এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন কাজে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবহারে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে যোগ দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এ দিনের সেমিনারে সহযোগিতা করছে তাঁর দফতরও। তিনি বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে যাঁরা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন এবং যে মানবসম্পদ রয়েছে তার পরিপূর্ণ ব্যবহারে উদ্যোগী আমরা। অতীতে এই প্রচেষ্টা হয়নি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কী ধরনের উন্নয়ন বা পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার সে ব্যাপারে বিভিন্ন প্রস্তাব সম্বলিত রিপোর্ট তৈরি করা হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে যুক্ত করতে চাই।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই দুই ভাগে বিভিন্ন পরিকল্পনার প্রস্তাব রাখা হবে। রিপোর্ট পেলে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাকে এলাকার উন্নয়নে যেমন ব্যবহার সম্ভব হবে তেমনই গবেষণার কাজে যাঁরা যুক্ত তাঁরা ওই সমস্ত প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকে হাতে কলমে কাজের সুযোগ পাবেন। আখেরে যা এলাকার বাসিন্দাদের উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে জানান মন্ত্রী। |
উন্নয়ন নিয়ে জাতীয় সেমিনার চলছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র। |
উত্তরবঙ্গের চা বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টিতুলে ধরেন রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সুগত মার্জিত। অসম, তামিলনাড়ুর চেয়ে এখানে চা শ্রমিকদের অনেক কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে বলে জানান। তাঁর কথায়, বাগানে শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার যে নিয়ম নীতি রয়েছে তার বদল চাই। ২০১১ সালে দেশের চা উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিতে ‘টি বোর্ড’-এর তরফে একটি সমীক্ষা করা হয়। চায়ের দাম এবং চা উৎপাদন ব্যবস্থায় যুক্ত শ্রমিকদের ভবিষ্যত উন্নয়ন নিয়ে তারা রিপোর্ট দেন।
সেখানেও শ্রমিক স্বার্থে বাগান কর্তৃপক্ষের যে নীতি রয়েছে তার সমালোচনা করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন উৎপাদন ক্ষেত্রে মুনাফা হলে তা যাতে শ্রমিকদের কাছেও পৌঁছয় সে ব্যাপারে সুষ্ঠু নীতি প্রয়োজন। চা বাগানের জমির একাংশে বিকল্প কাজের ব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রে করা হলেও তা যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তা দেখা দরকার বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, তামিলনাড়ুতে চা শ্রমিকদের মজুরি বেশি, চা ক্ষেত্রে শ্রমিক পরিবারগুলিতে শিক্ষিতের হার বেশি তা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে এই ক্ষেত্র থেকে শ্রমিকেরা অন্যত্র যাচ্ছেন না কেন, এখানকার শ্রমিকদের স্বার্থে বাগানগুলিতে কী নীতি থাকা উচিত তা নিয়ে আরও গবেষণা করা উচিত। |