দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ থেকে আগরা। নারী নির্যাতনের একের পর এক ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে পর্যটন শিল্প। সমীক্ষা বলছে, তিন মাসে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে ভারতে আসা বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা। বিশেষ করে মহিলা পর্যটক। তাদের দাবি, শুধু বিশ্বজোড়া মন্দা নয়, এ জন্য দায়ী ভারতে সামাজিক সুরক্ষার প্রশ্নও।
দেশ জুড়ে প্রায় ১২০০ পর্যটন সংস্থার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের দাবি, গত ডিসেম্বরের পর থেকে ভারতে ভিন্ দেশি পর্যটকের সংখ্যা সার্বিক ভাবে প্রায় ২৫% কমেছে। এবং ৭২% পর্যটন সংস্থা জানিয়েছে, এই সময়ে ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো অনেক দেশেরই মহিলা পর্যটকেরা তাঁদের ভারত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। সব মিলিয়ে এই সময়ে শুধু মহিলা পর্যটকের সংখ্যাই কমেছে প্রায় ৩৫%।
সমীক্ষকদের দাবি, সদ্য সমাপ্ত মহাকুম্ভ মেলাতেও তার প্রমাণ মিলেছে। বিদেশিদের কাছে আকর্ষণীয় ভারতীয় গন্তব্যগুলিতেও এ বার জনজোয়ারের দেখা তেমন মেলেনি। অনেক দেশই ভারত ভ্রমণ নিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো। অ্যাসোচ্যাম কর্তা ডি এস রাওয়াতের দাবি, ভারতের বদলে বিদেশি পর্যটকেরা এশিয়ার অন্য দেশগুলিতে পাড়ি দিচ্ছেন।
দেশের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেও এটা কাম্য নয়। কারণ এই শিল্পের মাধ্যমে ভারত বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে যা কেন্দ্রের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ চলতি খাতে বাণিজ্য ঘাটতিতে (ডলারের আসা-যাওয়ার ফারাক) কিছুটা হলেও রাশ টানতে পারে। পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০১২ সালে প্রায় ৬৬ লক্ষ বিদেশি পর্যটকের আগমনের সূত্রে দেশের আয় হয়েছিল ১৭৭৪ কোটি ডলার।
পর্যটন শিল্পে জাতীয় স্তরের অন্যতম কর্তা ল্যালি ম্যাথুজ বা সুভাষ বর্মার অবশ্য দাবি, পরিস্থিতি এতটা উদ্বেগজনক নয়। ম্যাথুজের মতে, বিদেশি পর্যটক কমলেও তার প্রভাব পড়বে শুধু অসংগঠিত ক্ষেত্রে। সংগঠিত ব্যবসায় সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। সুভাষবাবুর বক্তব্য, সামাজিক সুরক্ষা কিছুটা প্রভাব ফেললেও মূল সমস্যা এখনও মন্দাই। |