোটে বাজেট পাশ হয়েছে। পুরসভার তরফে কমিশনার রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরে চেয়ারম্যান এবং মেয়রের দাবি সংক্রান্ত দু’টি রিপোর্টই পাঠিয়েছেন।
কিন্তু, সরকারের মত পুরসভার কাছে পৌঁছয়নি। এই অবস্থায় বাজেটে প্রস্তাবিত প্রকল্প ও বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনাগুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তবে নিজের ক্ষমতাবলে দৈনন্দিন কাজগুলি আপাতত চালাতে পারবেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন “কাজ সব ঠিক চলছে। শহরে আলো থেকে জল সব পরিষেবাই পাচ্ছেন মানুষ। কারও কোনও অভিযোগ নেই।”
পুরসভা সূত্রে খবর, আর্থিক বছরের প্রথম দিনেই কিছু কাজের ফাইলে সই করতে রাজি হননি পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান। কিছুদিন পরে সই করবেন বলে তা ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। পুরসভার এক অফিসার জানান, বাজেট পাশ হয়েছে কি না সেই বিতর্কের নিষ্পত্তি না হলে কমিশনারের পক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই ফাইলে সই করা সম্ভব নয়। তা হলে আগামী দিনে তাঁকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলে ওই অফিসাররা মনে করেন। পুর কমিশনার অবশ্য বলেছেন, “আমি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।” পুর কমিশনার না বললেও পুরসভার এক আধিকারিক জানান, বাজেট ছাড়া দৈনন্দিন কাজের জন্য বা জরুরি প্রয়োজনে যে সব ক্ষেত্রে টাকা খরচ করা যেতে পারে পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে তা পাশ করিয়ে নিতে হয়। পুর কমিশনারের দায়িত্ব ওই খরচের বিষয়টি মেয়র পারিষদদের জানানো। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন সেই খাতে টাকা খরচ করা যুক্তিযুক্ত হয়েছে কি না। সে ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি জটিল হয়েছে মেয়র পারিষদরা না থাকাতেও। তৃণমূল কাউন্সিলরদের ভোটে নান্টু পাল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র সমস্ত পারিষদদের খারিজ করে দিয়েছেন। সমস্ত দায়িত্বই এখন তাঁর হাতে। তা ছাড়া বোর্ড মিটিংয়ে খরচ পাস করানোর ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে পুরসভায় কংগ্রেস সংখ্যালঘু বলে। দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য তাই যে খরচ করা হবে তা পরে পাশ করানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ করেছে, শহরের উন্নয়ন এবং পরিষেবা থমকে পড়েছে। তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “বাজেট পাশ না হলে কাজের টাকা বরাদ্দ হবে কী ভাবে? বাজেট পাশ ছাড়া যে কোনও খাতে টাকা খরচ করার ক্ষেত্রেই সমস্যা হবে। হঠাৎ কোনও জায়গায় জলের পাইপ খারাপ হলে তা ঠিক করতে টাকা বরাদ্দ করা যাবে না। নতুন করে কোনও রাস্তার কাজ করা যাবে না। সাফাই বিভাগের গাড়ির খরচ দেওয়া থেকে পুরকর্মী, আধিকারিকদের গাড়ির তেল কেনা সব ক্ষেত্রেই সমস্যা হবে। বাসিন্দাদেরও দুর্ভোগ বাড়বে।”বামেরাও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, এই পরিস্থিতিতে কোনও নতুন কাজ করতে পারবে না পুরসভা। রাস্তা মেরামতি থেকে বিপিএল তালিকায় কোনও নতুন নাম তোলা যাবে না। তবে দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই বলে জানান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। |