হোটেল থেকে মুদি, লাভ হয়েছে সর্বত্রই
দোল উৎসবে বাণিজ্যে খুশি ব্যবসায়ীরা
ড়ম্বর থেকে অর্থনীতি। জনসমাগম থেকে পরিচিতি উৎসবের মাদকতা থেকে মিডিয়ার সমাদর সবেতেই ক্রমশ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে নবদ্বীপ-মায়াপুরের দোল। তেরো পার্বণের দেশ নবদ্বীপ বছরের কোন সময়ই উৎসবহীন থাকে না। কিন্তু গত এক দশক ধরে দোল এবং ওই একই তিথিতে চৈতন্যদেবের আবির্ভাবকে ঘিরে যে তুমুল উদ্দীপনা, তা বাকি সব উৎসবকেই ম্লান করে দিচ্ছে। প্রশাসন থেকে পর্যটক, ব্যবসায়ী থেকে দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক প্রত্যেকেরই পাখির চোখ হয়ে উঠছে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলা নবদ্বীপের এই দোল উৎসব।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের দোলে জনসমাগম কার্যত অতীতের সমস্ত ভিড়ের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। দোলের চব্বিশ ঘন্টায় নবদ্বীপ এবং মায়াপুর মিলিয়ে প্রায় পৌনে দুই লক্ষ মানুষ এসেছেন। অন্য দিকে, মার্চের গোড়া থেকে এখনও পর্যন্ত গঙ্গার দুই পাড়ের দুই জনপদে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিদেশি পর্যটক রয়ে গিয়েছেন। তাঁদের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। স্বভাবতই এর জেরে স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্যে রীতিমত জোয়ার এসেছে বলে দাবি তাঁদের।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়েছিল মায়াপুর ইসকনের নবদ্বীপ মহামণ্ডল। প্রায় দেড়শো ছোট বড় বৈষ্ণব মঠের পরিক্রমা পথে নেমেছে এরপরে। আর তাতে সামিল হয়েছেন লক্ষাধিক বহিরাগত ভক্ত। এঁরা প্রত্যেকেই পরিক্রমা চলাকালীন বসবাস করেছেন নবদ্বীপ অঞ্চলে।
নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদের সম্পাদক শান্তিরঞ্জন দেবের কথায়, “সকালের চা থেকে নৈশাহার পর্যন্ত সব ধরনের পরিষেবার ক্ষেত্রেই তাঁরা স্থানীয় বাজারের উপর নির্ভর করেছেন। ফলে দৈনন্দিন জীবনযাপনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের ব্যবসায়ীরাই উপকৃত হয়েছেন। দোল নবদ্বীপের অর্থনীতির ক্ষেত্রে ক্রমশ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।”
প্রায় একই সুরে নবদ্বীপের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “এ বারের দোলে লোক যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও যথেষ্ট ভাল ব্যবসা করেছেন। দোল এ বারে অনেকটা পিছিয়ে হওয়াতে অনেক বেশি মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে এই এলাকায় যাতায়াত করেছেন।” তাঁর কথায়, “এমনিতেই নবদ্বীপের ব্যবসা বাণিজ্যের অন্তত ত্রিশ শতাংশ পর্যটক নির্ভর। সেই ত্রিশ শতাংশেরও অধিকাংশটাই এই দোলের মরসুমে হয়। মুদিখানা থেকে শুরু করে কাঁচা সব্জি কিংবা তাঁত থেকে কাঁসা পিতল সমস্ত ধরনেরই ব্যবসার ক্ষেত্রেই সামগ্রিক ভাবে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।” উত্তমবাবুর কথায়, “দোলের মরসুম কিন্তু এখনও শেষ হয়নি কেননা নবদ্বীপের দোল শুধুমাত্র একদিনেই নয়, বিভিন্ন মঠ মন্দিরে এখনও নানা পর্যায়ের দোল বাকি রয়েছে। যেমন রবিবার নবদ্বীপে ছিল পঞ্চম দোল। এখনও বাকি রয়েছে মহাপ্রভুর দশম দোল। ফলে পর্যটকদের একটা বড় অংশ এখনও নবদ্বীপে রয়ে গিয়েছেন। ফলে দোলের বাণিজ্যিক মরসুম এখনও চলছে।”
হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেঙ্গল হোটেলিয়ার্সের মায়াপুর শাখার সম্পাদক প্রদীপকুমার দেবনাথ বলেন, “দোলের ব্যবসা ভাল তো হয়েছেই, এ বারে বহিরাগতদের এত বেশি চাপ ছিল যে, হোটেলেও সকলে ঠাঁই পাননি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, এই ভিড় সামাল দিতে গৃহস্থরা পর্যন্ত তাঁদের ঘর ভাড়া দিয়েছেন। মনে হয় এ বার থেকে এই ঘর ভাড়া দেওয়ার বিষয়টিও চালু হয়ে গেল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.