গুরুত্ব দিচ্ছে না কংগ্রেস
উন্নয়ন-কাহিনি শুনতে মোদীকে মার্কিন আমন্ত্রণ
ব্রিটেন, ইওরোপীয় ইউনিয়ন আগেই সুর বদলেছিল। এ বার মোদী-মোহে মার্কিনরাও।
দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য ভারতে এসেছে ১৮ সদস্যের এক মার্কিন প্রতিনিধি দল। যার নেতৃত্বে ইলিনয়ের রিপাবলিকান সেনেটর অ্যারোন শক। সেই সফরেই গুজরাত-দর্শন এবং মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে মুগ্ধ মার্কিন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ভারতের একটা অঙ্গরাজ্য হয়েও গুজরাত কী করে এমন উন্নয়ন করল, সেই কাহিনি শোনানোর জন্য ‘করিৎকর্মা’ মোদীকে আমেরিকায় আমন্ত্রণও জানালেন অ্যারোন শক ও তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু এই আমেরিকাই তো গোধরা-কাণ্ডের পর থেকে মোদীকে সে দেশে যাওয়ার ভিসা দিতে আপত্তি জানিয়েছে। এমনকী ক’দিন আগেই আমেরিকার হোয়ার্টন স্কুলে তাঁর বক্তৃতা শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে। তা হলে? অ্যারোন শক-এর বক্তব্য, তাঁরা এ ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।
গুজরাতের উন্নয়নকে সামনে রেখেই গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে ক্রমশ তুলে ধরেছেন মোদী। তাঁর নিজের দল এবং জোট শরিকদের একাংশের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিজেপি তথা এনডিএ-র বৃহত্তর অংশ তাঁকেই সামনে রেখে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অবস্থায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের আমন্ত্রণ স্বাভাবিক ভাবেই উজ্জীবিত করছে বিজেপির মোদী-পন্থী নেতাদের।
মার্কিন রিপাবলিকান দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার গাঁধীনগরে। ছবি: পিটিআই
বিজেপি নেতাদের অনেকেরই বক্তব্য, মোদীর উন্নয়নের মডেল গোটা দেশের মানুষের কাছে আগ্রহ তৈরি করেছে। সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও ক্রমশ প্রভাব বাড়ছে মোদীর। বিজেপির দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই মোদীকে নিয়ে তুমুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মোদীই প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্য প্রার্থী। তা ছাড়া, শুধু পশ্চিম বা উত্তর ভারতে নয়, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও ‘বিকাশ পুরুষ’ মোদীকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। মোদী-শিবিরের দাবি, আম-আদমির আকাঙ্খাকে সম্মান দিতেই মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হোক। মার্কিন আমন্ত্রণ নিশ্চিত ভাবেই বিজেপি এবং এনডিএ-র অন্দরে মোদীর সমর্থনের হাওয়া আরও জোরদার করল বলে দাবি মোদী-পন্থীদের। তাঁদের বক্তব্য, মোদীর নেতৃত্বেই যে গুজরাতে বিপুল উন্নয়ন হয়েছে, মার্কিন প্রতিনিধি দলের আমন্ত্রণ তারই স্বীকৃতি।
বিজেপির এক নেতার কথায়, “ভবিষ্যতে মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে আমেরিকা নিজেদের স্বার্থেই তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাইবে। আমেরিকার অর্থনীতির যা হাল, তাতে মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখা সম্ভব নয় ওবামা প্রশাসনের। এই আমন্ত্রণের মধ্যে মোদীর সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের ভবিষ্যত সম্পর্কের বীজ লুকিয়ে রয়েছে।” অ্যারোন নিজেও বলেছেন, “আমরা উন্নয়নটা দেখলাম। গুজরাতে ব্যবসা করা তুলনায় অনেক সহজ।”
ওবামা প্রশাসন সরকারি ভাবে আমন্ত্রণ না জানানোয় মার্কিন প্রতিনিধিদলের এই আমন্ত্রণকে আজ গুরুত্বহীন বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। হোয়ার্টন স্কুলে মোদীর বক্তৃতা বাতিল প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ অলভি বলেন, “কিছু দিন আগেই হোয়ার্টন প্রশ্নে মুখ পুড়েছে মোদীর। তাই কংগ্রেস এই আমন্ত্রণের বিষয়টিকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।” তাঁর ব্যাখ্যা, প্রথমত, প্রতিনিধি দলটির সফরের অন্যতম আয়োজক হল বিজেপির বৈদেশিক শাখা। সাধারণত এই ধরনের যে দলগুলি সফরে আসে, তারা সৌজন্যের খাতিরেই তাদের দেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। দ্বিতীয়ত, মার্কিন প্রশাসন এই আমন্ত্রণের সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নয়। আলভির কথায়, “মোদী এত দিন যে ভাবে গোধরা কাণ্ডের জন্য ভিসা পাননি, আগামী দিনেও সেই কারণে ভিসা পাবেন না বলেই মনে করছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.