উড়ানের সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়া প্রবীণ যাত্রীর চিকিৎসার জন্য জরুরি অবতরণ করেছিল দিল্লি থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরের নয়া টার্মিনালের ছন্নছাড়া দশায় ডাক্তারের দেখা পেতেই কেটে গেল এক ঘণ্টা।
শনিবার সন্ধ্যার এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। ওই বিমানেরই আরোহী সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত বিষয়টি বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহের কানে তুলবেন বলে জানিয়েছেন। গুরুদাসবাবুর কথায়, “কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই। ১৫ মিনিট তাঁকে বিমানে ফেলে রাখার পরে হুইলচেয়ারে বসিয়ে মেডিক্যাল রুমে নিয়ে যাওয়া হল। এটা মানা যায় না।” যে কোনও বিমানবন্দরে চিকিৎসার দরকারে জরুরি অবতরণের পরে এক জন ডাক্তার ও অ্যাম্বুল্যান্স থাকাটা ন্যূনতম বিষয়ের মধ্যে পড়ে। কলকাতার নতুন টার্মিনাল চালুর আগে বিমান সংস্থাগুলিও বার বার কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরিকাঠামো যাচাই করে নিতে বলেছিল।
৬০ বছরের বসন্ত রাউত এ দিন বিমানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বিমানবন্দরের আধিকারিকদের দাবি, বিমানচালকের বার্তা পেয়ে বিমানটি নামার সঙ্গে-সঙ্গেই ডাক্তার পাঠানো হলেও, তিনি নতুন জায়গাটি চিনতে পারেননি। নতুন টার্মিনালের ঘাঁতঘোতে ততটা অভ্যস্ত না-হওয়ার ফলেই বিভ্রান্তির সৃষ্টি। বিমানের যাত্রীরা অবশ্য এই ভুল বোঝাবুঝিকে হাল্কা চোখে দেখছেন না। বিমানবন্দরের কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও পেশাদারিত্বে খামতি নিয়েই তাঁরা সরব।
এ দিনই বিকেলে ঢাকা থেকে কলকাতায় নামার পরে শেখ হুসেন (৭২) নামে এক যাত্রী বিমানবন্দরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি। একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে বিমানবন্দরের মেডিক্যাল ইউনিটের ভার দেওয়া হয়েছে। এর আগে ঝকঝকে আনকোরা টার্মিনালের রক্ষণাবেক্ষণের হাল-হকিকত নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। এ বার জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরিকাঠামো নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন? বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রবীণ যাত্রীটি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দেখে বিমানেই কোনও ডাক্তারের সাহায্য চান চালক। তার পরে ওই ব্যক্তির অসুস্থতার জন্যই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিমানটিকে কলকাতায় জরুরি অবকরণ করান তিনি। যাত্রীদের বলা হয়, রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তাঁরা যেন বিমানে বসে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেন। এর পরে কোনও চিকিৎসাজনিত সাহায্য আসতে কেটে যায় আরও ১৫ মিনিট। তা-ও অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি। আসে হুইলচেয়ার। সেই হুইলচেয়ারে করেই রোগীকে সরানো হয়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যে ডাক্তারকে পাঠানো হয়েছিল, তিনি তখনও বিমানটিকে খুঁজেই চলেছেন। কেন এমন হল? এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মার সঙ্গে রাত পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি। তবে অসুস্থ যাত্রীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। |