মঙ্গলবার ভরসন্ধেয় খবরটা পেয়ে আমরা, মানে পুণে ওয়ারিয়র্সের অফিসিয়ালরা তো থ। এমনও আবার হয় না কি!
পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে আইপিএলে এমন অবশ্য বহুবারই হয়েছে। ওদের তো ভারতে আসাই বারণ। কিন্তু ভারতের একটা রাজ্যে এ ভাবে কোনও বিদেশের প্লেয়ারদের ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার নজির আছে বলে তো মনে পড়ে না। তবে বিষয়টা যেহেতু পুরোপুরি রাজনৈতিক আর কূটনৈতিক স্তরের, তাই এর ঠিক-বেঠিক বিচার করাটা আমার কম্মো নয়। নিশ্চয়ই তেমন কিছু সমস্যা রয়েছে, সেই জন্যই এই নির্দেশ।
তবে এর জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যে সমস্যায় পড়বে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ভাবুন তো একবার, চেন্নাই সুপার কিংসের অবস্থাটা? ওদের অর্ধেক আইপিএল অর্থাৎ আটটা হোম ম্যাচই খেলতে হবে দুই শ্রীলঙ্কান রিক্রুট নুয়ান কুলশেখর আর আকিলা ধনঞ্জয়কে ছাড়া। ওরা ধোনির দলের সঙ্গে চেন্নাইয়ে থাকতে পারবে কি না, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এই অবস্থায় ওরা কী করবে জানি না। আদৌ ওদের নিয়ে আসবে চেন্নাই, না ওদের বদলি দু’জনকে আনার অনুমতি চেয়ে আইপিএল কমিশনের কাছে আবেদন জানাবে, এটাই দেখার।
সমস্যা সেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদেরও, যাদের ক্যাপ্টেন শ্রীলঙ্কার। যেমন হায়দরাবাদ সানরাইজার্সের কুমারা সঙ্গকারা। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের অধিনায়ক মাহেলা জয়বর্ধনে। অধিনায়কদের ছাড়াই ওদের চেন্নাই রওনা হতে হবে। এমন পরিস্থিতি যদিও নতুন নয়, চোট-আঘাতের সমস্যায়ও অনেক সময় এমন ঘটে। কিন্তু এখানে কারণটা যে পুরো আলাদা! কোনও ক্রিকেটীয় কারণ নয়। তবে চেন্নাইয়ের মতো গুরুতর সমস্যায় পড়তে হবে না হায়দরাবাদ বা দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।
তাই বলে ভাববেন না, অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সমস্যা কম। আমাদের পুণে ওয়ারিয়র্সের কথাই ধরুন। শ্রীলঙ্কার দু’জন ক্রিকেটার রয়েছে আমাদের দলে। অজন্তা মেন্ডিস আর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ। দু’জনেরই দলে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অথচ ধোনিদের বিরুদ্ধে ওদের মাঠে নামার সময় অ্যাঞ্জেলো-অজন্তাকে না নিয়েই নামতে হবে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কথা ভাবুন। লসিথ মালিঙ্গাকে বাদ দিলে ওদের বোলিংশক্তি তো চেন্নাইয়ে অর্ধেক হয়ে পড়বে!
সমস্যার এখানেই শেষ নয়। চেন্নাইয়ে আমাদের আইপিএলের সাত নম্বর ম্যাচ খেলতে হবে। ছ’টা ম্যাচ খেলার পর যখন একটা কম্বিনেশন তৈরি হয়ে যাবে, তখন সাত নম্বর ম্যাচে আমাদের সেই কম্বিনেশন ভাঙতেই হবে। দরকার না পড়লেও কিন্তু তা করতেই হবে। কেকেআরের যেমন চেন্নাইয়ে ন’নম্বর ম্যাচ। গতবারের চ্যাম্পিয়নদের টিম কম্বিনেশনে যদি সেই সময় অফস্পিনার সচিত্র সেনানায়েকে অপরিহার্য হয়ে ওঠে, তখন তাকে বাদ দিয়ে খেলতে নামাটা সমস্যা বইকী। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের চেন্নাই ম্যাচ তো একেবারে শেষ দিকে। ওই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাহেলা আর জীবন মেন্ডিসের মতো ক্রিকেটারকে বসিয়ে রাখার চড়া মাশুল না দিতে হয়। তবু সব ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই হয়তো বলতে হবে, ‘যো হোগা দেখা যায়েগা’। উদ্ভূত পরিস্থিতি সে রকমই।
|