টেটের হ্যাপা
‘ময়নাতদন্তে’ রেলের দাবি, গেট বন্ধ সাকুল্যে ১৩ মিনিট
টেট পরীক্ষায় সরকারি ‘অব্যবস্থা’ আড়াল করতে রেলের ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে ছিল রাজ্য সরকার।
বহরমপুর রেলগেটে টেট-এর পরীক্ষার্থীদের দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার খবর ছাড়া রাজ্য জুড়ে তেমন ‘বিশৃঙ্খলার’ খবরই পাননি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। বস্তুত রবিবার দুপুরভর পরীক্ষার বিবিধ অব্যবস্থা ঢাকতে ‘বেহাল রেল’-কেই ঢাল করেছিল সরকার। যা শুনে পরে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ ছিল, “টেট পরীক্ষায় ডাহা ফেল করে এখন দোষ ঢাকতে রেলের ঘাড়ে বন্দুক রাখছে রাজ্য সরকার।” এই চাপানউতোরের মাঝে বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে সে দিন ঠিক কী হয়েছিল, একবার দেখে নেওয়া যাক রবিবার, ওই লেভেল ক্রশিংয়ে সর্বোচ্চ ১৩ মিনিট বন্ধ ছিল রেলগেট।
বহরমপুরের রেলগেট। —নিজস্ব চিত্র।
এ ছাড়া লালগোলা-শিয়ালদহ রুটের আপ ও ডাউন অন্যান্য ট্রেন যাতায়াতের সময়ে রেলগেট তিন থেকে সাত মিনিট পর্যন্ত বার তিনেক বন্ধ রাখা হয়েছিল। বহরমপুর কোর্ট স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
সোমবার, পূর্ব রেলের ডিআরএম সুচিত্র দাস বলেন, “রবিবার আপ হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসের সঙ্গে ডাউন মেমু ট্রেনের ক্রশিংয়ের জন্য ১৩২ নম্বর পঞ্চাননতলা রেলগেট ১৩ মিনিট বন্ধ ছিল। কেননা, ওই দিন সকাল ১১.৪১ মিনিটে আপ হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে ঢুকেছে। ছেড়ে গিয়েছে ১১.৪৪ মিনিটে। অন্য দিকে ডাউন মেমু ১১.৩৮ মিনিটে স্টেশনে ঢুকে ১১.৪৭ মিনিটে ছেড়ে গিয়েছে। ওই দুটি ট্রেনের ক্রশিংয়ের জন্য ১১.৩৬ মিনিট থেকে ১১. ৪৯ মিনিট পর্যন্ত ১৩ মিনিট পঞ্চাননতলা রেলগেট বন্ধ ছিল।”
তাঁর কথায়, পথচারীদের ‘সুরক্ষার স্বার্থে’ই ১৩ মিনিট গেট বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ওই দুটি ট্রেনই প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষার্থীদেরও সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার দায় ছিল রেল কর্তৃপক্ষের। তাই রেলগেট বন্ধ করে ওই দুটি ট্রেনের যদি ক্রশিং না করানো হত, তাহলে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তে আরও বিলম্ব হত।”
বহরমপুর স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ-লালগোলা রুটে ১৫ জোড়া ট্রেন চলে। এ জন্য ১৩১ নম্বর চুঁয়াপুর ও ১৩২ নম্বর পঞ্চাননতলা রেলগেট দুটি ৬০ বার বন্ধ করতে হয়। এর বাইরেও মালগাড়ি, আরএমসি, লাইট ইঞ্জিন ও মালগাড়ি যাতায়াতের সময়েও রেলগেট বন্ধ রাখা হয়।
শিয়ালদহগামী ট্রেন যাওয়ার সময়ে চুঁয়াপুর রেলগেট বন্ধ ও খোলা হয়েছে, ৭.৪৭-৫০মিনিট, ৭.৫৪-৮.০২, ৮.৩৩-৮.৩৯, ৮.৫৩-৯টা, ৯.০৪-৯.০৭, ১০.১২-১০.২১, ১১.১০-১১.১৭, ১১.৩৬-১১.৪৯, ১২.৪০-১২.৪৬ মিনিট পর্যন্ত। একই ভাবে লালগোলাগামী ট্রেন যাওয়ার সময়ে পঞ্চাননতলা রেলগেট বন্ধ ও খোলা হয়েছে৭.৪৬-৭.৫০মিনিট, ৮টা-৮.১১ (মালগাড়ি), ৯টা-৯.১২, ১০.১৪-১০.১৬, ১১.২০-১১.২৫, ১১.৩৫-১১.৩৮, ১১.৪৫ -১১.৪৮, ১২.১১-১২.১৪, ১২.৪৫-১২.৪৮ মিনিট পর্যন্ত।
পূর্ব রেলের সিনিয়র জনসেংযাগ আধিকারিক অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সারগাছি থেকে বহরমপুরের সাড়ে ৮ কিমি দূরত্ব পার হতে এক্সপ্রেস ট্রেনের ৫-৬ মিনিট আর প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ১০ মিনিট লাগে। কোনও ট্রেন সারগাছি ছাড়লেই গেট বন্ধ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তাতে দীর্ঘক্ষণ পথচারীদের অপেক্ষা করার কথা। তাঁদের ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই দিতে এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে সারগাছি ছেড়ে আসার ৩ মিনিট পরে এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ক্ষেত্রে ৫ মিনিট পরে রেলগেট বন্ধ করা হয়।”
তিনি বলেন, “সিঙ্গল লাইনে ক্রসিংয়ের ক্ষেত্রে যে আইন আছে, সেই আইন মেনেই ৫-৭ মিনিটের বেশি রেলগেট কখনওই বন্ধ করে রাখা হয় না। রবিরারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর দুটো গেট বন্ধ না করলে আপ ও ডাউন ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকানো সম্ভব নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.