ভিড়ে-রোদে মলিন বসন্ত উৎসব
কেই বেনজির ভিড়। তার উপরে চূড়ান্ত অব্যবস্থা। দু’য়ে মিলে বুধবার শান্তিনিকেতনে নাকাল হলেন বসন্ত উৎসবে সামিল দেশবিদেশের পর্যটকেরা। যার জেরে আগামী দিনে বসন্ত উৎসবের দিন বদলের ভাবনা শুরু করেছে বিশ্বভারতীর কর্মিমণ্ডলী।
পুলিশ অবশ্য অব্যবস্থার কথা স্বীকার করেনি। এসডিপিও (বোলপুর) প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “আমরা সময়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। তাই এত জনসমাগমেও কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেনি।” পর্যটকরা অবশ্য বললেন, গরম, ধুলো, জলের অভাবে এমন দুর্ভোগের নজির নেই তাঁদের অভিজ্ঞতায়।
বিশ্বভারতীর আশ্রম এলাকায় চিনা ভবনের পাশে পাঁচিল টপকে ঢুকছেন পর্যটকেরা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই এ বছর আশ্রম মাঠের পরিবর্তে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল পৌষমেলার মাঠে। সকাল থেকেই ভিড় শুরু হয় মাঠে। কিন্তু দেখা যায়, মাঠের কোন দিক দিয়ে ঢুকবেন, কোথা থেকে অনুষ্ঠান দেখবেন, তা নিয়ে চরম বিভ্রান্তি। কলকাতার স্কুলছাত্রী মোনালিসা চৌধুরী বলে, “এক দিকের প্রবেশ গেটে পুলিশ আমাদের আটকে দিল।” মাঠের ঠিক মাঝখানে মঞ্চের সামনে শামিয়ানার নীচে খুব বেশি ৩০০জন বসতে পারেন। বাকি কয়েক হাজার দর্শকের কেউ মঞ্চের কাছাকাছি যেতে পারেননি। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে, বসন্ত উৎসবের মূলমঞ্চ থেকেই উপস্থিত দর্শকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত।
কলকাতা থেকে আসা পর্ণা ঠাকুর চক্রবর্তীর অভিজ্ঞতা, “বসার আসন নেই, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। পায়ে-পায়ে ধুলোর ঝড় উঠছিল। তারই সঙ্গে আবির মিশে এমন দমবন্ধ পরিস্থিতি হল যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন।” আবার মাঠের যতটুকু যা ফাঁকা জায়গা ছিল তা দখল করে বসেছিলেন হকারেরা। একটু ছায়া খুঁজতে নাকে-মুখে রুমাল চাপা দিয়ে দর্শক কোনও রকমে মাঠ ছাড়লেন।
অন্যান্য বছর ১৫-২০ হাজার মানুষ এলেও পুলিশের মতে এ বার এসেছিলেন প্রায় ৪৫ হাজার। উৎসবের আয়োজক বিশ্বভারতীর কর্মিমণ্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক সৌগত সামন্তের দাবি, এসেছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। তাঁর স্বীকারোক্তি, “বুঝতে পরিনি এত ভিড় হবে। আগামী বছর ভিড় এড়াতে দোলের দিন যাতে বসন্তোৎসব না হয়, তার জন্য ভাবতে শুরু করেছি।”
এই ভাবনাকে স্বাগত জানান রবীন্দ্র গবেষক সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুপ্রিয় ঠাকুর প্রমুখ। সুপ্রিয়বাবু বলেন, “বহু বার কর্তৃপক্ষকে দোলের দিন বসন্তোৎসব করতে বারণ করেছি।” আর সোমেন্দ্রনাথবাবুর আক্ষেপ, “রবীন্দ্রনাথ-প্রতিষ্ঠিত বসন্তোৎসব এখন আর আশ্রমিক অনুষ্ঠানের অঙ্গ নয়। তা বোলপুরের হোটেল-সহ অন্যান্য বাণিজ্যকেন্দ্রিক উৎসবের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।” তবে বিশ্বভারতীরই অপর একটি অংশের প্রশ্ন, দিন বদলালেই কি ভিড় এড়ানো যাবে?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.