নিখোঁজ দুই
ধাওয়া করে হোম পালানো নাবালিকাকে ধরলেন সুপার
ভুক্তভোগী। তাই দোলের দিন ফের হোম থেকে মেয়ে পালানোর খবর পেয়ে সময় নষ্ট করেননি মেদিনীপুরের বালিকা হোমের সুপার ভারতী ঘোষ। নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। মেদিনীপুর স্টেশনে পৌঁছে লোকাল ট্রেন থেকে এক নাবালিকাকে ফিরিয়ে আনেন ভারতীদেবী।
বুধবার ভোরে মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বালিকা হোম থেকে চার নাবালিকা পালায়। এক জনকে ধরে আনেন হোম সুপার। আর এক জনকে বুধবার রাতেই মেদিনীপুর শহর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বাকি দু’জনের খোঁজ মেলেনি। এই নিয়ে গত ছ’মাসে পাঁচ দফায় আবাসিক পালাল সরকার পরিচালিত এই হোমে। তবে সুপারের এমন ভূমিকা এই প্রথম।
হোম সূত্রের খবর, বুধবার ভোরে ওই চার জন নাবালিকা রক্ষীদের নজর এড়িয়ে হোমের ছাদে উঠে পড়ে। তিন তলার ছাদের পাশেই গাছ। গাছের ডাল ধরে নীচে নামে তারা। পরে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। তখন ভোর সাড়ে ৪টে। সাড়ে ৫টা নাগাদ হোম সুপারের কাছে খবর পৌঁছয়। এরপরই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভারতীদেবী। প্রথমে যান শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে। দেখেন গোটা এলাকা শুনশান। এলাকার কোথাও কেউ নেই। এরপর গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি পৌঁছন মেদিনীপুর স্টেশনে। প্ল্যাটফর্মে তখন হাওড়াগামী দু’টো লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে। ভারতীদেবী খোঁজ নিয়ে জানেন, তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের ট্রেনটি ছাড়ার সময় ৬টা ১০।
ঘড়িতে ৬টা ৫। দ্রুত পায়ে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এগোতে থাকেন ভারতীদেবী। হঠাৎ তাঁর নজরে আসে, পলাতক চার জনের এক জন ট্রেনে বসে আছে। দৌড়ে ট্রেনে উঠে পড়েন হোম সুপার। ভারতীদেবীর কথায়, “ট্রেনে আমরা খড়্গপুর পর্যন্ত যাই। পথে জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ করি।” খড়্গপুরেই ওই নাবালিকাকে নিয়ে নামেন হোম সুপার। খড়্গপুর জিআরপির ওসি আশিস রায় বলেন, “ওই ট্রেনে তল্লাশি চালানো হয়েছে। অন্য কারও খোঁজ মেলেনি।” তল্লাশি শুরু করে পুলিশও। রাতে মেদিনীপুর শহর থেকে আরও এক নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়।
গত ৫ মার্চ এই হোম থেকে এক তরুণী পালিয়েছিলেন। এখনও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। বারবার একই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে হোমের নিরাপত্তা। বুধবারের ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। হোমে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত, মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত, জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রবীর সামন্ত প্রমুখরা।
কেন বারবার এমন ঘটছে?
প্রশাসনিক কর্তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। মহকুমাশাসক শুধু বলেন, “তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” আর হোম সুপারের বক্তব্য, “যা জানানোর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” মেদিনীপুরের একমাত্র এই সরকারি হোমে দু’জন নৈশপ্রহরী রয়েছেন। নজরদারির জন্য এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্পও রয়েছে। সেখানে দফায় দফায় দায়িত্বে থাকেন আট জন পুলিশকর্মী। এর মধ্যেও কোথাও যে একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে, বারবার আবাসিক পালানোর ঘটনাতেই মিলছে তার প্রমাণ।

ফের হোমছুট
মেদিনীপুর বালিকা হোম থেকে আবারও আবাসিক পালানোর ঘটনা ঘটল। দোলের ভোরে চার জন নাবালিকা পালায়। হোম সুপার তাড়া করে এক জনকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ পাকড়াও করে আর এক জনকে বাকি দু’জনের খোঁজ চলছে। বারবার এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে সরকারি এই হোমের নিরাপত্তা
নভেম্বর ২০০৯
পাঁচিল টপকে দু’দফায় পালিয়ে গিয়েছিল ৯ জন তরুণী।

মার্চ ২০১০
এ বার পলাতক ১৬ জন তরুণী। পরে কয়েকজন উদ্ধার হয়। আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু
করে সিআইডি। তবে সিআইডি-র কাজ সন্তোষজনক না হওয়ায় তদন্তভার সিবিআইকে দেয় হাইকোর্ট।

অক্টোবর ২০১২
ঢিলেঢালা নিরাপত্তার ফাঁক গলে হোম পালাল দুই কিশোরী।

নভেম্বর ২০১২
রাতের অন্ধকারে হোম থেকে পালায় এক কিশোরী। পরে বিনপুর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

ফেব্রুয়ারি ২০১৩
অসুস্থ এক আবাসিকের দেখভালে এসে মেদিনীপুর মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় হোমের এক তরুণী।

৫ মার্চ ২০১৩
নিরাপত্তা রক্ষীদের নজর এড়িয়ে হোম থেকে পালাল এক আবাসিকা।
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.