জিটিএ ভোটে প্রার্থী দিয়েও শেষ মুহূর্তে তুলে নিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু গত জানুয়ারি থেকে দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার পরে দার্জিলিং পাহাড়ে জমি শক্ত করতে লাগাতার সভা-সমাবেশ শুরু করল তৃণমূল। রবিবার সিআরপি ও পুলিশ পাহারায় দার্জিলিঙের গোর্খা দুখ নিবারণী সমিতির হলে এমনই এক সভায় এই দিন উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর সামনেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মোর্চার দার্জিলিং শহর কমিটির সদস্য তথা প্রবীণ চা শ্রমিক নেতা জংবাহাদুর তামাং সহ ৪২ জন। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের নেতা মনোজ দেওয়ান সহ ওই দলের ৭২ জন কর্মী-সমর্থকের হাতেও দলীয় পতাকা তুলে দেন গৌতমবাবু। |
গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টায় দার্জিলিং পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়ন শুরু হয়েছে। যাতে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের কর্মসূচি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে রাজ্য বদ্ধপরিকর। আমরাও দলীয় কর্মসূচি নিয়েছি। যাঁরা নিজেরাই আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন, তাঁদের সকলকেই স্বাগত জানাব।” যদিও মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির দাবি, তাঁদের দলের কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে তাঁর জানা নেই। তাঁর কথায়, “দার্জিলিঙে মোর্চার কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে শুনিনি। পরে খোঁজ নিয়ে বিশদে জানাব।” গোর্খা লিগ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে মনোজ দেওয়ান মঞ্চে দাঁড়িয়েই তাঁর সদ্য প্রাক্তন দলের সভাপতি মদন তামাং হত্যা মামলায় অধরা অভিযুক্ত দের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য উদ্যোগী হতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
ওই অনুষ্ঠানে এবং পাহাড়ের রাস্তায় এই দিন ফের সিআরপি জওয়ানদের দেখা গিয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, সিআরপি-কে আরও কিছুদিন পাহাড়ে রাখার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে সবুজ সংকেত মিলেছে। গত ২৭ মার্চ সিআরপি তুলে নেওয়ার কথা ছিল। কেননা, বিধি অনুযায়ী, সিআরপি মোতায়েনের পরে ১৫ দিনের বেশি তাদের কোথাও রাখতে হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে রাজ্যকে অনুমতি নিতে হয়। সরকারি সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত নানা ব্যস্ততায় পাহাড়ের বিষয়টি অগ্রাধিকারের তালিকায় ছিল না। তাই সেই অনুমতি নেওয়া হয়নি। সে কারণেই সিআরপি আর পাহাড়ে থাকবে না, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে রাজ্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করায় এই দিন ফের তাঁদের টহলদারিতে নামতে দেখা গেল।
ফেব্রুয়ারিতে কালিম্পং থেকে ফেরার সময়ে মন্ত্রী গৌতমবাবুর গাড়ির উপরে হামলা হয়েছিল। এই দিন তাই সারা ক্ষণই ছিল কড়া নিরাপত্তার বলয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি ও বাগরোকাটেও সভা করবে তৃণমূল। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের শেষেই কালিম্পঙে সভা করার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়েরও। শিলিগুড়িতে ৭ এপ্রিল সংখ্যালঘু সেলের সভায় যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। ওই সভার আগের দিন অথবা পরের দিন মুকুলবাবু কালিম্পঙে যাবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সেখানে সিআরপিও টহলদারি করবে।
|