পিসিমার ভাশুরের শালা, মামিমার বোনপো এই ধরনের আত্মীয়স্বজনরাও হামেশা আসতেন, বিশেষত বাঙালবাড়িতে। ভূমিচ্যুত হয়ে আসার পর এ দেশে এসে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন এবং দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ফেলে আসা গ্রামের নাম বহন করতেন। কোনও কানাই চক্রবর্তী হয়তো থাকেন গাঙ্গুলিবাগানে, কিন্তু ওঁর পরিচয় সোনাইমুড়ার কানাই। বলাই কাঞ্জিলাল সোদপুরে থাকলেও উনি শ্রীরামপুরের বলাই। এঁদের পরিবারের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হলে ওঁরা নিমন্ত্রণপত্রে লিখতেন নোয়াখালি জিলার সোনাইমুড়ার কানাই চক্রবর্তীর পুত্র শ্রীমান অমুকের সহিত শ্রীরামপুর নিবাসী বলাই কাঞ্জিলালের কন্যা তমুকের...।
এ রকমই একজন ছিলেন মাইজদিয়ার ভজন রায়চৌধুরি। ভজন জামাই নামেই বিখ্যাত ছিলেন। কী রকম জামাই এখন আর মনে নেই। আমি ডাকতাম জামাই জেঠু। উনি এলেই মা-পিসি-ঠাকুমারা চোখে চোখে কথা বলত, কেউ মুখ টিপে হাসত, রান্নাঘরে গুঞ্জন উঠত। আসলে উনি আসতেন স্রেফ খাওয়ার জন্য। পেট ভরে। পায়ে এক জোড়া কাপড়ের তালিবান পাম্প-শু ছিল। ভজন জামাই কোঁচা দুলিয়ে আসতেন, পরনে কখনও পাঞ্জাবি, কখনও লম্বা ঝুলের শার্ট। কখনও কোঁচাটিকে ফুল বানিয়ে পকেটে রাখতেন এবং পরিধেয় বস্ত্র থেকে প্রায়শই দুর্গন্ধ বেরোত। ঘরে চেয়ার খুঁজে বসতেন। চৌকি তক্তপোশে পারতপক্ষে বসতেন না। কারণ, প্রথমত উনি জামাই, দ্বিতীয়ত উনি জমিদার বংশের।
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
সাধারণত বেলা দশটার পরই অবতীর্ণ হতেন। বলতেন, সব কুশল তো? তোমাদিগের কুশল নিতে আইলাম। যত ক্ষণ পর্যন্ত বাড়ি থেকে বলা না হত ‘ডাইল-ভাত খাইয়া যান’, তত ক্ষণ দেশের বাড়ির কথা বলে যেতেন। বোঝলেন, সুন্দরীরে স্বপ্ন দেখলাম। মরার সময় আমার দিকে চাইয়া ছিল। সুন্দরীর কখনও প্যাট খারাপ হইত না, কী সুন্দর বাইঝ্য (মল)। সুন্দরীর বাইঝ্য দিয়া খাজুরের রস জ্বাল দিত কামলারা। সুন্দরী ছিল ওই ক্ষয়িষ্ণু ঋণগ্রস্ত জমিদারবাড়ির একটি অপুষ্টিতে-ভোগা হাতির নাম। কখনও বাড়ির পালকি, কখনও খিড়কির পুকুরের গুপ্তধন, কখনও দুর্গাপূজার গল্প। বাড়ির কেউ বলত জামাই, দুগা ডাইল-ভাত খাইয়া যান।
কথায় কথায় বেলা হইয়া গেল গিয়া, অখন আর বাড়ি গিয়া কাম কী? জামাই বলতেন।
ওঁর খাওয়াটা দেখতে খুব মজা লাগত। অনেকটা ভাতের মধ্যে ডাল মেখে নিতেন। বলতেন ভাতটা একটু শুকনা-শুকনা লাগে, অল্প ডাইল দ্যান ঠারিন। ডাল দেওয়ার পর বলতেন এঃ হে, ডাইল বেশি হইয়া গেল, ভিজা-ভিজা লাগে, আর দুগা ভাত দ্যান। কিছুটা খেয়ে বেশ কিছুটা নুন মেখে নিয়ে বলতেন এঃ হে, লবণ-কটা হইয়া গেল গিয়া। বেশি লবণ পইড়া গেল, আর দুগা ভাত দ্যান। এঃ হে, ভাত বেশি মাইখ্যা ফ্যালাইছি, আর একটু ডাইল দ্যান ঠারিন। কুমড়ার লাবড়াটাও দ্যান।
মজাটা উপভোগ করতেন মা-ঠাকুমারা। ইচ্ছে করেই ডাল বেশি দিয়ে দিলে জামাই জেঠু বলতেন এইটা কী করলেন ঠারিন, এতটা ডাইল দিয়া দিলেন! আবার তো ভাত দরকার।
লতায়-পাতায় যাঁরা আত্মীয়-পরিজন, সবার বাড়িতেই পালা করে যেতেন উনি। শুনেছিলাম, নোয়াখালির দাঙ্গায় ওঁর স্ত্রী, যিনি আমার কোনও জেঠিমা লুণ্ঠিতা এবং ধর্ষিতা হবার পর আর ঘরে ফেরেননি, ফিরতে পারেননি।
এক দিন মা’কে জিজ্ঞাসা করতে শুনেছিলাম, বকুলদিদির কোনও সম্বাদ জানেন কি? উনি ঠোঁট উলটে বলেছিলেন, শুনছিলাম তো জালাল শ্যাখের ঘরে আছে। এ নিয়ে বেশি কথাবার্তা পছন্দ করতেন না জামাই জেঠু।
কিছু দিন থেকে আমাদের বাড়ি আসাটা একটু বেড়ে গিয়েছিল। আমাদের বাড়ির কাছেই ছিল আর জি কর হাসপাতাল। ওখানে দেখাতে এলে দুপুরের খাওয়াটা এখানেই সেরে নিতেন। এক দিন, ঠাকুমাকে বলে দিলেন আর তালৈবলৈ ভাল লাগে না। ভাত চাও রে..., ডাইল চাও রে, লবণে কটা করো রে...। দরকার কী, বেশি কইরা একলগে দিয়া দিবেন। উঁচু কানার এক কাঁসা ভাত।
এক বার আমার ছোট পিসি নাকি ওঁর তরকারিতে গাদাখানেক লঙ্কাগুঁড়ো মিশিয়ে দিয়েছিল রগড় দেখার জন্য। কিন্তু উনি নির্বিকার খেয়ে নিয়েছিলেন। এক বারের জন্যও উঃ-আঃ করলেন না। মা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘ঝাল লাগে না!’ উনি বলেছিলেন ওই জন্যই তো হাসপাতালে আসি। জিহ্বায় আর স্বাদ নাই। কিন্তু তাইলে হইব কী, প্যাটে তো খিদা, হেইটা যায় না। গেলে বাঁচতাম।
ক্রমশ আমাদের বাড়ি আসা কমে গেল। আমার বিয়ের সময় নিমন্ত্রণ করতে গিয়েছিলাম আলমবাজার। বাবার ডায়েরিতে লেখা ঠিকানা খুঁজে-খুঁজে।
জানলাম, ওই অঞ্চলে উনি তখন লঙ্কাদাদু নামে বিখ্যাত। হোটেলে-বাজারে লঙ্কাকাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন। মুঠো-মুঠো লঙ্কা বাজি ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে খান। বাজি জেতা মানে ভরপেট ভাত। শুনলাম, লঙ্কা খাওয়ার সার্কাসও দেখান রাস্তার মোড়ে বা মেলায়। হাতের মগে যে যা খুশি দেয়। বললেন, আইছ যখন যামু। কিন্তু পোলাও-পান্তায় ভেদ নাই। অমৃত বিষ্ঠা সমান। জিভে স্বাদ নাই, কিন্তু পোড়া কপাল প্যাটে খাদ নাই।


• পাড়ায় নতুন এসেছেন, গুড ইম্প্রেশন তৈরি করতে নেড়িদের বিস্কুট খাওয়াতে গেলেন।
কোনও ব্যাটা শুঁকেও দেখল না, উলটে একটা ঘিয়েভাজা ঘ্যাঁক বসাল। হাতে ও মনে স্টিচ।
• আদ্যাস্তবটা সবে ধরেছেন, বাথরুম থেকে নাতনির
‘পাম্পটা চালাও দিদা’ চেঁচানি শুরু। ঘণ্টাবাদ্য,
শাঁখডাক কিস্যু শোনে না। অগত্যা দেবতাদের
খেপিয়ে ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ গতিতে মন্তর শেষ।
• রেস্তরাঁটা সাবেক স্টাইলের। বনেদি বাসন। শ্বশুরকে শ্রদ্ধাভরে
নিজে হাতে গ্লাসে জল ঢেলে দিতে গিয়ে দেখেন, জাগ অসম্ভব
ভারী। ব্যালেন্স হারিয়ে টেবিল, প্লেট, খাবার, প্রেস্টিজ
ও শ্বশুরের পাঞ্জাবি ভিজিয়ে ঢোল করলেন।


১৬৫

এ দেশে এই মুহূর্তে
মোট যতগুলো
ব্যক্তিগত বিমান
(প্রাইভেট জেট) আছে
১৬.৫

এক বছরে যত কোটি
ডলার রোজগার
মার্কিন চ্যাট-শো সঞ্চালিকা
ওপ্রা উইনফ্রে’র
৫৬০

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত
ভোটের জন্য ব্যালট পেপার
ছাপাতে যত মেট্রিক টন
কাগজ কেনা হল
৪৫০০০০০০

এ বছর রেকর্ড-সংখ্যক ৩৫ লক্ষ
প্রাথমিক শিক্ষক পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্র
যথাস্থানে পৌঁছতে ডাক বিভাগের
যত টাকা ব্যয় হল

২৫৯

এ বছরের নোবেল শান্তি
পুরস্কারের জন্য যত জন
মনোনীত হয়েছেন বলে
জানাল অস্লো-র
নোবেল ইন্সটিটিউট। তালিকায়
আছেন ১২ জন ভারতীয়।
২৪০০০০

নিলামে যত পাউন্ড দরে
বিকোল ১৯৮৫ সালে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট
রোনাল্ড রেগান-এর
নৈশভোজে পরা যুবরানি
ডায়ানা-র নীল গাউন
২৭০৭০০

‘সবচেয়ে ব্যয়বহুল
পুষ্যির বিয়ে’তে যত মার্কিন
ডলার খরচ করা হয়েছে
(রিচমন্ড ভার্জিনিয়ার পুড্ল
আর নিউ ইয়র্কের কটন ডি
টুলেয়ার প্রজাতির কুকুরের বিয়েতে)
১৯


 

সী

চৌ
ধু
রী
ক্যাম্পাসে আজ নৃত্যগীতের বসন্ত উৎসব।
পরীক্ষা হোক। নেই পরোয়া। অবাক কেন সব?
আমরা সবাই ছোট্ট তাজা।
আজব সবুজ দ্বীপের রাজা।
দিদি আছেন। শিক্ষা শেষে যদিও নেই জব।
আদর-কাড়া এক সময়ের... পরে চোখের বালি।
‘অ্যাড-বিশারদ... দেশ-বিদেশে খেলায় হারে খালি...
সৌরভকে বাদ দিয়েছে। লোকটা ব্যাপক জালি।’
অস্ট্রেলিয়ার ব্রাউনওয়াশ সে ফের চোখের মণি।
জবাব নাহি... ওই তো মাহি... জ্বলছে এমএস ধোনি!
লেটারিং বেটারিং
আসলে সব রঙই বাঁদুরে

এই ছবির সংলাপ লিখেছেন সুজন কুমার দাস, মাস্টারপাড়া, জিয়াগঞ্জ






First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.