চাকরির পরীক্ষায় হাজির হতেই নাভিঃশ্বাস
কে প্রখর রোদ। তার উপর ট্রেনে-বাসে বাদুরঝোলা অবস্থা। এই দুইয়ের যাঁতাকলে রবিবার দিনভর নাকাল হলেন পরীক্ষার্থীরা। স্রেফ গাড়িঘোড়া না পেয়ে কেউ বাড়ি ফিরে গেলেন পরীক্ষা না দিয়েই। কেউ আবার পরীক্ষাকেন্দ্রের ঠিকানা খুঁজতে জেরবার হলেন। হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে এ ভাবেই শেষ হল প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা।
পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। শ্রীরামপুর থেকে পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছে পুড়শুড়ায়। হরিপাল থেকে গোঘাট। খানাকুল থেকে বলাগড়। চুঁচুড়া থেকে জাঙ্গিপাড়া। ব্যাণ্ডেল থেকে চণ্ডীতলা। পথে বেরিয়ে হয়রানি এড়াতে শনিবারেই কয়েকটি জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন অনেকে। রবিবার সকাল থেকে অবশ্য যথেচ্ছ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।
প্রাণ হাতে চাকরির খোঁজে। উলুবেড়িয়ায় সুব্রত জানার ছবি।
হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা জেলার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পরেশ সামন্ত বলেন, “হুগলিতে শান্তিপূর্ণভাবে এবং নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা দেরি করে পৌঁছনয় দু’-একটি কেন্দ্রে তাঁদের ঢুকতে সমস্যা হয়েছিল। আমরা ওই সব স্কুলে কথা বলে তাঁদের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করেছি।” পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রশাসনও।
যদিও পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতেই অবশ্য কালঘাম ছুটে যায় পরীক্ষার্থীদের। ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের বদলে হাসপাতালে ঠাঁই হয় দুই পরীক্ষার্থীর। খানাকুলের পার চব্বিশপুর গ্রামের দেবাশিস হাজরার পরীক্ষা পড়েছিল বলাগড়ের সোমড়ায়। প্রথমে তাঁকে বাসে করে সড়ক পথে তারকেশ্বরে আসতে হয়। তারকেশ্বর থেকে ট্রেন ধরে তিনি শেওড়াফুলিতে আসেন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শেওড়াফুলি থেকে কাটোয়া লোকালে ওঠেন সোমড়ায় যাওয়ার জন্য। প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে কোনও রকমে ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়ান বছর ত্রিশের ওই যুবক। ট্রেন ছাড়তেই রেল লাইনের স্তম্ভে ধাক্কা লেগে পড়ে যান। মাথায়-মুখে গুরুতর চোট লাগে।
চাকরির সন্ধানে যুবক-যুবতীরা
সাঁকরাইল স্টেশনে
রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের তোলা ছবি
আরামবাগে
ছবিটি তুলেছেন মোহন দাস।
রেল পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করায়। ভিড়ের চাপে মানকুণ্ডু স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়েন শ্বেতা শেঠ এক মহিলা। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই স্টেশন থেকে আপ ব্যাণ্ডেল লোকালে চেপেছিলেন ভদ্রেশ্বর বাবুবাজারের বাসিন্দা ওই পরীক্ষার্থী। মানকুণ্ডুর একটি নার্সিংহোমে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
কোন্নগরের বাসিন্দা সংযুক্তা দে দাঁড়িয়েছিলেন চুঁচুড়া স্টেশনের সামনে। পোলবার সারাংপুরে তাঁর পরীক্ষা পড়েছিল। কিন্তু গাড়ি না পেয়ে তিনি সেখানে পৌঁছতে পারেননি। অগত্যা বাড়ি ফিরে যান। তিনি বলেন, “ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে এসেছি। বাস-অটোতে ওঠা যাচ্ছে না এত ভিড়।” এ দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাস-ট্রেকারের মাথায় পর্যন্ত চাপাচাপি করে লোক ওঠেন। জাঙ্গিপাড়া থেকে চণ্ডীতলা, সিঙ্গুর থেকে হরিপাল, তারকেশ্বর থেকে পুড়শুড়া, চুঁচুড়া থেকে মগরা, ব্যাণ্ডেল থেকে ত্রিবেণী, বলাগড় থেকে গুপ্তিপাড়া সর্বত্রই ছিল একই পরিস্থিতি। পরীক্ষা শেষে পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে অনেকেই রেল স্টেশন বা বাস ধরার জন্য মূল সড়কে পৌঁছন কয়েক কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.