রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি খারিজের আর্জি
আজই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে কমিশন
বশেষে আদালত। আজ, সোমবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের এজলাসে মামলাটি দায়ের করে আগামিকাল, মঙ্গলবারই তার শুনানির জন্য আর্জি জানানো হবে বলে কমিশনের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল রবিবার জানিয়েছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে অবশ্য দিনভর বৈঠক সেরে রাতে কমিশনের দফতর থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগামিকাল নেবো।” ফলে সোমবারই স্পষ্ট হবে, কোন পথে যাবে পঞ্চায়েত সংঘাতের পরবর্তী পর্যায়।
ক’দফায় ভোট হবে, তা নিয়ে বিবাদ একপ্রকার মিটলেও জেলা ভাগ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সরকার ও কমিশন দু’পক্ষই অনড় থাকায় গত শুক্রবারই পঞ্চায়েত-সঙ্কটের আদালত যাত্রা অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। খোদ রাজ্যপালের দৌত্যও কাজে আসেনি। এই পরিস্থিতিতে গত ক’দিন ধরেই যিনি টাটাদের হয়ে সিঙ্গুর মামলা লড়ছেন, সেই সমরাদিত্যবাবুর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন কমিশন-কর্তারা। কমিশনের পক্ষে তিনিই সওয়াল করবেন। আদালতে কী বলবে কমিশন? সমরাদিত্যবাবু বলেন, ২৬ এবং ৩০ এপ্রিল পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সরকার যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে তা খারিজ করা এবং নির্বাচনের দিন ঠিক করতে কমিশনের সঙ্গে রাজ্যকে দ্রুত আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানানো হবে। তাঁর দাবি, রাজ্য একতরফা ভাবে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে না। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় রয়েছে। আবার অবাধ, নিরপেক্ষ এবং মুক্ত নির্বাচন করানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না-হওয়া পর্যন্ত কমিশন নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে না। অবাধ, নিরপেক্ষ ভোটের লক্ষ্যেই কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে।
রাজ্য সরকারও যে আইনি লড়াইয়ের জন্য তৈরি তা জানিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “কমিশন কোর্টে গেলে আমাদেরও লড়তে হবে। আমরা তো সংবিধান মেনেই কাজ করেছি। এখন কমিশন আদালতে কী বলে দেখি!” কমিশনের বক্তব্য, রাজ্য পঞ্চায়েত আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী, কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে সহমতের ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার কথা রাজ্য সরকারের। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে সরকার প্রায় একতরফা ভাবে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সমরাদিত্যবাবু বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা। কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ সাংবিধানিক। আইন অনুযায়ী যে ভাবে কমিশনকে কাজ করতে দেওয়া উচিত, তা রাজ্য মানেনি। কমিশনের চিঠির কোনও স্পষ্ট উত্তরও দেয়নি তারা।
সরকার বলেছে, কমিশন আগে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করুক। তার পর অন্য বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু কমিশনের বক্তব্য, বিজ্ঞপ্তি জারির আগে তাদের কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ে নিরাপত্তা। সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সুনিশ্চিত না-হলে কমিশন ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে না বলে সমরাদিত্যবাবু হাইকোর্টকে জানাবেন। আদালতে কমিশন বলবে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত আধা সামরিক বাহিনী নিয়োগের প্রস্তাব রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। সে সম্পর্কে রাজ্যের তরফে কোনও স্পষ্ট উত্তর দেওয়া হয়নি। তার জেরে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি কমিশন। এই পরিস্থিতিতে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা যায় না।
সরকার-কমিশন আইনি লড়াই শুরুর মুখে বিরোধী দলগুলি সরকারের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের আশঙ্কা, প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব হবে। তাই ভোট পিছোনোর জন্য ওরা ইচ্ছা করে বিতর্ক জিইয়ে রাখছে।” তৃণমূল নেতা মুকুল রায় অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “কমিশনই ভোট বিলম্বিত করছে। তৃণমূল যে কোনও সময়ে ভোটের জন্য তৈরি।”
কমিশন মামলা করলে সোমবার বিজেপি-ও পৃথক মামলা করবে বলে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এ দিন জানিয়েছেন। তাতে কমিশনের দাবি মানার জন্য আর্জি জানানো হবে। কমিশন-সরকার সংঘাত নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.