পাইকার নেই, ফের সব্জি ফেলে বিক্ষোভ
দ্দের মিলছে না। তাই শনিবারও রাস্তায় সব্জি ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা।
এ দিন সকালে ফালাকাটা ও কামাখ্যাগুড়ি হাটে টমেটো থেকে ঝিঙে অবাধে ছড়িয়ে রাখলেন তাঁরা। ছুটন্ত গাড়ির চাকায় তা পিষে নষ্ট হল দেদার। গত মঙ্গলবার ময়নাগুড়ি বাজারে ভিন রাজ্যের পাইকার না আসায় চাষিরা বিক্রির জন্য বয়ে আনা প্রায় সব সব্জিই জাতীয় সড়কে ফেলে দিয়ে গিয়েছিলেন। শনিবার কামাখ্যাগুড়িও একই ছবি দেখল। সেখানেও এ দিন পাইকারদের দেখা মেলেনি। ফালাকাটা হাটে পাইকাররা হাজির থাকলেও টমেটো কেনা বন্ধ করে দেওয়ায় চাষিরা দিশেহারা হয়ে বিক্রির জন্য আনা সব্জি পাকা রাস্তায় ফেলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
যা শুনে কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার আশ্বাস, “চাষিদের সমস্যা সমাধানের জন্য ৩৪১টি ব্লকে সব্জি মজুত রাখার জন্য কিষাণ মণ্ডি তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে ৬২টি ব্লকে টেন্ডারের কাজ শেষ হয়েছে।” জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “বাজারে পাইকার না আসায় সমস্যা হয়েছে। সম্ভবত হোলির জন্য পাইকাররা আসেনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ক্ষোভের আঁচ। রাস্তা জুড়ে শুধুই টমেটো। ছবি: রাজু সাহা।
চাষিরা জানান, এক সপ্তাহ ধরে টমেটোর দাম তলানিতে ঠেকেছে। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে জলের দরে ওই সব্জি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। উৎপাদন খরচ তুলে আনা পরের কথা। ভ্যানরিকশা ভাড়া করে খেতের সব্জি বাজারে আনার পয়সাও মিলছে না। তবু বিক্রি চলছিল। শনিবার ফালাকাটা হাটে প্রায় দেড়শো চাষি টমেটো নিয়ে আসেন। হাটের শুরুতে কয়েকজন পাইকার ৫০ পয়সা কেজি দরে সামান্য কিছু কিনলেও পরে কেনাকাটা বন্ধ করে দেন বলে চাষিদের অভিযোগ। এমনকী পাইকার ও ফড়েরা বাজার ছেড়ে চলে যেতেও শুরু করেন। এর পরে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ দিকে, কামাখ্যাগুড়ি হাটে এ দিন ভিন রাজ্যের পাইকারদের দেখা না পেয়ে দিশেহারা চাষিরা কয়েকশো কুইন্টাল সব্জি রাস্তায় ফেলে পথ অবরোধ করেন। ওই ঘটনার জেরে রাস্তার দু’ধারে কয়েকশো ট্রাক ও বাস দাঁড়িয়ে যায়। অসম, কুমারগ্রাম, তুফানগঞ্জ, ভাটিবাড়ি ও আলিপুরদুয়ার রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিকে ফালাকাটার চাষিরা যখন দাম না পেয়ে হাটে বসে মাথার চুল ছিড়েছেন তখন ২০ কিলোমিটার দূরে ধূপগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে ছিল ভিন্ন ছবি। সেখানে ৪ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হয়েছে বলে স্থানীয় সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য কালাচাঁদ পাল জানান। কেন ফালাকাটায়টমেটোর দাম মেলেনি? কালাচাঁদবাবু বলেন,“ধূপগুড়িতে পাইকার বেশি ছিল। সম্ভবত ওই কারণে চাষিরা দাম পেয়েছে। ফালাকাটায় সেটা না থাকায় সমস্যা হয়েছে।” ফালাকাটা হাটে উপস্থিত কোচবিহার জেলার লতাপাতা গ্রামের চাষি মধুসূদন বর্মন জানান, এক বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। চার দিন আগে ৮০ কেজি টম্যাটো হাটে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। শনিবার দুই কুইন্টাল টম্যাটো এনেছেন। ভ্যান ভাড়া দিতে হয়েছে দুশো টাকা। ওই চাষি বলেন, “সকাল থেকে বসে ছিলাম। কেউ কিনতে চায়নি। তাই ফেলে দিয়েছি।” অন্য এক চাষি তারক বর্মনের কথায়, “এত লোকসান কেমন করে সামাল দেব ভেবে পাচ্ছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.