ফিরে এলেন দুই ‘অপহৃত’ ব্যবসায়ী
‘অপহরণ’-এর দু’সপ্তাহের মাথায় ফিরে এলেন শিলিগুড়ির দুই ব্যবসায়ী। রবিবার শিলিগুড়ির ওই দুই ব্যবসায়ী বিনোদ মিত্তল এবং সুরেশ অগ্রবালের চিকিৎসা করানো হয়। অসম পুলিশ জানিয়েছে, ন্যাশনাল সাঁওতাল লিবারেশন আর্মি (এনএসএলএ) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন ওই দু’জনকে অপহরণ করে। তাঁদের সত্যপুর-ডিমডিমা জঙ্গলে আটক করে রেখে দেওয়া হয়। ওই জঙ্গি সংগঠনের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের দু’জনের নাম রাম হাঁসদা, সরকার হেমব্রম। তাদের বাড়ি ওই এলাকাতেই। শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন বিনোদবাবু। দু’দিন আগে সুরেশবাবু।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “পুলিশি তল্লাশির চাপে ২ ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। আপাতত তাঁরা কিছুটা অসুস্থ রয়েছেন। একটু সুস্থ হলেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোসাইগাঁওয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হবে। ওই ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।” কোকরাঝাড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরোজিৎ সিংহ পানেশ্বর বলেন, “এনএসএলএ’ জঙ্গি সংগঠনের তিন সদস্যকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি অভিযানের সময় সুরেশবাবুকে জঙ্গলে রেখেই পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। পরে বিনোদবাবুকে রেখেও পালিয়ে যায়।” তিনি জানান, অভিযানের সময় বিহার থেকে অপহৃত এক ব্যক্তি বৈদ্যনাথ দাসকেও উদ্ধার করেন তাঁরা।
ওই দুই ব্যবসায়ীর শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা রয়েছে। অসমেও শিক্ষার জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন তাঁরা। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে গোসাইগাঁওয়ের বিধায়ক মহেন্দ্র নার্জারির সচিব পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বিনোদবাবুকে ফোন করে সেখানে একটি বড় বরাত রয়েছে বলে জানান। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার ব্রহ্মপুত্র মেলে চেপে গোসাইগাঁওয়ের দিকে রওনা হন ওই দু’জন। কোচবিহার যাওয়ার পর থেকে দু’জনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
ওই দুই ব্যবসায়ী পুলিশকে জানিয়েছেন, গোসাইগাঁও স্টেশনে এক জন বাইক নিয়ে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ট্রেন থেকে নামার পর বিধায়কের অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই বাইকে চাপিয়ে তাঁদের জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। গভীর জঙ্গলের দিকে বাইক এগিয়ে যাওয়ার পরই তাঁরা বুঝতে পারেন তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। দশ জনের বেশি বন্দুকধারি লোক তাঁদের চোখ বেঁধে একটি জঙ্গল ঘেরা জায়গায় নিয়ে যায়। তাঁদের হাতও অধিকাংশ সময় বেঁধে রাখা হয়। গাছের নিচে বসিয়ে তাঁদের ঘিরে রাখা হয়। সকাল হলেই ফের জায়গা বদল করা হয়। প্রতিদিন অপহরণকারীদের সঙ্গে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি হেঁটে জঙ্গলের ভিতরেই ঠিকানা বদল চলতে থাকে তাঁদের। অপরহণকারীরা তাঁদের কোনও কথা শুনতেই রাজি হয়নি।
বিমলবাবু বলেন, “দাদার উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগ রয়েছে। দু’দিনের ওষুধ নিয়ে যান। এর পর তাঁকে অপহরণ করা হয়। ওষুধ ছাড়াই দিনের পর দিন কাটাতে হয়। ঠিকমতো ঘুমোতে পারেনি। খাওয়া হয়নি।” তিনি জানান, অপহরণকারীরা মাছ-ভাত দিত। তিনি বলেন, “দু’জন নিরামিষ খাবার খেতেন। যার ফলে ওই খাবার খেতে পারেননি।” বিনোদবাবুর বন্ধু নরেশ অগ্রবাল জানান, দু’জনকেই জঙ্গল থেকে নিয়ে এসে স্টেশনের কাছাকাছি একটি জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা হাঁটতে হাঁটতে স্টেশনে পৌঁছন। পুলিশ তাঁদের বাড়িতে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, “অপহরণকারীরা ভেবেছিল অনেক বড় ব্যবসায়ীকে অপরহরণ করেছে। পরে তাদের ভুল ভাঙে। এ ছাড়া শিলিগুড়ি ও অসম পুলিশের তরফেও টানা অভিযান চালানো হয়। সব মিলিয়ে অপহণকারীরা তাঁদের ছেড়ে দেয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.