সাংবাদিক সম্মেলনে জমি রক্ষা কমিটি |
আদিবাসীদের জমি উদ্ধারে উদ্যোগী নয় প্রশাসন, নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আদিবাসীদের দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে প্রশাসন সঠিক ভূমিকা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলল আদিবাসী জমি রক্ষা কমিটি। সোমবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই অভিযোগ করেন সংগঠনের সভাপতি বিমল হাঁসদা। তাঁর দাবি, বাম আমলে ইসলামপুরের ভদ্রকালিতে আদিবাসীদের ১২০ একর জমি জোর করে দখল করে একটি চা বাগান তৈরি হয়েছে। নতুন সরকার আসার পর আদিবাসীদের দাবি মেনে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি হয়। তাতে, ওই জমি আদিবাসীদের বলেই জানানো হয়েছে। কিন্তু, তার পরেও ওই জমি উদ্ধারে প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের তরফে র্জাীননো হয়েছে, সমস্ত পদ্ধতি সম্পন্ন হওয়ার আগেই আদিবাসীদের একাংশ ওই জমি দখল করে নিয়েছেন। উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
ইসলামপুরের মহকুমাশাসক সমনজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, “আদিবাসীদের দাবি মেনে ভূমি সংস্কার দফতর সমীক্ষা কের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই জমি সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। তার আগে ওখানে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কোনওরকম যাতে গণ্ডগোল না হওয়ায় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।” ওই চা বাগানের ম্যানেজার মনোজ ত্যাগী বলেন, “জমি দখলের অভিযোগ ঠিক নয়। ওই এলাকারই বাসিন্দারাই আমাদের ডেকে এনেছে। চা বাগান তৈরি হওয়ায় সমস্ত লোক কাজ পেয়েছে। তাঁরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। দু’একজন লোক নিজেদের স্বার্থে এমন অভিযোগ তুলছেন। আর জমির বিষয়টি পুরোপুরি বিচারাধীন। তার আগেই চা বাগানের একটি অংশ দখল করার চেষ্টা হচ্ছে।”
এদিন জমি রক্ষা কমিটির তরফে দাবি করা হয়, শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন ইসলামপুরের প্রায় দুই হাজার একর জমি আদিবাসীদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। প্রতিবাদ করে আক্রমণের মুখে পড়তে হওয়ায় আদিবাসীরা সে সময় কোনও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ওই সমস্যার কথা জানায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আদিবাসীরা জমি ফেরানোর জন্য লিখিত আবেদন করেন। সে হিসেবেই জেলা প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার দফতর সমীক্ষা করে রিপোর্ট তৈরি করে। তার ভিত্তিতেই ৪১২ জন আদিবাসীকে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, এখন পর্যন্ত সমস্ত আদিবাসী জমি ফেরত পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিমলবাবু জানান, ভদ্রকালির জমি উদ্ধারে প্রশাসন সঠিক ভূমিকা না নেওয়ায় আদিবাসীদের একাংশ ৭৭ একর জমি দখল নিয়েছে। এখন ওই জমি ফের পাল্টা দখলের চেষ্টা হচ্ছে। এমনকী তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করে। বিমলবাবু বলেন, “প্রশাসন কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় আদিবাসীরা জমি দখল নিয়েছে। আর প্রশাসনের রিপোর্টেই পরিষ্কার ওই জমি আমাদের। তাহলে সমস্যা হচ্ছে কোথায়।” তাদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়া আরেকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে পাশারুল আলম বলেন, “আদিবাসীদের জমি তাদের ফিরিয়ে দিতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন তাহলে প্রশাসনের অসুবিধে কোথায় হচ্ছে বুঝতে পারছি না।” |