মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে ছ’দিন কেটে গেলেও ধাপা-মাঠপুকুর কাণ্ডে এখনও অধরা তৃণমূল কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাও।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষের সাফাই, “শম্ভুনাথের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে।” পুলিশ এখনও কেন গ্রেফতার করতে পারছে না শম্ভুনাথকে? পুলিশকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, যখনই শম্ভুনাথকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে, তখনই তল্লাশির আগাম খবর পৌঁছে যাচ্ছে তাঁর কাছে। যার ফলে পুলিশ যাওয়ার আগেই ওই কাউন্সিলর ডেরা পাল্টে ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন। কী করে তল্লাশির গোপন খবর আগে-ভাগেই পৌঁছে যাচ্ছে শম্ভুনাথের কাছে? তদন্তকারীদের সন্দেহ, পুলিশের মধ্যেই শম্ভুনাথবাবুর কিছু ‘বন্ধু’ রয়েছেন। তাঁরাই পুলিশি অভিযানের গোপন খবর আগেভাগে তাঁর কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলরের খোঁজে দক্ষিণ শহরতলির বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হলেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে পুলিশকে। রাজনৈতিক মহলের খবর, শম্ভুনাথবাবু আগাম জামিনের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠেরা আইনজীবীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে পরামর্শ করছেন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শহরতলির কোথাও নিরাপদ ‘আশ্রয়ে’ রয়েছেন অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলর। রাজনৈতিক এক নেতার আশ্রয়েই তিনি রয়েছেন বলে পুলিশের একাংশ মনে করছে।
গত বুধবার ধাপা-মাঠপুকুরে একটি বহুতল নিয়ে গোলমালের সময়ে মারধরের ফলে মারা যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা অধীর মাইতি। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাওয়ের নাম উঠে আসে। সে দিনই বাঁকুড়ার ঝিলিমিলির সভা থেকে শম্ভুনাথকে ধরতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে নিহত নেতার বাড়িও যান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী-সহ শাসক দলের শীর্ষ নেতারা শম্ভুনাথের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও তদন্তকারীরা পাকড়াও করতে পারেননি অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে। কেন এই ‘ব্যর্থতা’, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে লালবাজারের অন্দরেই। পাশাপাশি, গার্ডেনরিচের ঘটনার উল্লেখ করে পুলিশের একাংশ বলছে, মুন্নাকে ধরতে না পারার জন্য রঞ্জিতকুমার পচনন্দা বদলি হয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে এখানে শাস্তির খাঁড়া স্থানীয় থানার ওসি-র উপরে নামল কেন, সে প্রশ্ন পুলিশমহলে উঠতে শুরু করেছে। |