দীর্ঘ পথ। যেতে যেতেই সময় লেগে যেত প্রায় দু’দিন। আর এই পুরো সময়টা থাকতে হত একটা ছোট্ট খুপরির মতো চাপা ক্যাপসুলে। ভারী জামা পরে। এত যে কষ্ট তা সহ্য করার একটাই কারণ, গন্তব্য পৃথিবীর গণ্ডি পেরিয়ে সুদূর মহাকাশে। ঠিকানা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে এ বার মাত্র ৬ ঘণ্টাতেই মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে গেলেন তিন মহাকাশচারী। দু’জন রুশ আর এক জন মার্কিন নাগরিক। শুক্রবার রাশিয়ার কাজাখস্তানের বৈকানুর উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে সয়ুজ ক্যাপসুলে যাত্রা শুরু করেন মহাকাশচারীরা। কোনও বিঘ্ন ছাড়াই তাঁরা সফল ভাবে মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে যান। ডিসেম্বর থেকেই সেখানে রয়েছেন আরও তিন মহাকাশচারী। আজ যাঁরা মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছলেন তাঁরা পাঁচ মাস সেখানে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাশিয়ার তরফে জানানো হয়, আনেক দিন ধরেই যাত্রাপথ ছোট করার চেষ্টা করে আসছিলেন বৈজ্ঞানিকেরা। কিন্তু এই পথে যেতে হলে খুব সূক্ষ্ম হিসেবনিকেশের প্রয়োজন। একটু এদিক ওদিক হলেই রকেট ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখন বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির কন্ট্রোলিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় গতিপথ ঠিক করার আনেকটা কাজ কম্পিউটারই করে দেয়। ফলে ঝুঁকির সম্ভাবনাও অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞেরা। যাত্রাপথ ছোট হয়ে যাওয়ায় শুধু সময় কম লাগে তা-ই নয়, বমিবমি ভাব, মাথাঘোরা প্রভৃতি যে উপসর্গ ক্যাপসুলে থাকার কারণে মহাকাশচারীদের হত সেগুলোর হাত থেকেও রেহাই পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। জ্বালানি লাগছে কম। আর এই ঘটনায় উৎসাহিত কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা। কারণ এই পদ্ধতি সফল হলে মহাকাশে যাওয়ার খরচ যে কমবে। বাড়বে মহাকাশে যাওয়ার জন্য উৎসাহী পর্যটকদের সংখ্যা। |