ভাড়াটের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও ঘর থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বাড়িওয়ালার স্ত্রী ও শ্যালককে। বর্ধমানের কালনা রোডের পীরপুকুরে রবিবার রাতের ঘটনা। ধৃতদের নাম সুমিতা চৌধুরী ও সুব্রত চৌধুরী। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় জড়িত আরও কয়েক জনকে খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা সোমনাথ চৌধুরীর বাড়ির এক তলায় আট বছর ধরে ভাড়া থাকেন এক দম্পতি। অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দিচ্ছিলেন সোমনাথবাবু। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি অন্য কোথাও ঘর ভাড়া না পাওয়ায় ওই বাড়িতেই থাকতে বাধ্য হচ্ছিলেন তাঁরা। ওই ভাড়াটে বেশ কয়েক বার বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, তাঁকে সপরিবারে উচ্ছেদের জন্য বাড়িওয়ালা চাপ দিচ্ছেন। এমনকী, নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও দাবি তাঁর। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বাড়ির মালিককে আইন মেনে ভাড়াটে উচ্ছেদে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। |
ঘেরা হয়েছে বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র। |
রবিবার রাতে ওই ভাড়াটের স্ত্রী পুলিশে অভিযোগ করেন, রাত ৮টা নাগাদ তাঁর স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাড়িওয়ালা সোমনাথবাবু, তাঁর স্ত্রী সুমিতা ও তাঁর মামাতো ভাই সুব্রত চৌধুরী পাড়ার কিছু দুষ্কৃতীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েন। তাঁকে বিবস্ত্র করে তাঁর চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন। এমনকী, তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে তাঁকে ঘর থেকে বের করে সদর দরজায় তিনটি তালা ঝুলিয়ে দেন বাড়িওয়ালা। কয়েকটি পোষা কুকুরকে ওই তালাবন্ধ ঘরের ভিতরে আটকে রাখাও হয়। পুলিশ জানায়, ফোনে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে সমাজবিরোধীদের বাধার মুখে পড়তে হয়। পরে থানা থেকে বড় বাহিনী গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে অভিযোগকারিণীকে বাড়িতে ঢোকায়।
অভিযোগকারিণীর দাবি, তাঁকে মারধরের সময়ে দুষ্কৃতীরা দাবি করে, তাদের পিছনে এলাকার উত্তমবাবু ও নারায়ণবাবু রয়েছেন। পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই দু’জন এলাকায় তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। তবে বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগকারিণী লিখিত অভিযোগে ওই দুই ব্যক্তির পদবি লেখেননি। তাঁরা কারা, তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায়, ওই দু’জন পাঠিয়ে বাড়ির মালিককে আইন ভাঙতে মদত দিয়েছেন, তা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে ওই দুই নেতার বক্তব্য, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই।” |