পারিবারিক বিবাদ নিয়ে তৃণমূলে গোষ্ঠী-কোন্দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পারিবারিক বিবাদকে ঘিরেও শাসক দলের কলহ এ বার সামনে এসে পড়ল।
শিলিগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলের দুই গোষ্ঠীর ‘লড়াই’ থামাতে হস্তক্ষেপ করতে হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকেও। কোন্দল আড়াল করতে তিনি অবশ্য, দু-পক্ষের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
শিলিগুড়ির ওই ওয়ার্ডে দৃষ্টিহীন মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধার অভুযোগ ছিল, তাঁকে দেখভাল করছে না মেয়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক মহলে দরবার করতেও কসুর করেননি ওই বৃদ্ধা। সুফল না পাওয়ায় ৭৫ বছরের পুতুলরানি দে তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
আপ এ ব্যাপারে মা ও মেয়ের পক্ষ নিয়েছেন যথাক্রমে, এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা তথা তৃণমূল নেতা গোপাল সাহা ও অনিল প্রসাদ (পাপ্পু)। অনিলবাবু ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি। গোপালবাবুর অভিযোগ, তিনি বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ানোয় অনিলবাবু-সহ দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। স্থানীয় নেত্রী জ্যোৎস্না অগ্রবালও এ ব্যাপারে মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, গোপালবাবু এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে।
মন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই ওই বিষয়টি নিয়ে সমস্যা চলছে। পারিবারিক ব্যাপারে দল হস্তক্ষেপ করে না। বৃদ্ধা এবং তাঁর প্রতিবন্ধী মেয়ে উভয়েই যাতে ন্যায় বিচার পান তা দেখব।”
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার মহাসচিব কৃষ্ণ পাল জানিয়েছেন, দলীয় কোন্দল নয়। তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধী মেয়ে তার নামেই সমস্ত বিষয় সম্পত্তি করে নিয়েছেন বলে শুনেছি। বৃদ্ধা মা এবং প্রতিবন্ধী মেয়ে কেউই যেন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হন তা দেখা দরকার।” অনিলবাবুর দাবি, দলে বরাবর তারাই রয়েছেন। গোপালবাবু দীর্ঘদিন বাম দল করে এখন তৃণমূলে এসেছেন। কর্তৃত্ব দেখাতে চাইছেন। এলাকার মানুষ তাঁর সঙ্গে নেই।
পুতুলরানি দেবীর অভিযোগ, “স্বামী মৃত্যুর আগে বাড়ি, সম্পত্তি বড় মেয়ে দীপালির নামে দিয়ে যান। দীপালিকে বলে ছিলেন বৃদ্ধ বয়সে যাতে আমাকে দেখাশোনা করে। অথচ স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই দীপালি এবং ওর স্বামী আমার প্রতি দুর্ব্যবহার করছে।” এমনকী তাঁকে এবং ছোট মেয়েকে মারধর করা, তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে ঘর দখল করতে চাইছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধা।
বৃদ্ধার ছোট মেয়েই মাকে দিয়ে এ সব করাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জ্যোৎস্না অগ্রবাল। তিনি জানান, অনিলবাবুরা তাঁকে বিষয়টি জানালে তিনি প্রতিবন্ধী দীপালির পাশে দাঁড়ান। দীপালি দেবী বলেন, “মা বাড়িতে থাকুক আমিও চাই। বাবার পেনশনও মা পাচ্ছেন। তা নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু বোন এবং গোপাল সাহার মতো লোকজন মাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ সব মিথ্যে অভিযোগ করাচ্ছেন। কাজকর্মে বাইরে বার হলে হেনস্থা করার চেষ্টা করছেন। দুই ভাইও তাদের সঙ্গে যুক্ত।” |