ট্রান্সফর্মার বাড়ন্ত, বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি মহৎপুরে
ছর পার হল। এখনও মিলল না বিদ্যুৎ। অথচ এরই মধ্যে বার দু’য়েক বিল এসেছে বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত ওই পরিবারগুলিতে। বছর দেড়েক আগে চাপড়া ব্লকের মহৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দারিদ্র সীমার নীচের বেশ কিছু পরিবার রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বৈদ্যুতিকীকরণ যোজনার আওতায় বিদ্যুৎ চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু এত দিনেও ওই পঞ্চায়েত এলাকার বাগানপাড়া, কেল্লাপাড়া ও মালিপোতা এলাকার প্রায় জনা কুড়ি বিপিএল পরিবার রয়েছে অন্ধকারে ।
বাগানপাড়ায় বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়েছে। তার লাগানোও হয়েছে সারা মাস ছ’য়েক আগে। কিন্তু ট্রান্সফর্মার বসেনি। তাই বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি ওই সমস্ত পরিবারে। কিন্তু তাতে কী হয়েছে? ইতিমধ্যে বার দু’য়েক বিল এসেছে। অবশ্য চাপড়ার বিদ্যুৎ দফতরে নালিশ জানাতে বন্ধ হয়েছে ভুতুড়ে বিল আসা। ক্যাটকেটে গরম সহ্য করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। সন্ধ্যায় লম্ফের নিভু নিভু আলোতেই পড়াশোনা চলে পড়ুয়াদের। স্থানীয় পুকুরিয়া হাই স্কুলের ছাত্র সবুজ শেখ এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তার কথায়, “ভ্যাপসা গরমে হ্যারিকেনের আলোতেই পড়াশুনো করতে হয়। বিদ্যুৎ আর এল না।” পুকুরিয়া হাই স্কুলের শিক্ষক আয়ুব আলি জমাদার বলেন, “পাড়ায় বিদ্যুত নেই। পড়ুয়াদের ভরসা বলতে লন্ঠনের আলো। এই ভাবে পড়াশুনা করা যায় না।” পেশায় কৃষিজীবী এলাকার বাসিন্দা মোসলেম শেখের বক্তব্য, “অনেকদিন ধরেই শুনছি গ্রামে বিদ্যুৎ আসবে। কিন্তু শেষমেশ কবে যে আসবে বুঝতে ঠাউর করতে পারছি না। মাঠে শ্যালো চালানোর জন্য বিদ্যুৎ এসেছে বহু দিন আগে। পাড়াতেই যত অন্ধকার। আঁধারে ছেলেমেয়েরা ভালো করে পড়তেও পারে না।” স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিশ আলি শেখ বলেন, “বছর খানেক পাড়ার গোটা দশেক বিপিএল ভুক্ত পরিবার বিদ্যুৎ চেয়ে ‘কোটেশন’ জমা দিয়েছে। তার পর পোল বসানোও হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ আর এল না। ফি বছর গরমে পচে মরাই আমাদের ভবিতব্য।”
অন্য দিকে কেল্লাপাড়ার হালও একই। সেখানে গোটা কয়েক বিপিএল পরিবার প্রায় দেড় বছর আগে বিদ্যুৎ চেয়ে আবেদন জানায়। সেই থেকেই বিদ্যুতের জন্য হাপিত্যেশ করে অপেক্ষায় রয়েছে ওই পরিবারগুলি। কাজের অগ্রগতি বলতে সাকুল্যে একটি খুঁটি পোতা হয়েছে। সন্ধ্যায় পর অন্ধকারের মধ্যেই কাটাতে হয় লোকজনকে। মোবাইলের চার্জ দিতেও ছুটতে হয় পড়শি গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ ঘোষ জানান, অনেক চেষ্টা করেছি। চরকির মত বিদ্যুতের অফিসেও ঘুরেছি বার কয়েক। কিন্তু আমাদের অন্ধকার দশা আর ঘুচল না। মালিপোতার বৈদ্যুতিকীকরণের হালও তথৈবচ। এখানকার দারিদ্র সীমার নীচে বেশ কয়েকটি পরিবার বিদ্যুৎ চেয়ে আবেদন জানায় স্থানীয় বিদ্যুৎ বন্টন দফতরে। কিন্তু বছর পেরোলেও বিদ্যুতের দেখা মেলেনি।
সমস্যার কথা মেনেছেন স্থানীয় মহৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের গীতশ্রী দাস বলেন, “গ্রামের বেশ কয়েক ঘর বিপিএল ভুক্ত পরিবার আবেদন জানিয়েও বিদ্যুৎ পায়নি। পোল পোঁতা ও তার লাগানোর পরও সংযোগ না দেওয়ার কারণ বুঝতে পারছি না।” জেলার রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বৈদ্যুতিকীকরণ যোজনার প্রকল্প আধিকারিক জয়দেব মহান্তিও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “জেলায় গ্রামীণ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ শেষ করতে আরও আড়াই হাজার ট্রান্সফর্মার প্রয়োজন। দরকার চল্লিশ হাজার খুঁটি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় ওই অনুদান মিললেই জেলার সমস্ত বিপিএল পরিবারে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া যাবে।” তত দিন আঁধারই ভবিতব্য বিপিএল পরিবারগুলির।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.