ঘরছাড়া কর্মীদের ফেরাতে মরিয়া হুগলির বাম নেতারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে জেলার ঘরছাড়াদের ফেরানোর যাবতীয় দায়ভার রাজ্য নেতৃত্বের উপরেই ন্যস্ত করল হুগলি জেলা বামফ্রন্ট।
আসন সমঝোতা এবং সার্বিক ঐক্যের লক্ষ্যে সোমবার শ্রীরামপুরে বসেছিল জেলা বামফ্রন্টের বৈঠক। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, এ বার জেলায় আসন রফা নিয়ে শরিকদের সঙ্গে সে ভাবে বিবাদ হয়নি সিপিএমের। শুধু ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত, দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং দু’টি জেলা পরিষদ আসনে সমঝোতায় আসা যায়নি। তা নিয়ে জেলা নেতৃত্ব আর সিদ্ধান্ত নেবেন না। এর দায়ভার রাজ্য কমিটির উপরে ন্যস্ত করা হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, “আসন ভাগাভাগির সমস্ত তালিকা মঙ্গলবার রাজ্য কমিটির কাছে জমা দেওয়া হচ্ছে। যে ক’টিতে কিছুটা সমস্যা রয়েছে, সেগুলির ব্যাপারে রাজ্য কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে।” অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দাবি করেছেন সুদর্শনবাবুরা। সেই সঙ্গে বিডিও ছাড়াও মহকুমাশাসক, জেলাশাসকের কাছেও যাতে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়, সেই দাবি তুলেছে বামেরা।
বস্তুত, এ বার সারা জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে চিন্তায় রয়েছে ফ্রন্টের সব শরিক দলই। অবশ্য, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু আগেই নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব ক্ষেত্রে আসন সমঝোতায় আসা যাবে না, বড় শরিক হিসেবে সিপিএমকেই সেই সব আসনে আত্মত্যাগ করতে হবে। কিন্তু জেলা সিপিএমের অনেকেই মনে করছেন, প্রার্থী খুঁজতে তাদের মতো নাকাল হতে হবে শরিক দলগুলিকেও। কেননা, এ বার মহিলা প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। তা ছাড়া, এ বার ফ্রন্টের হাতে রাজ্যের ক্ষমতা না থাকায় প্রার্থী হতে অনেকেই আগ্রহ দেখাবেন না।
হুগলিতে বামফ্রন্টের কাছে ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকেরাও একটা বড় সমস্যা। ফ্রন্টের হিসেবে, এ পর্যন্ত অন্তত দু’হাজার কর্মী-সমর্থক গ্রামছাড়া। ফব নেতা নৃপেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘরছাড়ারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন কি না, সে প্রশ্ন পরে। কিন্তু ওঁরা কেন ভোট দিতে পারবেন না? প্রশাসনকে জানিয়ে কাজ হয়নি। তাই রাজ্য বামফ্রন্টকেই কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করা হয়েছে।”
আরামবাগ, তারকেশ্বর, ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়ায় ঘরছাড়াদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। বাম আমলে একই ভাবে শ’য়ে শ’য়ে তৃণমূল কর্মী ঘরছাড়া ছিলেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসায় পর চিত্রটি উল্টে গিয়েছে। প্রতিবারই ঘরছাড়ারা নির্বাচন কমিশনের চাপে কোনওক্রমে ভোট দিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন পুরনো ডেরায়। এ বার দেখার, প্রশাসন ঘরছাড়াদের প্রশ্নে কী অবস্থান নেয়। |