|
|
|
|
জমি কার, সেই তরজাতেই থমকে বেআইনি দখল উচ্ছেদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শহরে দখল উচ্ছেদের দাবি জোরালো হচ্ছে। শাসক তৃণমূলও দখল উচ্ছেদের পক্ষে সওয়াল করেছে। যদিও প্রশাসন-পুরসভার মধ্যে চিঠি চালাচালি এখনও অব্যাহত। মহকুমাশাসক (সদর) চিঠি দিয়েছেন পুরপ্রধানকে। পুরপ্রধান আবার চিঠি দিয়েছেন মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে। প্রশাসন অবশ্য মানছে, যত দ্রুত সম্ভব দখল উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। না হলে পরবর্তীকালে সমস্যা হবে। একই বক্তব্য পুলিশেরও।
দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা ঘিরে বুধবার রাতে আবার মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলায় পথ অবরোধ হয়। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলে। যানজটের সৃষ্টি হয়। সমস্যায় পড়েন পথচলতি মানুষ। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পৌঁছন মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্ত। লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। মহকুমাশাসক সকলকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান। মেদিনীপুর শহরের নিবেদিতাপল্লিতে সরকারি জমি দখল হচ্ছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে সেখানে বেশ কিছু ঝুপড়ি তৈরি হয়েছে। এক সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের মদতে শহরে এ ভাবে সরকারি জমি দখল করা হয়। মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগরে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৩-৪ বছর ধরে মাঠের একাংশ বেআইনি ভাবে দখল করা হয়েছে। শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু, প্রশাসন সে ভাবে পদক্ষেপ করেনি। এ ক্ষেত্রেও কী তাই হবে, প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে শহরে। অভিযোগ, এ বার যাঁরা সরকারি জমি দখল করেছেন, তাঁরা তৃণমূল সমর্থক। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যার বক্তব্য, “দলকে হেয় করতে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে দলের নাম ব্যবহার করতে পারে। তবে ঘটনার সঙ্গে দলের এতটুকুও যোগ নেই।” তাঁর কথায়, “আমরাও দখল উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছি। আশা করি, পুলিশ-প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা পড়েছে মহকুমাশাসকের দফতরে। মহকুমাশাসক পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে পুরসভা এবং পুলিশকে জানিয়েছেন। শহরবাসীর বক্তব্য, আগেও এ ভাবে সরকারি জমি দখল হয়েছে। প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। এ ভাবে সরকারি জমি দখল হলে শহরে আর ফাঁকা জায়গা থাকবে না। মহকুমাশাসকের চিঠি পেয়ে পুরপ্রধান আবার মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে এক চিঠি পাঠিয়েছেন। কেমন? মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুর বক্তব্য, “সরকারি জমির দখল নিয়ে মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। দখল উচ্ছেদ হবে। তার আগে ওই এলাকায় পুরসভার কতখানি জমি রয়েছে, ভূমি দফতরের কতখানি জমি রয়েছে, তা দেখা জরুরি। এরপর ভূমি দফতর এবং পুরসভা একসঙ্গে দখল উচ্ছেদ করতে পারে।” তবে এ ভাবে চিঠি চালাচালিতে কী সময় গড়াচ্ছে না? প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি পুরসভা-প্রশাসন, কারও কাছেই। অরবিন্দনগরের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা বহুবার প্রশাসনের কাছে দরবার করেছিলেন। এলাকার পরিস্থিতি ঠিক কী, তা জানানো হয়েছিল। তবে, প্রতিবারই শুধু আশ্বাস মিলেছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি। বরং, প্রশাসনের উদাসীনতা চোখে পড়েছে। শহরবাসীর আশঙ্কা, চিঠি চালাচালির ফলে এ ক্ষেত্রেও তাই হতে পারে। পুলিশ-প্রশাসন অবশ্য আশ্বস্ত করছে, এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ করার চেষ্টা চলছে। |
|
|
|
|
|