নিকাশি নালা রয়েছে। তবু জল বয়ে যাচ্ছে রাস্তার উপর দিয়ে। মেদিনীপুর শহরের বেশির ভাগ এলাকাতে এটাই চেনা চিত্র। কোথাও আবর্জনায় ভরে গিয়েছে নালা আবার কোথাও নালার উপরে বসে গিয়েছে হকার। নালা পরিষ্কারে পদক্ষেপ করেনি পুরসভাও। ফলে বৃষ্টি হলে তো বটেই, এমন কি রাস্তার উপর গিয়ে জল বয়ে যাওয়াটা শহরের রোজকার ঘটনা।
মেদিনীপুর শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা পঞ্চুরচক। এখানে রয়েছে জেলার মুখ্য ডাকঘর। রয়েছে টেলিফোন অফিস। পাশেই মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুল। এছাড়াও দোকান-বাজার তো রয়েছেই। প্রতিদিনই বহু মানুষ ভিড় জমান এলাকায়। আর সেখানে গেলেই পেরিয়ে যেতে হয় নালার নোংরা, দূষিত জল। কিন্তু নিকাশি নালাটি সংস্কার করা যায়নি কেন?
পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শ্যামল ভকত বলেন, “হকাররা নালা দখল করে তার উপরে বসে গিয়েছে। কেউ আবার নালার উপরেই সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ীভাবে দোকান বা ক্লাব করে ফেলছেন। তাহলে নালা সংস্কার করব কী করে?” রাজ্যে এখন তৃণমূলের সরকার। মেদিনীপুর পুরসভাও তৃণমূলের দখলে। এই বেআইনি কাজ দেখার কথা তো পুরসভারই। তৃণমূল কাউন্সিলর শ্যামলবাবুর কৈফিয়ত, “আমি তো উচ্ছেদ করতে পারি না। বোঝানোর চেষ্টা করেছি কেউ শোনেনি।” |
পঞ্চুরচকে নর্দমার জল পেরিয়ে যাতায়াত। ছবি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
শুধু এই এলাকাই নয়, এলআইসি, কালেক্টরেট মোড়, হাসপাতাল রোডের প্রধান রাস্তাগুলির বেশিরভাগ জায়গাতে চিত্রটা একই। নালার জল উঠে এসেছে রাস্তায়। আর তাই পেরিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে হকাররা কী তাঁদের নৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন? মেদিনীপুর শহর হকার্স ও ক্ষুদ্র ব্যসায়ী সমিতির সম্পাদক শঙ্কর দাস বলেন, “আমরা নালা পরিষ্কারে সাহায্য করতে প্রস্তুত। পুরসভারই কোনও উদ্যোগ নেই। পুরসভা কেবল আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় এড়াতে চায়।” শঙ্করবাবুর দাবি, “এ বিষয়ে কোনও সমস্যা থাকলে পুরসভা তো বৈঠক ডাকতে পারে। বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ প্রায় ৫ বছর হতে চলল, একবারও এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেনি।” মেদিনীপুর শহরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “আমরা নালা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু হকারেরা সাহায্য করেননি। কিছু কিছু হকার সাহায্য করেন। ফলে মাঝে মধ্যে সেই জায়গাগুলি পরিষ্কার করাও হয়।”
এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করতেই ব্যস্ত। শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগী হচ্ছেন না কেউই। ফলে জঞ্জাল জমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নিকাশি আর রাস্তা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নোংরা জল! |