রোগীর মৃত্যুতে তাণ্ডব, হাসপাতালে জখম ৫
রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাণ্ডব চালানো হল বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে। আহত হয়েছেন এক চিকিৎসক-সহ পাঁচ কর্মী। ভাঙচুর করা হয়েছে কম্পিউটার, আলমারি-সহ বিভিন্ন জিনিস। পুলিশ অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগেও নানা সময়ে নানা অজুহাতে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে হামলা চালানো হয়েছে। বর্ধমান বা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভও লেগেই থাকে। মাস ছয়েক আগেই কালনা হাসপাতালে সুপার মার খেয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার যা ঘটেছে, ততটা বাড়াবাড়ি বেশি হয় না।
ভাঙচুরের পর।—নিজস্ব চিত্র
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ হুগলির বলাগড়ের ফুলতলা এলাকার অভিজিৎ মণ্ডলকে (২৭) ভর্তি করা হয়। তাঁর বমি-পায়খানা হচ্ছিল। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু ঘটে। বেলা ১১টা নাগাদ বলাগড় থেকে শতাধিক লোকজন এসে সুপারের ঘরে চড়াও হন। তিনি অবশ্য তখন ঘরে ছিলেন না।
মৃতের দাদা বিশ্বজিৎ মণ্ডলের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। নার্সেরাও কেউ স্যালাইন দিতে আসেননি। এক মাত্র অনুব্রতীও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। বাধ্য হয়ে তাঁকেই ভাইকে স্যালাইন দিতে হয়। পরের দিন দুপুরে ও রাতে এক বার করে চিকিৎসক এসেছিলেন, তা-ও অনেক বার বলার পরে। হাসপাতাল সুপার অভিরূপ মণ্ডল বলেন, “গাফিলতির অভিযোগ থাকলে ওঁরা আমাকে তা জানাতে পারতেন। কিন্তু তার বদলে যা করা হল, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” বিশ্বজিৎবাবু পাল্টা বলেন, “ভাইকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য সুপারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনিই আশ্বাস দেন, ভাই ভাল হয়ে যাবে।”
অভিজিতের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই আত্মীয়-পড়শিরা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালে চলে আসেন। অভিযোগ, জাকির হোসেন নামে এক কর্মীকে মারধর করেন তাঁরা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান তাঁর সহকর্মী রঘুনাথ সরকারও। সুপারের ঘরের পাঁচটি কম্পিউটার, টেবিলের কাচ ভাঙচুর করা হয়। উল্টে ফেলা হয় আলমারি। ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরেও চেয়ার-টেবিল ভাঙা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এসে মার খান চিকিৎসক অরূপ দাস ও ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ান প্রশান্ত ঘোষ। ঘুষি মেরে প্রশান্তবাবুর নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। অন্য ডাক্তারেরা অপারেশন থিয়েটার-সহ নানা ঘরে লুকিয়ে পড়েন। একটি ঘরে লুকিয়ে রাখতে হয় নার্সদেরও।
এ দিন তাণ্ডব শুরু হওয়ার মিনিট কুড়ি বাদেই পুলিশ চলে আসে। কিন্তু পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে ঘণ্টা দেড়েক লেগে যায়। প্রহৃত চিকিৎসক ছাড়া বাকি চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সুপার জানান, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হচ্ছে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.