দলকে জেতানোর পরও বাগানে অসুখী রহিম নবি!
মোহনবাগানের নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, আগামী মরসুমে তিনি মোহনবাগানে থাকতে চাইছেন না। কারণ, এখানে যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না। শোনা যাচ্ছে, অভিমানী নবি নাকি নতুন মরসুমে নতুন ক্লাবের সন্ধানে আছেন।
রবিবার কল্যাণীতে ডেম্পোর বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক অবশ্য বলে দিলেন, “আমার কাছে ইস্টবেঙ্গল, প্রয়াগ, চার্চিল ব্রাদার্সের প্রস্তাব রয়েছে ঠিকই, তবে এ সব নিয়ে ভাবছি না। মোহনবাগানের অবনমন বাঁচানোটাই এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য।”
দু’বছর আগে ইস্টবেঙ্গল থেকে মোহনবাগানে আসার পর থেকে নিজের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য সবুজ-মেরুন সমথর্কদের চোখের মণি হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ইদানীং দলের ভেতরকার নানা সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কারণেই নাকি সরে যেতে চাইছেন এ দিনের ডেম্পো ম্যাচ জয়ের নায়ক। রবিবার নিজে তো গোল করেছেনই, গোল করিয়েওছেন। মাঠে সারক্ষণ ফুটবলারদের উজ্জীবিত করেছেন। তবে মাঠের বাইরে সবুজ-মেরুনের সঙ্গে কোথাও যেন সুর কেটে গিয়েছে নবির। মোহনবাগানের অর্থসচিব, যিনি প্রতি মরসুমে দল গঠনের দায়িত্বে থাকেন, তাঁকে যখন নবির ক্লাব ছাড়া প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হল, তখন তিনি কিছুটা রাগত স্বরেই বলে দিলেন, “নবিকে নিয়ে আমি কোনও কথাই বলব না।” |
জেতার জন্য এ ভাবে ফুটবলারদের পড়ে যাওয়ার নির্দেশ
কোনও কোচ দিতে পারে করিমকে না দেখলে জানতাম না।
লড়াই করার মানসিকতাই নেই। এটা ফুটবলের লজ্জা। |
|
|
ক্লাবের ওপর যতই অভিমান হোক বা ক্লাব ছাড়ার ভাবনা থাকুক, পাণ্ডুয়ার ছেলেটি কিন্তু মোহনবাগানকে অবনমনের হাত থেকে বাঁচাতে মরিয়া লড়াই করছেন। মোহনবাগানের সমর্থকরা তো প্রায়ই বলে থাকেন, নবির মতো দলের প্রতি দায়বদ্ধতা যদি সব ফুটবলারের থাকত, তবে হয়তো করিমকে দলের অবনমন নিয়ে এত ভাবতে হত না।
ডার্বিতে ইটের আঘাতে নবি গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে স্ত্রী সোমা জাতীয় দল হোক বা ক্লাব ফুটবল, স্বামীর যে কোনও ম্যাচের আগেই খুব টেনশনে থাকেন। এমনকী টিভিতে নবির কোনও ম্যাচ দেখতেও এখন ভয় পান। চোখের ঠিক নীচেই আঘাতের দাগটা এখনও রয়েছে নবির। হাত দিলে ব্যথাও হয়। তবে ফুটবল মাঠে সব ব্যথাই ভুলে যান। তাই বোধহয় নির্দ্বিধায় হেডে গোলও করে ফেলেন। ডেম্পোর বিরুদ্ধে এ দিন হেডে গোল করার পর হাসতে হাসতে নবি বলছিলেন, “গোলটা সোমাকেই উৎসর্গ করব। যাতে ওর ভয় কাটে।”
এ দিকে মোহনবাগনের কাছে হারের পর করিমের ওপর একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ডেম্পো কোচ। আর্মান্দোর অভিযোগ, ম্যাচের শেষের দিকে করিমের নির্দেশেই নাকি ফুটবলাররা ‘প্লে অ্যাক্টিং’ করছিলেন। যাতে সময় নষ্ট হয়। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে ক্ষুব্ধ কোলাসো বলেও দিলেন, “ম্যাচ জেতার জন্য এ ভাবে ফুটবলারদের পড়ে যাওয়ার নির্দেশ কোনও কোচ দিতে পারে করিমকে না দেখলে জানতাম না। লড়াই করার মানসিকতাই নেই। এটা ফুটবলের লজ্জা।”
ক্লিফোর্ডদের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততে এ দিন মুখিয়ে ছিল পুরো বাগান শিবিরই। ডেম্পো ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট না পেলে আরও চাপে পড়ে যেতেন ওডাফা-টোলগেরা। তাই ম্যাচের পর মোহন অধিনায়ক বলছিলেন, “আমার গোল করাটা বড় বিষয় নয়। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাওয়াটাই আসল ব্যাপার ছিল। এবার আমাদের চাপ কিন্তু অনেকটাই কমল।” |