লোকে বলে, তাঁর নাকি বিশেষ আবেগ নেই। জিতলে যেমন চুপচাপ থাকেন, হারলেও তাই।
বিশ্বকাপ জিতিয়ে ব্যাটটা শূন্যে এক বার পাক দেওয়া ছাড়া আর কিছু করেননি। কোটলায় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটকে অসম্মানের অতলে পাঠিয়েও স্রেফ স্টাম্পটা তোলা। ব্যস।
তখনও বোঝা যায়নি, এমএসডি-র মধ্যেও এতটা আবেগ লুকিয়ে থাকতে পারে। বোঝা যায়নি, কোটলার মাঠে নয়। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ‘ভিকট্রি ল্যাপ’-টা দেবেন ফমুর্লা ওয়ান ট্র্যাকে! বদলার ৪-০ জিতে ওঠার পরের দিনই।
বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে পছন্দের সুপারবাইক ‘এক্স ১৩২ হেলক্যাট’-এর উপর বসে তিনি। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের ট্র্যাক রীতিমতো ধুলো উড়িয়ে ছাড়ছেন। কখনও পিছনে প্রজ্ঞান ওঝা। কখনও বা একাই। |
বুদ্ধ সার্কিটে ছিলেন সচিন-কোহলিরাও। সোমবার। |
এমএস ধোনিকে আজ রোখে কে?
পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ তিন দিনে চুকিয়ে সোমবার সকালে আচমকাই নয়ডার বুদ্ধ সার্কিটে এসে উপস্থিত হন ধোনি-সহ ছ’জন ভারতীয় ক্রিকেটার। যাঁদের মধ্যে ছিলেন স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকরও। বিরাট কোহলি হাজির স্পোর্টস কার সমেত। ইশান্ত শর্মার সঙ্গী আবার তাঁর পছন্দের ‘অডি’।
এর পর এফ ওয়ান ট্র্যাকে যে যাঁর মতো ক্রিকেট ছেড়ে গতির দুনিয়ায়।
বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে এর আগে আসার অভিজ্ঞতা আছে সচিনের। ২০১১-র ভারতীয় গ্রাঁ প্রি-র সময় চেকার্ড ফ্ল্যাগ হাতে তিনিই ছিলেন। এ দিনও যখন ট্র্যাকে ঢোকেন, উপস্থিত এক কর্তা সচিনকে গাড়ি করে ঘুরিয়ে দেখান ট্র্যাক। কিন্তু ধোনির এটাই প্রথম আসা। ভীমগতিতে বাইক চালিয়ে প্রবল তৃপ্ত ধোনি পরে বলেও ফেলেছেন, “দুর্দান্ত একটা অভিজ্ঞতা হল। আমি অনেক দেরি করে বোধহয় এই ট্র্যাকে এলাম। তবে এখানে যখন সুপার স্পোর্টস সিরিজ হবে, তখন নিশ্চয়ই আসব।” |
ভারতীয় শিবিরের মনন, মেজাজ এর পর নতুন করে বলে বোঝানোর দরকার পড়ে না। শুধু ধোনির টিম ইন্ডিয়া নয়, বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন পর্যন্ত আবেগ সামলাচ্ছেন কোনওক্রমে। “বরাবর এই টিমটার উপর আমরা বিশ্বাস রেখে এসেছি। ওরা তার মর্যাদা দিয়েছে,” একটি চ্যানেলে বলেছেন শ্রীনিবাসন। সচিনের অবসর-প্রসঙ্গও সোজা স্টেপ আউট করে ফেলে দিচ্ছেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। “সচিন নিয়ে কথা বলার মতো যোগ্যতা আমাদের কারও আছে কি? আমার তো মনে হয় না।”
ধোনিদের সংসারে যতটা স্বস্তি, ঠিক ততটাই অশান্তির আগুনে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। ব্রাউনওয়াশের পর মাইকেল ক্লার্ক-শেন ওয়াটসনদের মোটামুটি পিষে ফেলছে অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যম। বলা হচ্ছে, গত চৌত্রিশ বছরে অস্ট্রেলিয়ার এটাই সবচেয়ে জঘন্য টিম। সঙ্গে থাকছে মিডিয়ার একটা সতর্কবার্তাও: হাড়ভাঙা খাটুনিতে ক্রিকেটীয় এবং মানসিক ভাবে যদি এই টিম ফিরতে না পারে, তা হলে কোনও সন্দেহ নেই অ্যাসেজে ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া হাসপাতালের ‘মেন্টাল ওয়ার্ড’-এ পরিণত হবে!
|