রাত জেগে আফটার পার্টি ছিল, আছে, থাকবে। ম্যাচ জিতে উঠে শ্যাম্পেন-স্নানও ছিল, আছে, থাকবে। কিন্তু আইপিএলে সবই ক্রিকেটারদের করতে হবে কয়েকটা নিষেধাজ্ঞা মেনে।
ঔদ্ধত্যের কলার তুলে ‘মানব না’ বলার উপায় নেই। এ একেবারে খোদ আইসিসি-র নিষেধাজ্ঞা! সোমবার সকালে যা রীতিমতো বৈঠক ডেকে কেকেআর ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দিলেন আইসিসি-র দুর্নীতিদমন শাখার কর্তারা।
সলমন বাটের ভিডিও রেকর্ড দেখানো হল। মহম্মদ আসিফের কুখ্যাত ‘নো বল’-এর ভিডিও দেখিয়ে বোঝানো হল, আইপিএলের দুনিয়ায় স্পট ফিক্সিং করা কত সহজ। শুধু হালফিল কেলেঙ্কারির নমুনা নয়, মৃত হ্যান্সি ক্রোনিয়েকেও ব্যবহার করা হল উদাহরণ হিসেবে। |
নাইটদের থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক: ইডেনে এক ফ্রেমে কেকেআর কোচ-ক্যাপ্টেন-বোলিং
মেন্টর ট্রেভর বেলিস-গৌতম গম্ভীর-ব্রেট লি। সোমবার। |
গত বছরই ঘরোয়া ক্রিকেটে টি পি সুধীন্দ্র-সহ পাঁচ জন ক্রিকেটার ধরা পড়ার পর, কড়াকড়ি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আইসিসি। বেশ কিছু বিধিনিষেধ বহাল করা হচ্ছে। ফোন জমা-টমা দেওয়া তো আছেই, কিন্তু সবচেয়ে বেশি ভয় পাওয়া হচ্ছে মহিলাদের ব্যবহার করে ক্রিকেটারদের গড়াপেটায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার।
ঠিক কী কী বলা হল?
বৈঠকে মোটামুটি পাঁচ দফা নির্দেশনামা ধরানো হয় ক্রিকেটারদের। নির্যাস মোটামুটি এ রকম:
এক) আইপিএলে যেহেতু ক্রিকেটের সঙ্গে বিনোদনও গাঁটছড়া বাঁধে, তাই সুন্দরী তরুণী থেকে সাবধান। মানে, কোনও তরুণী যদি নিজেকে ক্রিকেটারের ফ্যান বলে পরিচয় দেয় বা কফিশপে দেখা করার আবদার করে, সযত্নে তা এড়িয়ে যেতে হবে। কে গ্যারান্টি দেবে যে, ওই মহিলাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না? মুখোমুখি দেখাসাক্ষাৎ-ই নয়, টুইটার-ফেসবুকের মাধ্যমে প্রলোভনের হাতছানিকেও এড়িয়ে যেতে হবে।
দুই) অচেনা লোকের থেকে টাকা নেওয়া চলবে না। কোনও গিফটও নয়। বরং সে রকম কিছু ঘটলে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, সবাইকে ছেড়ে আমি কেন? আমাকেই কেন টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও অনুষ্ঠানে গিয়ে উপহার পেলে আইসিসি-র নিষেধাজ্ঞা সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
তিন) খুব কাছের লোক ছাড়া হোটেলের ঘরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ঢুকে কিছু ঘটলে সেটা সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের দায়িত্ব।
চার) ম্যাচের এক ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল ফোন জমা করে দিতে হবে। খোলা যাবে ম্যাচ শেষের পরে। সব মিটে গেলে। |
আইপিএল মোড-এ: সুতোয় ঝোলানো কাগজেও
অটোগ্রাফ ডেয়ারডেভিলস অধিনায়ক জয়বর্ধনের। |
পাঁচ) মিডিয়াকেও যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা ভাল। বলা যায় না, মিডিয়ার এজেন্ট সেজেই কেউ কাজ হাসিল করতে চাইতে পারে। পকেটে করে আসতে পারে লোভনীয় আইপিএল চুক্তির প্রস্তাব। যা আদতে মরণফাঁদ ছাড়া কিছু নয়।
উপরোক্ত নিয়মাবলী সোমবারের বৈঠকে পইপই করে বোঝানো হয়েছে ক্রিকেটারদের। আইসিসি-র কর্তারাই বুঝিয়েছেন। এবং শেষে সতর্কবার্তা: আইপিএল উপভোগ করো, অসুবিধা নেই। নইলে কে বলতে পারে, তোমাদের অবস্থাও বাটের মতো হবে না?
|