পাহাড়ি দলকে কাঠফাটা গরমেও হারাতে ব্যর্থ নবিরা
মোহনবাগান-২ (টোলগে, মণীশ)
লাজং এফসি-২ (বৈথাং, লাললিম)
লাল-হলুদ ‘জার্সি’ পালটে বাগানে এসে ওঠা সেই জ্যোতিষীও কি এই পাহাড়ি ছেলের গতিবিধি বুঝতে ব্যর্থ?
না হলে বিগত তিন বছর বাগান-লাজং ম্যাচের যা-ই পরিস্থিতি থাক, সবুজ-মেরুন জার্সি দেখলেই তাঁর গোল করার অভ্যাস পালটায় না কেন? বৃহস্পতিবার খেলা শেষে লাজংয়ের মিডফিল্ডার বৈথাং নিয়ে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খেল কল্যাণীতে।
এ বারের আই লিগে মোহনবাগানের অভিযান শুরুর ম্যাচে এই বৈথাংই গোল করে ভেঙে দিয়েছিলেন সন্তোষ কাশ্যপের দলের মেরুদণ্ড। প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পরেও তাঁকে সামলাতে না পেরেই জেতা ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে ফিরল করিমের বাগান। লাজংয়ের হয়ে গোল করে এবং করিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের অবনমনের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিলেন মেরি কমের রাজ্যের ফুটবলার।
যাকে নিয়ে এত আলোচনা লাজংয়ের সেই তেরো নম্বর জার্সিধারী বৈথাং হাওকিপ বলছেন, “মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলার সময় একটা আলাদা তাগিদ থাকে।”
বৈথাং যখন এ কথা বলছেন, ড্রেসিংরুমের পথে বাগানের এ দিনের দুই গোলদাতা টোলগে এবং মণীশ মৈথানি। দু’বার এগিয়েও তিন পয়েন্ট নিয়ে না ফেরার যন্ত্রণা তাঁদের শরীরী ভাষায়।
গোল করেও হত্যোদম। কল্যাণীতে টোলগে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
টোলগেদের সঙ্গেই লাজং অবনমন বাঁচানোর মঞ্চে। কিন্তু বৃহস্পতিবার অ্যাওয়ে ম্যাচ ড্র করে তাঁরা ২২ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে কিছুটা স্বস্তিদায়ক জায়গায়। শিলংয়ের দলটির কোচ থাংবই সিন্তো বলেও দিলেন, “দুটো জয় পেলেই আর নামতে হবে না।” সেখানে জেতা ম্যাচ ড্র করে ১৭ ম্যাচে মোহনবাগান দাঁড়িয়ে রইল ১০ পয়েন্টে। টিভিতে ম্যাচ দেখে সাড়ে পাঁচ মাস আগের মোহনবাগান কোচ সন্তোষ কাশ্যপের প্রতিক্রিয়া, “পাহাড় থেকে নেমে আসা লাজংকে কলকাতার গরমেও হারানো গেল না! আমার প্রি-সিজন নিয়ে এত কথা বলে করিম নিজে কী করল?” আর করিম বলছেন, “মাঝমাঠের লড়াইয়ে ছেলেরা পারল না।” তাঁর মাথায় এখন ডেম্পো ম্যাচ।
৪-৩-৩ এ শুরু করে এ দিনও বিপক্ষ রক্ষণে চাপ রেখেছিলেন নবি-সাবিথ-টোলগে। মাঝমাঠে ডেনসনের জায়গায় নামা সুশান্তও সাধ্যমতো লড়ছিলেন। আর বিপক্ষের সুযোগ সন্ধানী পর্তুগীজ স্ট্রাইকার এডিনহোকেও কড়া নজরে রাখছিলেন ইচে-আইবররা।
করিমের এই ছক বুঝে লাজং কোচ চলে গেলেন ৪-৫-১-এ। রক্ষণে চার ব্যাকের সামনে দাঁড়িয়ে টোলগেকে ধরলেন জাপানজাত কোরীয় ফুটবলার মিনচল। স্ট্রাইকার এডিনহোর সঙ্গী সুশীল বারবার মাঝমাঠে নেমে এসে বল কাড়ছিলেন। কিন্তু এত সবের পরেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বিপক্ষ স্টপার পাশাকে গায়ে নিয়েই টোলগের এগিয়ে দেওয়া বাগানকে। কিন্তু সেই লিড থাকল মাত্র এক মিনিট। বৈথাংয়ের গোলের সময় জায়গায় ছিলেন না রাইট ব্যাক নির্মল। সিন্তোর পাঁচ মিডফিল্ডারের ভিতরের দু’জনকে ধরতে বারবার ভিতরে চলে আসছিল বাগানের দুই সাইডব্যাক। ফাঁকা জায়গা পাচ্ছিলেন দুই লাজং উইং হাফ। তা সত্ত্বেও সাত মিনিট পরে দুরপাল্লার ভলিতে বাগানকে ফের এগিয়ে দেন সুশান্তের পরিবর্ত মণীশ মৈথানি। কিন্তু এ বারও ডিফেন্ডারদের সঠিক জায়গায় না থাকার রোগে গোল শোধ লিংডোর পরিবর্ত লাললিমথারার। করিম পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কুইনটনকে তুলে নামালেন ওডাফাকে পর্যন্ত। কিন্তু তাতেও গোলের মুখ খোলেনি।
ম্যাচের পর সমর্থকরা দলগঠন নিয়ে মুণ্ডপাত করছিলেন করিমের। তাঁরা হয়তো জানতেন না, অরিন্দমের জ্বর, তৃতীয় গোলকিপার সুদীপ্ত পিতৃবিয়োগের কারণে নেই। ডেনসন সাসপেনশনে। মণীশ ভার্গবের চোট। যদিও টোলগে-নবিরা বলছেন, “ডেম্পোকে হারিয়ে কোচের মুখে হাসি ফেরাব। বাকি ন’ম্যাচে ছটা জিততেই হবে।” এই মরিয়া মনোভাবই এখন ভরসা বাগানের।
মোহনবাগান: শিল্টন, নির্মল, আইবর, ইচে, বিশ্বজিৎ, সুশান্ত (মণীশ), কুইনটন (ওডাফা), জুয়েল, নবি, সাবিথ (ফেলা), টোলগে।

ডেম্পোর হার, চার্চিলের ড্র
র‌্যান্টি-কার্লোসদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ইস্টবেঙ্গলের জন্য জোড়া ‘শুভেচ্ছা বার্তা’ এল আই লিগের দুটি ম্যাচ থেকে-
১) লিগ শীর্ষে থাকা চার্চিল ব্রাদার্স গোলশূন্য ড্র করল সালগাওকররের সঙ্গে।
২) পুণে এফ সি-র কাছে ২-০ হেরে গেল চিডিদের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে থাকা ডেম্পো।
আই লিগের টেবিলে বৃহস্পতিবার প্রচুর পরিবর্তন। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে চার্চিলের পয়েন্ট ফারাক হয়ে গেল তিন। আজ কল্যাণীতে ইস্টবেঙ্গল জিতলেই ছুয়ে ফেলবে শীর্ষে থাকা সুভাষ ভৌমিকের দলকে (৪৪)। লিগ টেবিলে আবার পুণে এ দিন জিতে চলে এল তিন নম্বরে। ডেম্পোকে চার নম্বরে ঠেলে দিয়ে। ডেরেক পেরিরার দল একটি ম্যাচ কম খেলেছে লড়াইতে থাকা বাকি তিনটি দলের চেয়ে। ফলে জেমস মোগারা কিছুটা সুবিধা জনক জায়গায়। চ্যাম্পিয়নের লড়াইতে থাকা দলগুলি পয়েন্ট নষ্ট করে যখন ইস্টবেঙ্গলের সুবিধা করে দিচ্ছে তখন মোহনবাগানের সঙ্গে অবনমনের লড়াইতে থাকা দলগুলি চমকে দিচ্ছে। নেমে যাওয়ার ব্যাপারে যাঁরা সবচেয়ে এগিয়ে সেই ভাইচুং ভুটিয়ার ক্লাব সিকিম ইউনাইটেড অঘটন ঘটাল ৫-০ এয়ার ইন্ডিয়াকে হারিয়ে। বিমানকর্মীরা অবশ্য খেলেন নয় জন নিয়ে। তাদের দুই ফুটবলার সুখবিন্দর সিংহ ও প্রেমকুমার লালকার্ড দেখেন। ২২ ম্যাচ খেলে এটি সিকিমের দু’নম্বর জয়। ওএনজিসি ১-১ ড্র করল স্পোর্টিং ক্লুবের সঙ্গে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.