পঞ্চায়েতে আসন বন্টন নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের দুই বাম শরিক সিপিএম-আরএসপির মতানৈক্য ছিলই। এ বার নতুন করে সিপিআই বেশি আসন দাবি করায় ফ্রন্টে সমস্যা বেড়েছে। গত বুধবার আসন নিয়ে ফ্রন্টে বৈঠক হয়। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই সিপিআই ৩০টি আসন দাবি করে। এর মধ্যে ২৫টি পঞ্চায়েতে এবং ৫টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন। এই অবস্থায় ফ্রন্টের আসন নিয়ে বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বের হয়নি।
ফ্রন্ট সূত্রের খবর, জেলায় বামফ্রন্ট কমিটিতে ফরওয়ার্ড ব্লক নেই। সিপিএম, আরএসপি এবং সিপিআই মিলে জোটবদ্ধ ভাবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্চের শুরুতে বৈঠক করে। গত ১৭ মার্চ প্রথম বৈঠক হয়। তাতে সিপিএম এবং আরএসপির মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে রফাসূত্র বের হয়নি। এর পরে ফের সিপিএম এবং আরএসপি দু’দল গত ২৩ মার্চ বৈঠকে বসে। তাতেও বেশ কিছু আসন নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছতে পারেনি দু-দল। নতুন করে সিপিআই-এর ৩০ আসনের দাবি পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী বলেন, “পঞ্চায়েতে সার্বিক জোট করেই ফ্রন্টগতভাবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কয়েকটি আসন নিয়ে নিজেদের মধ্যে দাবি দাওয়ার বিষয়গুলি আলোচনায় মিটে যাবে।” আর সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক অনিমেষ সাহা বলেন, “পঞ্চায়েতে ২৫টি এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে ৫টি আসন চেয়ে বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে। ফ্রন্টগতভাবেই আমরা পঞ্চায়েতে লড়ব। আরএসপির সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা হতে পারে।” আরএসপির জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিমল সরকার বলেন, “সিপিআই বাড়তি কিছু আসন চেয়েছে তারমধ্যে গতবারে আমাদের জেতা বালুরঘাটের দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনও রয়েছে।”
দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএমের ২৭টি এবং আরএসপির দখলে ২১টি পঞ্চায়েত রয়েছে। গত ভোটে সিপিআই গ্রামপঞ্চায়েতে মাত্র ৪টি আসন পেয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, গত ভোটের নিরিখে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএমের আসন বন্টন সূত্রের পাশাপাশি আরএসপির কিছু ক্ষেত্রে ‘বাস্তববাদী নীতি’র সংঘাতে পঞ্চায়েত স্তরে বেশ কিছু আসন ভাগাভাগি নিয়ে দু’দল একাধিক বৈঠক করেও সমঝোতায় আসতে পারেনি।
গত ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় সিপিএম এবং আরএসপি আলাদা লড়েছিল। এতে ফ্রন্টের ভোট ভাগাভাগিতে কিছু আসন বিরোধীরা পেয়ে যায়। আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী অবশ্য বলেন, “জেলায় বামফ্রন্টগতভাবে পঞ্চায়েতে লড়াই হবে। আলোচনায় সমস্যা মিটে যাবে।” |