|
|
|
|
সড়ক যেন ‘মৃত্যু-ফাঁদ’, পশ্চিমে বাড়ছে দুর্ঘটনা |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা। বৃদ্ধির হার দেখে উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশ-প্রশাসনও।
সেই বৃদ্ধির হার ঠিক কেমন?
২০১১ সালে যেখানে জেলায় ৫৯৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে ২০১২ সালে ৬৮০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে নিহত হয়েছেন ৩২২, জখম ৭২৫ জন।
পশ্চিম মেদিনীপুরকে ঘিরে রয়েছে চারটি জেলা। এক দিকে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার সীমান্ত। অন্য দিকে, পূর্ব মেদিনীপুর-হুগলি। জেলার মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে ১৮৮.৫ কিলোমিটারের ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ ছাড়াও রয়েছে ৩৬১.৫ কিলোমিটারের রাজ্য সড়ক। পরিসংখ্যান বলছে, দু’টি জাতীয় সড়কই সব থেকে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। বিশেষ করে, জাতীয় সড়কের বেশ কয়েকটি এলাকা যেন ‘মৃত্যু-ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। |
|
পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ডিএসপি (ট্রাফিক) মনোরঞ্জন ঘোষকে কিছু নির্দেশও দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী। পুলিশ সুপারের কথায়, “দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্ণিত করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই দুই জাতীয় সড়কের ২৯টি এলাকাকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে দাঁতন, নারায়ণগড়, বেলদা, ডেবরা, খড়্গপুর লোকাল, শালবনি ও মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার বিভিন্ন এলাকা। ‘ব্ল্যাক স্পট’ এলাকাগুলোয় বাড়তি নজরদারির কথৈ বলা হলেও এত অল্প পুলিশ নিয়ে কীভাবে তা সম্ভব সেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশের মধ্যেই। যদিও ডিএসপি (ট্রাফিক) জানান, “পথ দুর্ঘটনা কমাতে সব রকম চেষ্টা চলছে।” |
দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান
জাতীয় সড়কে |
বছর |
দুর্ঘটনার সংখ্যা |
মৃত |
জখম |
২০১০ |
২৯২ |
১৬৮ |
৩১৭ |
২০১১ |
২৭১ |
১৬৮ |
৩১৪ |
২০১২ |
২৮১ |
১৩৫ |
৩৪৮ |
রাজ্য সড়কে |
২০১০ |
১২৭ |
৭০ |
১১৭ |
২০১১ |
১০৪ |
৪৮ |
১১৩ |
২০১২ |
১২৬ |
৫৯ |
১৪২ |
অন্য রাস্তায় |
২০১০ |
২৬৭ |
১৩০ |
৩১৯ |
২০১১ |
২২৩ |
১১৩ |
২৪১ |
২০১২ |
২৭৩ |
১২৮ |
২৩৫ |
|
দু’টি জাতীয় সড়ক বাদে জেলায় রাজ্য সড়কগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেলদা-কেশিয়াড়ি (১২.৫ কিমি), কেশিয়াড়ি-কুলবনি (১৫ কিমি), খড়্গপুর-কেশিয়াড়ি (২৭ কিমি), দাসপুর-ঘাটাল (৭ কিমি), চন্দ্রকোনা-ঘাটাল (২৩ কিমি), চন্দ্রকোনা-গড়বেতা (২৩ কিমি), গোয়ালতোড়-চন্দ্রকোনা (৩৭ কিমি), বেলদা-জাহালদা (২২ কিমি)। ২০১১ সালে রাজ্য সড়কে সব মিলিয়ে ১০৪টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৪৮ জনের, জখম হয়েছিলেন ১১৩ জন। ২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১২৬। মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের, জখম হয়েছেন ১৪২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় সড়কে ২৩টি দুর্ঘটনায় ১৮ নিহত হয়েছেন। আর জখম ৫৪। রাজ্য সড়কে ৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ জন। রাজ্য সড়কগুলোর একাংশ ধুঁকছে সংস্কারের অভাবে। পিচ উঠে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। ফলে, বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। সেই সঙ্গে জেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর দু’দিক আরও চওড়া করা না হলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে আশঙ্কা প্রশাসনেরই। |
|
|
|
|
|