|
|
|
|
বেণী-বাণে ফের বিদ্ধ সপা, বিপাকে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মুলায়ম সিংহ পুত্র অখিলেশ যাদবের প্রশংসা করে গত কালই সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে বনিবনার চেষ্টা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাতে কিছুটা হলেও সুর নামিয়েছিলেন মুলায়ম।
কিন্তু চিদম্বরমের সেই প্রয়াসে জল ঢেলে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের কুর্মী নেতা তথা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী বেণীপ্রসাদ বর্মা আজ ফের চড়া সুরে
আক্রমণ করলেন সমাজবাদী পার্টিকে। বেণী বলেন, “আগামী লোকসভা ভোটে চারটের বেশি আসন পাবে
না সপা। ভোটের পর সপা-র
শবযাত্রা বেরোবে!”
কংগ্রেস-সপা নতুন করে বিবাদের জন্য এটুকু ইন্ধনই যথেষ্ট ছিল। ক’দিন আগেই মুলায়মকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন বেণী। তার জেরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে তাঁর ইস্তফা চেয়ে সংসদ অচল করে রেখেছিলেন সপা-সাংসদরা।
|
বেণীপ্রসাদ বর্মা |
এমনকী পরিস্থিতি সামাল দিতে মুলায়ম সিংহের কাছে কার্যত মার্জনাও চাইতে হয় সনিয়া-মনমোহনকে। বেণীকে তাঁর ওই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাও চাইতে বাধ্য করেন তাঁরা। কিন্তু তার পর আজ আবার বেণী সপা বিরোধিতায় সরব হতেই অশনিসংকেত দেখতে শুরু করেন কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর মন্তব্য থেকে দূরত্ব বাড়ান দলের বহু শীর্ষ নেতাই। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রীতা বহুগুণা জোশী বলেন, “ওটা বেণীপ্রসাদের ব্যক্তিগত মন্তব্য। ওঁর মতের সঙ্গে দলের অবস্থানের কোনও সম্পর্ক নেই।”
কংগ্রেস নিজে থেকেই দূরত্ব রাখায় সপা নেতৃত্ব অবশ্য আজ বেণীর মন্তব্য নিয়ে খুব বেশি সরব হননি। সপা নেতা রামগোপাল যাদব বলেন, “বেণীপ্রসাদের অবস্থা অনেকটা গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো! বেণীপ্রসাদ তো নিজেই জিতবেন না! সপা ওঁর মন্তব্যে কোনও গুরুত্ব দিতে চাইছে না।”
তবে আর এক সপা নেতা রামআশ্রয় যাদব কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বেণীপ্রসাদকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব কংগ্রেসকেই নিশানা করে বলেন, “আসলে রাজ্যে এ বার চার থেকে পাঁচটি আসন পাবে কংগ্রেসই। বিধানসভা ভোটের মতোই লোকসভা ভোটে সপা ঝড় তুলবে।” ঘরোয়া আলোচনায় সপা নেতারা দাবি করেন, বেণীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হবে বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের কথা দিয়েছেন।
কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা অবশ্য বলেন, “বেণীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর প্রশ্নই নেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, উত্তরপ্রদেশে লোকসভা ভোটে সপা-র বিরুদ্ধে লড়তে হবে কংগ্রেসকে। তারই ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চাইছেন একদা মুলায়মের এই ঘনিষ্ঠ সহচর। তা ছাড়া, মুলায়ম যদি কেন্দ্র থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবেন বলে ঠিক করেন, তা হলে কেউ কিছু না বললেও করবেন। এই অবস্থায় কংগ্রেসই বা চুপ করে থাকবে কেন! দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন না থাকলে
বেণী বারবার এতটা সাহসী হয়ে উঠতে পারেন কি, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।
কংগ্রেস সূত্রে এমনও বলা হচ্ছে, বেণীর এমন আগ্রাসনের নেপথ্যে রাহুল গাঁধীর মদত রয়েছে। বেণী নিজেও আজ কার্যত সেই সুরেই বলেন, “যা বলেছি, ঠিক বলেছি। রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোই আমার লক্ষ্য। সে জন্য যা করার, করব। যা বলার, বলব।” |
|
|
|
|
|