|
|
|
|
এনআইএ-প্রধান নাপসন্দ বিজেপির |
মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ আপত্তির জটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সরকারি পদে নিয়োগ নিয়ে ফের সরকারের সঙ্গে সংঘাত বাধল বিজেপি-র। ফের মাথাচাড়া দিল হিন্দু সন্ত্রাস বিতর্ক।
মুম্বই সন্ত্রাস হামলার পর গঠিত জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-এর প্রধান এস সি সিন্হা আরএসএসের বিরুদ্ধে হিন্দু সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁকেই এ বার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিয়োগ করতে চায় মনমোহন সিংহ সরকার। এতেই বেধেছে বিরোধ। এবং এতটাই যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ওই নিয়োগ প্রস্তাব উঠতেই সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা তাঁদের লিখিত আপত্তি জানিয়ে বৈঠক ছেড়ে চলে যান।
আপত্তি কীসে? বিজেপি সূত্রে সিন্হার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও মনে করা হচ্ছে, সঙ্ঘের আপত্তির জেরেই বিজেপি-র তরফে এই বিরোধিতা। ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ নিয়ে মন্তব্য করায় এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে সঙ্ঘ ও বিজেপি-র কোপে পড়েছিলেন। সংসদ অধিবেশন মসৃণ ভাবে চালানোর দায়ে এ নিয়ে সে বার দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছিল শিন্দেকে। এ বারেও কার্যত সেই একই কারণে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসাবে সিন্হার নিয়োগ আটকাতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্দীপ দীক্ষিতের অবশ্য বক্তব্য, “এটা সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। সরকারি নিয়োগে বিরোধীদের আপত্তি জানানোর কী আছে?” এই নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের দুই বিরোধী দলনেতা ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, লোকসভার স্পিকার, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান রয়েছেন। সরকারি সূত্রের মতে, এর মধ্যে দু’জনের মত যদি ভিন্নও হয়, তবু সংখ্যাধিক্যের মতের ভিত্তিতেই সরকার নিয়োগ-প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে পারে। এর আগে সিবিআইয়ের প্রাক্তন নির্দেশক এ পি সিংহকে এই পদে নিয়োগ করতে তৎপর হয়েছিল সরকার। তখনও বাদ সাধে বিজেপি। সে যাত্রা তাদের আপত্তিতে সরকার পিছিয়ে এসেছিল। আজকের ঘটনার পরে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য করেন, “যে কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রেই যদি বিজেপি আপত্তি তোলে, তবে তো সরকার চালানোই দায় হয়ে পড়বে।” সাম্প্রতিক অতীতে সিবিআইয়ের প্রাক্তন নির্দেশক অশ্বিনী কুমারকে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল পদে নিয়োগের বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। লোকপাল বিল পাশের আগে তড়িঘড়ি সিবিআইয়ের নির্দেশক পদে রঞ্জিত সিন্হার নিয়োগ নিয়েও আপত্তি তুলেছিল প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু এই সব নিয়োগে বিরোধী দলের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ না থাকায় তাদের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই সরকার এগিয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের ওই নেতার মতে, “প্রতি বিষয়ে বিরোধিতা করা বিজেপি-র রীতি হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। অথচ তারা ভুলে যাচ্ছে, অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার প্রাক্তন সিবিআই নির্দেশক পি সি শর্মাকে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিয়োগ করেছিল। তখনকার বিরোধী নেত্রী সনিয়া গাঁধী কোনও আপত্তি করেননি।” তবে এই সূত্রে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের প্রধানের পদে পি জে টমাসের নিয়োগ বিতর্কের কথাও ভুলে যাচ্ছে না কংগ্রেস। টমাসের নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন সুষমা স্বরাজ। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও বিরোধী পক্ষের সুষমাকে নিয়ে গঠিত সেই কমিটিতে সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতেই টমাসকে নিয়োগ করেছিল সরকার। কিন্তু বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। যার জন্য খেসারতও দিতে হয়েছিল সরকারকে। কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, সরকার যখন দুর্বল হয়ে পড়েছে, বিজেপি-ও বিভিন্ন প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে ঘা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। |
|
|
|
|
|