ইন্টারনেটে জেনে ছিলেন তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্র মহম্মদবাজারের জপেশ্বর জুবুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন, ওই নামে সেখানে কোনও স্কুল নেই। জপেশ্বর জুবুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি আসলে বহু দূরের নানুর ব্লকে রয়েছে। তখনই পরীক্ষার্থীরা খবর পান, এই ধরনের সমস্যায় যাঁরা পড়বেন তাঁদের সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে পর্ষদ। কিন্তু বিদ্যাসাগর কলেজে এলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি জনা পঞ্চাশেক পরীক্ষার্থীকে। ফলে মাড়গ্রামের চাঁদপাড়া থেকে আসা টিপু সুলতান, নলহাটি ১ ব্লকের বুজুং গ্রামের নিউটন প্রামাণিক, সাত মাসের শিশু কোলে পরীক্ষা দিতে আসা তারাপীঠের কাছাকাছি কড়কড়ি গ্রামের তনু কোনাইদের টেট পরীক্ষা দেওয়া হল না। ক্ষোভে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে এসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। যদিও পুলিশ থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বিক্ষুব্ধরা।
|
রোল নম্বর বা পরীক্ষাকেন্দ্রের স্থানে ভুল নেই। কিন্তু যথা সময়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর বা নাম পৌঁছয়নি। ফলে পরীক্ষায় বসতে পারেননি। আনেককেই। এই সমস্যায় পড়েছেন সিউড়ির অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা শাওনী সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, “নেটে আমার পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম ছিল দুবরাজপুরের মেটেলা উচ্চ বিদ্যালয়। আমার শ্বশুর মশাইয়ের সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে এ দিন বেলা ১১টায় এসে জানতে পারি আমার নাম নেই।” একই অভিজ্ঞতা ময়ূরেশ্বরের শুকদেব ভাল্লা, বোলপুরের সিয়ান গ্রামের জ্যোৎস্না যশমালিদেরও। তাঁরা ঘুরে গেলেন বীরভূম মহাবিদ্যালয় এবং রামপুরহাট গার্লস স্কুল থেকে। এরকম অনেকেই শেষ পর্যন্ত সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে চলে এসেছিলেন পরীক্ষা দেবেন ভেবে। সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডমিড কার্ড পেয়েছেন অথচ নেটে নাম ছিল না, শুধু মাত্র সেই রকম পরীক্ষার্থীদেরই সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে পরীক্ষায় বসার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।
|
নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্নপত্র না পৌঁছনোয় খয়রাশোলের বাবুইজোড় ধরণীধর উচ্চ বিদ্যালয়, সাঁইথিয়া ব্লকের সিউড় উচ্চ বিদ্যালয়, মাড়গ্রামের বিষ্ণুপুর রসমঞ্জরী, রামপুরহাটের কুশুম্বা উচ্চ বিদ্যালয়, মুরারইয়ের নন্দীগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এবং বোলপুর বয়েজ স্কুলে কোথাও ১৫ মিনিট, কোথাও ৩০-৪৫ মিনিট পর্যন্ত পরীক্ষা নিতে দেরি হয়েছে। পরে প্রশ্নপত্র জোগাড় করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া হয়েছে।
|
দুবরাজপুরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।
|
নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময়ে দুর্ঘটনায় জখম হলেন এক মহিলা টেট পরীক্ষার্থী-সহ ৬ জন। পরে হাসপাতালে ওই পরীক্ষার্থীর এক আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বিকেল ৩টে নাগাদ দুবরাজপুর থানা এলাকার শাল নদীর সেতুর কাছে, পানাগড়-মোরগ্রাম ১৪ নম্বর রাজ্য সড়কে। মৃতের নাম শাকিল আহমেদ (৪০)। সিউড়ি থানা এলাকায় তাঁর বাড়ি। পরীক্ষার্থী ও চালক-সহ বাকি আহতেরা সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। |