|
|
|
|
সপরিবার দাদাকে খুন, বোন হাজতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
ভাড়াটে খুনি দিয়ে নিজের দাদা-বৌদিকে খুন করানোর অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে পূর্ব সিংভূমের ঘাটশিলায় ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক ভাড়াটে খুনিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত মহিলার নাম পদ্মাবতী ঠাকুর। সম্পত্তির লোভে ওই মহিলা তার দাদা লালমোহন মহাকুর, বৌদি লীলাবতী মহাকুর (৩৫) ও ভাইপো সোনু মহাকুরকে (২২) ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছে। একই সঙ্গে খুনিদেরও সে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীরা জানান, প্রত্যেককেই ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে খুন করা হয়। রবিবার রাত আটটা নাগাদ পদ্মাবতী থানায় গিয়ে জানায় তার দাদা-বৌদিকে খুন করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘাটশিলার পঞ্চপাণ্ডব গ্রামে পদ্মাবতীর বাড়িতে এসে দেহগুলি উদ্ধার করে। ক্ষুরের আঘাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছটফট করতে থাকা সোনুকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকেও বাঁচানো যায়নি। পূর্ব সিংভূমের পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজীবরঞ্জন সিংহ জানান, পদ্মাবতী থানায় খবর দিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তার বয়ানের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির অসংগতির ফলেই পুলিশের তার উপরেই সন্দেহ বর্তায়। |
|
থানায় পদ্মাবতী ও তার ভাড়াটে খুনি সাগর। সোমবার, ঘাটশিলায়। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী |
পদ্মাবতী প্রথম থেকেই পুলিশের কাছে নিজের কোনও না কোনও আত্মীয়ের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে। যা নিয়ে পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ হতে থাকে। একবার সে জানায়, ঘটনার পর থেকেই তার মা ও অন্য এক ভাইয়ের বউ গা ঢাকা দিয়েছে। আবার একবার সে জানায়, জামশেদপুরের জুগসলাইয়ের বাসিন্দা, তার এক ভাই সুরজ ঘটনায় জড়িত। তদন্তকারীরা জানান, জেরার সময় পদ্মাবতীর হাতে-মুখে নখের টাটকা আঁচরের দাগ তারা খেয়াল করেন। যা দেখে পুলিশের দৃঢ় ধারণা হয় পদ্মাবতীর সঙ্গে কারও ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়েছে। কিন্তু সেটা খুনির সঙ্গে নাকি যাঁরা খুন হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে-তা নিয়েই ধন্দে পড়ে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, মহিলার বয়ান খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশ রাতেই জানতে পারে সুরজ শেষ দু-তিন দিন ধরে জামশেদপুরেই নেই। আবার রাতেই এলাকার লোকজনের কাছ থেকে পুলিশ খবর পায়, রবিবার দুপুরেই পদ্মাবতীকে সন্দেহজনক কয়েকজনের সঙ্গে পঞ্চপাণ্ডব গ্রামেই দেখা গিয়েছে। সন্দেহজনক দুই যুবকের মধ্যে সাগর ও বিট্টু নামে দু’জনের সন্ধান পায় পুলিশ। স্থানীয় সোমাই বস্তি থেকে পুলিশ বিট্টুকে রাতেই তুলে আনে। তাকে জেরা করেই শেষ পর্যন্ত রহস্য ভেদ করে পুলিশ। বিট্টুর বয়ান থেকেই পুলিশ জানতে পারে, ক্ষুর দিয়ে গলার নলি কাটার কাজ তারাই করেছে। কিন্তু মুখ বাঁধার সময় পদ্মাবতী তাদের সাহায্য করেছে। যার ফলে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়েছে। সাই কারণেই মহিলার মুখে আঁচড়ের আঘাত লাগে। |
|
|
|
|
|