পুরসভায় ফের সমস্যা
সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভার বাজেট বিতর্ক হয়েছে। তৃণমূল তা পাশ হয়নি বলে দাবি করছে। কংগ্রেসের দাবি পাশ হয়েছে। তৃণমূল মেয়রের উপর থেকে সমর্থন তোলার চিঠি দিয়েছে। তা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। পুরবোর্ড ভেঙে গিয়েছে কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছে শহরে। বাস্তবে বাজেট পেশের পরে কী হয়েছে, কী হতে পারে, পুরবোর্ড কোন পরিস্থিতিতে ভাঙতে পারে তা এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক।
পুরসভার কমিশনারের হাতে সমর্থন প্রতহ্যারের চিঠি তুলে দিচ্ছেন
কৃষ্ণ পাল। সঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলররা। —নিজস্ব চিত্র।
পুর বাজেট পাশ হল কি?
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের দাবি, ধ্বনি ভোটে বাজেট পাশ হয়েছে।

তৃণমূল কী বলছে?
বাজেট পাশ হয়নি। কারণ ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

তা হলে কী দাঁড়াল?
পুর কর্তৃপক্ষের তরফে চেয়ারম্যান এবং কমিশনার আলাদা ভাবে নগরোন্নয়ন দফতরে রিপোর্ট দেবেন। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। বাজেট পাশ হয়নি বলে নগরোন্নয়ন দফতর মনে করলে প্রশাসক/ ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার নিয়োগ করতে পারে।

তৃণমূলের সমর্থন প্রত্যাহারের গুরুত্ব কী?
পুর আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সমর্থন প্রত্যাহারের রাজনৈতিক তাৎপর্য থাকলেও আইনি কোনও গুরুত্ব নেই। কারণ মেয়রকে সরাতে অনাস্থা আনতে হবে।

কে আনতে পারে অনাস্থা?
৪৭ আসন বিশিষ্ট পুরসভায় অনাস্থা আনতে এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ অন্তত ১৬ জন কাউন্সিলরের সমর্থন দরকার। তৃণমূলের ওই সংখ্যক কাউন্সিলর নেই। বামেদের আছে (১৭ জন)।
পুরসভার বাইরে বামেদের নকল বাজেট অধিবেশন। —নিজস্ব চিত্র।
বামেরা কী বলছে?
পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।

বামেরা অনাস্থা আনলে কী হবে?
তৃণমূল সেই অনাস্থার পক্ষে কিংবা ভোটে অনুপস্থিত থাকলে কংগ্রেসের মেয়র অপসারিত হবেন। কিন্তু সিপিএমের হাত ধরে কংগ্রেসের মেয়রকে সরাতে তৃণমূল নামবে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন।

প্রশাসক / ডিডিও বসানো হলে কী হবে?
মেয়র-সহ কাউন্সিলররা ক্ষমতাচ্যুত হবেন। ৬ মাসের মধ্যে পুরসভার বাকি মেয়াদ কালের জন্য ভোট করাতে হবে। পুরসভার মেয়াদ ফুরচ্ছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। সেই অর্থে প্রায় দেড় বছর বাকি। প্রশাসক নিয়োগের পরে ওই সময়ের জন্য ভোট করানোর পক্ষে নন অধিকাংশ কাউন্সিলর।

এখন শহরবাসী কী ভাবছেন?
বাসিন্দাদের এক পক্ষ চাইছেন কংগ্রেস তৃণমূল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে বাকি দেড় বছর বোর্ড চালাক। অপর পক্ষ চাইছেন সরকার বোর্ড ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ করে পরিষেবা উন্নয়নের হাল ফেরাক।

একনজরে
• বাজেট বিতর্কে যাঁরা যুযুধান ছিলেন সেই সব কাউন্সিলরদেরই অধিকাংশকেই পাতপেড়ে খেতে দেখা গেল টিফিন এবং দুপুরের খাবার। টিফিনে ছিল সন্দেশ, কাজুবাদাম, চা, কফি এবং বিস্কুট। দুপুরের মেনুতে সরু চালের ভাত, মুগের ডাল, স্যালাড, আলুভাজা, সজনে ডাঁটা দিয়ে সুক্তো, ছোট মাছের চচ্চড়ি, পনিরের তরকারি, পাঁঠার মাংস, চাটনি, আইসক্রিম।

• পুর বাজেটে যোগ দিতে এসে চেয়ারম্যান নান্টু পালের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুরসভার একটি অ্যাম্বুল্যান্সের। নান্টুবাবু নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তিনি অবশ্য জখম হননি। পরে পুরসভার এক গাড়ি চালক এসে গাড়িটি ঠিক জায়গায় রাখেন।

• বামেদের নকল অধিবেশন হল পুরসভায়। মেয়র হন মৌসুমী হাজরা। চেয়ারম্যান অমরনাথ সিংহ। পথ চলতি মানুষেরা কেউ দেখে বাহবা দিলেন। আবার অনেককে বলতে শোনা গেল এই ‘নাটক’টাই বাজেট বৈঠকে গিয়ে করলে বাসিন্দাদের উপকার হত।

শিলিগুড়ি পুরভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট করে নির্বাচনে লড়ার সময় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং যে সব কাজ হয়েছে:

• বাম বোর্ডের আমলে কী কাজ হয়েছে কি হয়নি, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ।
হয়নি।

• কর কমিয়ে বকেয়া কর আদায়ে জোর
কর কমানো হয়নি। বকেয়া কর আদায়ও আশানুরূপ নয়।

• বাড়ির নকশা অনুমোদন এবং ড্রেড লাইসেন্স দিতে ‘এক জানলা’ পদ্ধতি।
কোনওটাই হয়নি।

• বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ভূগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালী তৈরি।
হয়নি।

• মানুষকে যাতে নাজেহাল হতে না হয় তার জন্য ‘জন অভিযোগ সেল’।
হয়নি।

• ডাম্পিং গ্রাউন্ড সরিয়ে সমস্যা মেটানো।
হয়নি।

• সংযোজিত ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা প্রশাসনিক পরিকাঠামো তৈরি যাতে তাদের রাজগঞ্জ বা জলপাইগুড়িতে যেতে না হয়।
হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.