|
|
|
|
দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ায় প্রাণ দিতে হল বিহারের তথ্য-কর্মীকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
বিহার আছে বিহারেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে সত্যেন্দ্র দুবের মতোই খুন হতে হল রাম ঠাকুরকেও।
মুজফ্ফরপুরের রন্তৌলি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরুষোত্তমপুরের রাম ঠাকুর শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের শাগরেদরা তাঁকে ঘিরে ধরে গুলি করে। তখনও তিনি মারা যাননি। অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করেন স্থানীয় থানার ওসি। রাম ঠাকুরের সঙ্গে থাকা ভাইপো সুজিতের অভিযোগ, “তখনও কাকা মারা যাননি। গ্রামবাসীরা জড়ো হতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। আমরা যখন একটি টেম্পোতে চড়িয়ে কাকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি সেই সময় ঘটনাস্থলে হাজির হয় কুরহানি থানার ওসি সফির আলম।” সুজিতের দাবি, সফির কাকাকে নিয়ে হাসপাতালে যাবে বলে একটি নম্বরহীন ভ্যানে তাঁকে তোলে। কিন্তু সুজিত বা গ্রামবাসীদের কাউকেই ওই গাড়িতে তোলে না। অভিযোগ, পাঁচ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে পৌঁছতে সফির ঘুরপথ নেয়। ফলে পৌঁছতে দু’ঘন্টা সময় লাগে। রক্তক্ষরণের ফলে গাড়িতেই মারা যায় রাম ঠাকুর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইচ্ছা করেই ওসি এমন কাজ করে।
ঘটনার শুরু ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা মুখিয়া রাজকুমার সাহনির বিরুদ্ধে রাম ঠাকুরের আনা দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরেই। রাম ঠাকুর গত বছর ‘তথ্য জানার অধিকার’ আইনে ১০০ দিনের কাজের বেশ কিছু বিষয় জানতে চান। সব তথ্য তাঁকে দেওয়া হয়নি। কিন্তু যে তথ্য তাঁর হাতে উঠে আসে তাতেই দুর্নীতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। শুধু এই কাজই নয়, সৌর বিদ্যুতের আলো সরবারহ করা নিয়েও বেশ কিছু দুর্নীতির খবর তিনি জানতে পারেন। সেই অনুযায়ী তিনি ভিজিল্যান্স আদালতে একটি অভিযোগও দায়ের করেন। এর পর থেকেই মুখিয়ার সঙ্গে রাম ঠাকুরের বিরোধ শুরু হয়।
রাম ঠাকুরকে খুনের হুমকি দেওয়া হতে থাকে। কুরহানি থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। অভিযোগ এর আগেও তাঁর বাড়িতে হানা দেয় সাহনির লোকজন। হামলা চালায় তাঁর উপর। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় যখন রাম ঠাকুর বাড়ি ফিরছিলেন সেই সময় ৬ জন তাঁকে ঘিরে ধরে। তাঁদের মধ্যে থেকে কেউ এক জন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাঁর ভাইপো সুজিত কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে থানার ওসি-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও মুখিয়া রাজকুমার সাহনি, তাঁর তিন ছেলে, দুই ভাইপোর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মুজফ্ফরপুরের সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার বলেন, “এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই এই খুন বলে মনে করা হচ্ছে। থানার ওসিকে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশের যোগসাজস আছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।” |
|
|
|
|
|