ছাদহীন তহবাজার রোদ, বৃষ্টি নিয়েই টিকে আছে
দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় শতাধিক বছরের প্রাচীন লালগোলা তহবাজার আজ ধ্বংসের মুখে। প্রায় ৯ বিঘা এলাকা জুড়ে থাকা ওই তহবাজারের মধ্যে রয়েছে মাছ ও সব্জি বাজার, পান কিংবা কাপড় বাজার। চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় চলছে বাজার। নিকাশির অভাবে গ্রীষ্মকালেও কাদায় প্যাচপেচে দশা। গুড়ের বাজারের টিনের ছাউনি অনেক বছর আগে উড়ে গিয়েছে। তারপর আর সেই ছাউনি দেওয়া হয়নি। সেই গুড়ের বাজারও আর নেই। গুড় ব্যবসায়ীদের অনেকেই আজ লটারির টিকিট বিক্রি করে কোনও মতে সংসার চালান। বাজারের মাঝ বরাবর চলে যাওয়া স্টেশনমুখী ‘মিনিস্টার রোড’-এর দখল নিয়েছে সব্জি বিক্রেতারা। সিন্ডিকেট মোড়ের পাইকরি বাজারও নেমেছে ‘মিনিস্টার রোড’-এর উপর।
লালগোলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সমর বিশ্বাস বলেন, “অস্বাস্থাকর পরিবেশের ফলে বাজারে ঢোকা দায়। নিকাশিনালা থাকলেও আবর্জনায় বন্ধ। দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় দিন দিন বাজারের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।” লালগোলার বাসিন্দা সারজামান শেখ বলেন, “বিকল্প কোন বাজার না থাকায় এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ওই অস্বাস্থকর ঘিঞ্জি বাজারেই বাধা হয়ে আমাদের বাজার করতে হয়।” ব্যক্তি মালিকানায় থাকা ওই বাজারের দায় নিতে নারাজ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতও। সি পি এমের দখলে থাকা লালগোলা পঞ্চায়েতের প্রধান অরবিন্দ সিংহ বলেন, “ওই বাজার থেকে কিছু লোক প্রতি দিন টাকা তোলেন। সংস্কার তো তাঁদেরই করা কথা। তা ছাড়া নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে আমার কাছে কেউ কখনও আবেদন করেনি।”
লালোগোলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহ-সম্পাদক অজয় ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘লালগোলার বাজারের অব্যবস্থা দূর করতে মাস আটেক আগে বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধান, ব্যবসায়ী সমিতি ও বিশিষ্টজনদের সম্মিলিত উদ্যোগে একটি বৈঠক করা হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে মাইক প্রচারও করা হয়। রাস্তা জবরদখল করে ব্যবসা করা বন্ধ করার জন্য মাইক প্রতারে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে কিন্তু কেউ কান দেনিন।” বি ডি ও প্রসেনজিৎ ঘোষ বাজারের সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “রাস্তা দখল করে ব্যবসা বন্ধ করার জন্য এক বার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। ওই বাজারে যত জন ব্যবসা করেন তাঁদের সবাইকেক অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো জায়গাও নেই। ফলে সমস্যা রয়ে গিয়েছে।”
লালগোলার রাজা তথা নবগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত বীরেন রায় ছিলেন শতাধিক বছরের প্রাচীন ওই তহবাজারের মালিক। সি পি এণের প্রাক্তন বিধায়ক বীরেনবাবু ভূমিজীবী সংঘেরও সদস্য ছিলেন। জমির মালিকানার উর্ধ সীমা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ভূমিজীবী সংঘের দায়ের করা মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ফলে ওই বাজারের সম্পত্তিও এখন বিচারাধীন। বীরেন রায়ের আমলে ওই বাজার বাৎসরিক ইজারা দেওয়া হত। তাঁর মৃত্যু পর বাজরের অর্ধেকের মালিক হন বীরেন রায়ের বোনেরা। বাকি অর্ধেকের মালিক বীরেন রায়ের স্ত্রী প্রণতীদেবী। প্রণতীদেবীর সম্পতির ‘কেয়ারটেকার’ সৌরভ রায় বলেন, ‘‘বাজারের তাঁর অংশের সাড়ে চার বিঘা প্রণতীদেবী ২০০৪ সালে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে ওই সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় ক্রেতাদের নামে ওই জমির রের্কড হয়নি। আর সে কারণে ওই জমির ক্রেতাদের ব্যবসায়ীরা ভাড়া দেন না।” তার ফলে ওই বাজার সংস্কার করতে কোনও পক্ষই এখন সচেষ্ট নয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.