ফের মামলা বন্দরের, যন্ত্রপাতি
সরানো আটকে গেল এবিজি-র

লকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে হলদিয়া বন্দর থেকে এবিজি-র যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেওয়ার পথ খুলেছিল। আবার উচ্চ আদালতে নতুন মামলার ফলেই সেই সব যন্ত্র সরানো নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হল। কলকাতা বন্দরের আপিল মামলায় ওই যন্ত্রপাতি সরানোর উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
২২ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা বন্দরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে পড়্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি-র যে-সব যন্ত্রপাতি আটকে রাখা হয়েছে, অবিলম্বে তা ছেড়ে দিতে হবে। ওই সংস্থা তাদের যন্ত্রপাতি দেশ-বিদেশের যে-কোনও জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে। সেই সঙ্গেই অকারণে মামলা করে হাইকোর্টের সময় নষ্ট করার জন্য কলকাতা বন্দরের চার লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছিলেন বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে কলকাতা বন্দর। বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি দীপক সাহারায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই আপিল মামলা গ্রহণ করে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে। তারা জানিয়ে দেয়, এই আপিল মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ রূপায়ণ করা যাবে না। অর্থাৎ এবিজি হলদিয়া বন্দর থেকে তাদের যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। শুধু তা-ই নয়, ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের নির্দেশের ফলে কলকাতা বন্দরকে আপাতত চার লক্ষ টাকা জরিমানাও দিতে হবে না।
হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে ২০১০ সাল থেকে কাজ করছিল এবিজি। পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করার সুবাদে ওই দু’টি বার্থে অন্যান্য বার্থের তুলনায় দ্রুত মালপত্র খালাস হচ্ছিল। এর ফলে ওই দু’টি বার্থে বেশি জাহাজ ভিড়ছিল। বন্দরের লাভও বাড়ছিল। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি হলদিয়া বন্দরে লাগাতার শ্রমিক-অশান্তি শুরু হয়। লাগাতার বিক্ষোভ চলে এবিজি-র দফতরে। গত সেপ্টেম্বরে হলদিয়ায় কাজ বন্ধ করে দেয় এবিজি। প্রশাসনের কাছে থেকে যথাযথ নিরাপত্তার না-পাওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় বলে এবিজি-র অভিযোগ। গত বছর পুজোর পরে তাদের তিন কর্তাকে অপহরণ করা হয়। তার পরেই এবিজি হলদিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
হঠাৎই কাজ বন্ধ করে দিয়ে এবিজি চুক্তি ভেঙেছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা বন্দরের তরফে মামলা করা হয় হাইকোর্টে। বন্দরের যুক্তি ছিল, এবিজি চুক্তিভঙ্গ করেছে। তারা কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কলকাতা বন্দরের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণ না-পেলে তারা এবিজি-কে হলদিয়া থেকে যন্ত্রপাতি সরাতে দেবে না বলে জানায় বন্দর। ২২ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বন্দর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য খারিজ করে দিয়ে হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে আটকে রাখা এবিজি-র সব যন্ত্রপাতি ওই সংস্থাকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, এবিজি তাদের ওই সব যন্ত্রপাতি প্রয়োজনে বিদেশেও নিয়ে যেতে পারবে।
এবিজি যাতে বিনা বাধায় তাদের যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তা দেখার জন্য স্পেশ্যাল অফিসারকে দায়িত্ব দেয় হাইকোর্ট। ওই নির্দেশের পরে এবিজি হলদিয়া বন্দর থেকে যন্ত্রপাতি সরানোর তোড়জোড় শুরু করে। এ দিন হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের ফলে সেই উদ্যোগ ধাক্কা খেল। এবিজি-কর্তৃপক্ষের সূত্রে এ দিন বলা হয়, তাঁরা আদালতের পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবেন। অন্য দিকে ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের নির্দেশে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.