দোল পূর্ণিমার রাতে শিকার ঠেকাতে বন বস্তির বাসিন্দাদের নজরদারির কাজে লাগাচ্ছে বন দফতর। বন বস্তিতে নতুন লোকজনের আনাগোনার উপর বিষয়ে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে বন কর্মীরা। উত্তরবঙ্গ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অধিকাংশ বন বাংলো এই বিশেষ দিনে পর্যটকদের কোনও বুকিং দেয়নি বন দফতর। পাশাপাশি, গরুমারা ও চাপরামাড়ি অভয়ারণ্যে জিপ সাফারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার অবশ্য সাধারণত সাফারি বন্ধ থাকে। নিরাপত্তার অজুহাতে সাফারি বন্ধ রাখার ঘটনায় গরুমারা বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জলপাইগুড়ির ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “আমরা কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাই না। দিনরাত বন ও বনের বাইরে নজরদারি চালানো হবে। সেই জন্য জিপ সাফারিও বন্ধ রাখা হয়েছে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, গত বার দোলের দিন সন্ধ্যায় শিকারিদের রুখতেত কয়েক রাউন্ড শূন্যে গুলি চালাতে হয়েছিল বনকর্মীদের। গরুমারার কয়েকজন অফিসার জানান, গ্রাসমোড় ও বামনডাঙা এলাকার একদল মানুষ তির ধনুক নিয়ে নদী পেরিয়ে বনে ঢুকতে চাইছিল। সেই সময় শূন্যে গুলি না চালালে তাঁরা পাল্টা আক্রমণ করত। এবারও তা রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জলদাপাড়ার হলং বাংলো খোলা রাখা ছাড়াও জিপ সাফারি স্বাভাবিক রয়েছে। কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর জানান, গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গল পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
১৯৭২ সালে বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইন চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রতিবছর দোল উপলক্ষে আদিবাসীদের একটি সম্প্রদায়ের যুবকেরা অবাধে হরিণ, খরগোস শিকার করে গ্রামে নিয়ে প্রেমিকাকে উপহার দিতেন বলে অভিযোগ। আদিবাসীরা জানান, শিকারে সফল প্রেমিকের বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে প্রেমিকা অনায়াসে ভালবাসার পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি হতেন। আইনের ফলে জঙ্গলের ভিতরে শিকার বহু অংশে রোধ করা সম্ভব হলেও চোরাগোপ্তা শিকার এখনও চলছে। হস্তি বিশেষজ্ঞ ধৃতিকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী বলেন, “প্রেমিকার মন পেতে জঙ্গলে লুকিয়ে শিকার আজও করছে অনেকে। তা ছাড়া দোলের চাঁদনি রাত এবং ফাল্গুনে জঙ্গলে ঝোপঝাড় কম থাকায় শিকার করতে ততটা কসরত করতে হয় না।” |