নয়ছয়ে নীরব থাকবে না কোর্ট |
কর্মীদের ঢোকা বন্ধ, ঘেরাটোপে সমবায় ব্যাঙ্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রামকৃষ্ণপুর সমবায় ব্যাঙ্কে ওই সংস্থার কোনও কর্মী আপাতত ঢুকতে পারবেন না। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিপ্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি মুরারিপ্রসাদ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে ওই ব্যাঙ্কে রাতদিন পাহারার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
ওই সমবায় ব্যাঙ্কের আমানতের টাকা সরিয়ে ফেলা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় জানান, সাধারণ মানুষের কষ্টের টাকা সরিয়ে ফেলা হবে আর হাইকোর্ট নীরব থাকবে, তা হয় না। ডিভিশন বেঞ্চ রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীর কাছেও এই মামলার প্রতিলিপি পাঠাতে হবে। আবেদনকারীদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বলা হয়, আগামী শুনানির দিন যাতে কেন্দ্রের কোনও সিনিয়র আইনজীবী এই গুরুত্বপূর্ণ মামলায় উপস্থিত থাকেন, সেই জন্যই তিনি যেন কেন্দ্রের কাছে ওই প্রতিলিপি পাঠান।
ডিভিশন বেঞ্চ এর আগে রাজ্যের সমবায় দফতরের যুগ্ম রেজিস্ট্রারকে রামকৃষ্ণপুরের ওই সমবায় ব্যাঙ্ক চালু করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। সেই ব্যাপারে হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট পেশেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। কিন্তু যুগ্ম রেজিস্ট্রার ব্যাঙ্কে যাননি এবং আদালতে কোনও রিপোর্টও দেননি। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন যুগ্ম রেজিস্ট্রারকে হাইকোর্টে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্যাঙ্কে যাননি কেন?
যুগ্ম রেজিস্ট্রার আদালতে বলেন, খোঁজ করেও তিনি ব্যাঙ্কের চাবি পাননি। তাই ব্যাঙ্কে ঢুকতে পারেননি। তিনি বলেন, “চাবি পাইনি বলেই কাজ করতে পারিনি। আর কাজ করতে পারিনি বলেই রিপোর্টও দিতে পারিনি।” যুুগ্ম রেজিস্ট্রারের এই বক্তব্য শুনে আবেদনকারী গ্রাহকদের আইনজীবী সুব্রতবাবু বলেন, ব্যাঙ্কের কয়েক জন কর্মী ও ডিরেক্টরের কাছে চাবি রয়েছে। কী ভাবে কয়েক হাজার গরিব ও সাধারণ মানুষের তিল তিল করে জমানো টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তার সমর্থনে কাগজপত্র পেশ করেন তিনি। কী ভাবে টাকা সরানো হয়েছে, তার একটি উদাহরণ দেন সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, ওই সমবায় ব্যাঙ্ক এক রিকশাচালককে সাত লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে বলে দেখিয়েছে। কিন্তু সেই রিকশাচালকের কোনও অস্তিত্বই নেই। এ ভাবেই এই ঐতিহ্যবাহী সমবায় ব্যাঙ্কে জমা রাখা প্রায় ১০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। |