ছাদ টপকে বাড়িতে ঢুকে তাঁর নাম ধরেই ডাকাডাকি করেছিল দষ্কৃতীরা। তিনি দরজা খুলে দিতেই গলায় ছুরি চালিয়ে খুন করা হয় নবদ্বীপের পরিচিত এক সিপিএম নেতাকে।
রবিবার রাতে অরুণ নন্দী (৫৭) নামে নদিয়ার নবদ্বীপ লোকাল কমিটির ওই সদস্য খুনের পরে এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছড়ালেও পুলিশ কিংবা তাঁর দল এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ দেখছে না। বরং এ খুনের পিছনে ‘ব্যক্তিগত রেষারেষি’ রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ। আর, সিপিএমের নবদ্বীপ লোকাল কমিটির সম্পাদক গৌর কাপুরিয়া বলেন, “অরুণবাবু খুনের সঙ্গে
|
অরুণ নন্দী |
রাজনীতির কোনও যোগ আছে বলে মনে হয় না। তবে খুনি কে, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ। তদন্তে যেন ফাঁক না থাকে।” জেলার ডিএসপি (ডিএনটি) রবিউল আলাওল সর্দারও জানান, সবদিক ‘খতিয়ে দেখা’ হচ্ছে। এ দিন বিকেলে ময়নাতদন্তের পর ওই সিপিএম নেতার দেহ নিয়ে শোকমিছিল বের করেন দলীয় কর্মীরা।
কিন্তু এমন নৃশংসভাবে তাঁকে খুন করল কে? অরুণবাবুর স্ত্রী উত্পলাদেবী স্থানীয় স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্স। তিনি বলেন, “রবিবার রাতে ঘরের দরজায় কেউ ধাক্কা দিচ্ছিল। আমার শাশুড়ি ডাকছেন ভেবে উনি দরজা খুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে দু’জন মুখে গামছা বাঁধা লোক ঘরে ঢুকে পড়ে।” তিনি জানান, দুষ্কৃতীরা আলমারির চাবি চাইলে তাও দিয়ে দেন তিনি। আলমারি থেকে টাকাপয়সা নেওয়ার পর দুই দুষ্কৃতী দরজা খুলে দিতে বললে উত্পলাদেবী চাবির গোছা নিয়ে নীচে দরজা খুলতে যান। তাঁর কথায়, “আমি নীচে নামার সময় উনি মোবাইল থেকে ফোন করার চেষ্টা করতেই দুষ্কৃতীরা ওঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমি আর কিছু দেখিনি।” কিন্তু, পুলিশের একাংশের প্রশ্ন, স্বামী আক্রান্ত দেখেও উত্পলাদেবী নীচে নেমে গেলেন কেন? কেনই বা ফিরে এসে দেখলেন না দুষ্কৃতীরা তাঁকে আঘাত করেছে কিনা?
অরুণবাবুর বৃদ্ধা মা ছবিদেবী ওই বাড়িতেই থাকেন। তিনি বলেন, “বৌমার চিত্কারে হঠাত্ ঘুম ভেঙে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি দোতলার সিড়ির দরজার তালা খোলা। ঘরে অরুণের রক্তমাখা দেহ।” অরুণবাবু রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজেও যুক্ত ছিলেন। তার এক মাত্র ছেলে অর্পণ একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ঘটনার দিন সে ছিল কলকাতায়। অরুণবাবুর কাছেই থাকে ভাগ্নি সুস্মিতা দাস। এ দিন সেও নিজের বাড়ি গিয়েছিল। স্ত্রী ও
বৃদ্ধা মা ছিলেন বাড়িতে। তা জানতে পেরেই কি দুষ্কৃতীরা রবিবার রাতটা বেছে নিয়েছিল?
উত্তর খুঁজছে পুলিশ। |