গোয়া বনাম বাংলা মর্যাদার যুদ্ধ!
মরক্কান কোচ বনাম ভারতীয় কোচের স্ট্র্যাটেজির ধুন্ধুমার!
মোহনবাগানের ওকোলি ওডাফা বনাম ডেম্পোর নড়বড়ে রক্ষণের টক্কর!
আজ রবিবার কল্যাণীতে এ সবই থাকছে। তবু আসল লড়াইটা হবে লিগ টেবিলে।
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া করিম বেঞ্চারিফার মোহনবাগানের কাছে এটা অবনমন বাঁচানোর মরণ-বাঁচন ম্যাচ। অন্য দিকে, পরপর হেরে চ্যাম্পিয়শিপের দৌড়ে পিছিয়ে পড়া আর্মান্দো কোলাসোর ডেম্পোর লড়াই ফের ভাল জায়গায় পৌঁছনোর।
জুয়েল রাজা, মণীশ ভার্গব বাদে প্রায় পুরো টিম হাতে থাকা সত্ত্বেও করিম যথেষ্ট চাপে। আর চাপে বলেই গোলমেশিন ওডাফা ওকোলি সুস্থ হয়ে ফেরা সত্ত্বেও গোয়ার দলটির বিরুদ্ধে কাদের খেলাবেন তা নিয়ে শনিবারের অনুশীলনেও ধোঁয়াশা রেখে দিলেন মোহনবাগান কোচ। ডেম্পো শিবিরের খবর, সুয়েকা-সহ তাদের গোটা সাতেক ফুটবলার অসুস্থ। কিন্তু যতই ভাঙাচোরা দল হোক, ডেম্পোকে শক্ত হার্ডল হিসাবেই দেখছে বাগান শিবির।
এ দিকে, কোলাসোর দলের অবস্থা এই মুহূর্তে বেশ বেহাল। শেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই হেরেছেন ক্লাইম্যাক্স, ক্লিফোর্ডরা। দু’টি ম্যাচ ড্র করেছেন। ওডাফাকে আটকাতে প্রথম একাদশের কোনও ডিফেন্ডারকেই হাতে পাচ্ছেন না কোলাসো। চোটের তালিকায় সুয়েকা, মহেশ গাউলি তো আছেনই, আছেন দেবব্রত রায়, রিবেলো, সমীর নায়েক, প্রথমেশরাও। পাঁচটি আই লিগ জেতা কোচ কোলাসো নিজেই এ দিন স্বীকার করে নিলেন, “আমরা আর চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে নেই।” |
অগ্নিপরীক্ষা। করিম-ওডাফা। |
কল্যাণীতে ডেম্পো তাই মোহনবাগানের তুলনায় অনেক চাপমুক্ত হয়ে নামবে। অন্য দিকে, যথেষ্ট মরিয়া থাকবে মোহনবাগান। নবিরা আজ ডেম্পোর বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করতে না পারলে অবনমনের ভূত আরও বেশি করে ঘাড়ে চেপে বসবে তাঁদের। তীব্র চাপে থাকা করিম সে জন্যই বলছিলেন, “আমাদের ডেম্পো ম্যাচ জিততেই হবে। ডেম্পো ভাল দল। ওদের কে আছে বা নেই তা নিয়ে ভাবছি না। আমাদের শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে।’’
কোলাসো আবার এ দিন অবনমন নিয়ে এমন একটা তথ্য দিলেন যাতে আশ্বস্ত হওয়ার কথা মোহনবাগানের। গোয়ার কোচ বললেন, “ফেডারেশন সচিব কুশল দাস ইতিমধ্যেই আমাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এ বার অবনমন থাকছে না।”
তবে কোলাসোর এই তথ্যে মোহন শিবিরের তেমন মাথাব্যথা আছে বলে মনে হল না। তারা ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরও করতে চায় না। লড়াই করেই অবনমন বাঁচাতে চায়। ওডাফা যেমন বলছিলেন, “লড়াই যত কঠিন হোক, সেটা জিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করাটাও চ্যালেঞ্জের।”শিল্ডের ডার্বির পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মাঝে আই লিগের দু’টি ম্যাচ সে ভাবে খেলতে পারেননি। ডেম্পোর বিরুদ্ধে অবশ্য শুরু থেকেই খেলবেন ওডাফা। তবে এ দিন অনুশীলনের পর বলে দিলেন, “আমি এখনও একশো শতাংশ ফিট নই।”
কল্যাণী স্টেডিয়ামে ওডাফার সঙ্গী কে হচ্ছেন সেটা নিয়ে এখনও রহস্য তৈরি করে রেখেছেন করিম। সবুজ-মেরুন শিবির সূত্রের যা খবর, তাতে টোলগে সম্ভবত শুরুতে রিজার্ভ বেঞ্চেই থাকছেন। সে ক্ষেত্রে সাবিথই হতে চলেছেন মোহন অধিনায়কের সঙ্গী। যেহেতু ৪-৩-৩ ফর্মেশনে স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছেন করিম, তাই লাজং ম্যাচের মতোই নবিকে খেলানো হতে পারে অ্যাটাকিং মিডিও হিসাবে।
টোলগেকে শুরুতে খেলাতে হলে বসাতে হয় কুইনটন বা ইচেকে। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে দু’জনের মধ্যে কাউকেই করিম বাইরে রেখে নামবেন বলে মনে হচ্ছে না। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে টোলগে অবশ্য বলে দিলেন, “গোল পাচ্ছি। তাই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সুযোগ পেলে ডেম্পোর বিরুদ্ধে গোল করে দলকে জেতাতে চাই।”
|
অবনমন ঠেকানোর অঙ্ক |
• আই লিগের বাকি ৯ ম্যাচের মধ্যে মোহনবাগানকে অন্তত ৮টি জিততেই হবে (১৭ ম্যাচে ১০)।
না হলে এয়ার ইন্ডিয়া (২১ ম্যাচে ১৯) আর লাজং এফসি (২২ ম্যাচে ২১) যদি তাদের বাকি ম্যাচগুলো জিতে যায়, অবনমন নিশ্চিত ওডাফাদের।
উল্লেখ্য, ভাইচুংয়ের সিকিম ইউনাইটেড (২২ ম্যাচে ১৫) ইতিমধ্যেই অবনমনের আওতায়।
• লাজং আর এয়ার ইন্ডিয়া যদি বাকি সব ম্যাচে হারে আর মোহনবাগান অন্তত চারটি ম্যাচ জেতে।
• লাজং আর এয়ার ইন্ডিয়া বাকি সব ম্যাচ ড্র করলে নবিদের চারটি ম্যাচ জিতে বাকিগুলো ড্র করলেও চলবে। |
|
রবিবারে আই লিগ
মোহনবাগান : ডেম্পো (কল্যাণী, ২.০০) |