দিনেদুপুরে এক শিশুর গলায় ছুরি ধরে নগদ টাকা-সহ গয়না লুঠ করে পালাল দূুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকাল দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার রিপন স্ট্রিটে। অভিযোগ দায়ের হলেও ওই ঘটনায় এ দিন রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
অভিযোগ, ওই বহুতলের চার তলায় মহম্মদ মুমতাজ খান নামে এক ব্যক্তির ফ্ল্যাটে তিন দুষ্কৃতী ঢুকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও সোনার বালা লুঠ করে বলে অভিযোগ। ওই পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, সে সময়ে ফ্ল্যাটে ছিল আফরিন খান নামে বছর বারোর এক কিশোরী ও মুমতাজের আড়াই বছরের শিশুসন্তান। |
ফ্ল্যাটে ঢুকে শিশুর গলায় ছুরি ধরে ডাকাতি। |
মুমতাজের স্ত্রী ফরজানা খাতুন জানান, সকাল পৌনে দশটা নাগাদ তিনি এক মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। আর এক মেয়ে জাফরাকে নিয়ে ফ্ল্যাটে একাই ছিল তাঁর বোন আফরিন। সাড়ে দশটা নাগাদ ফ্ল্যাটে ফিরে ফরজানা দেখেন, ঘর লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে। আলমারি খোলা। ঘরের ভিতরে ঠকঠক করে কাঁপছে আফরিন।
কী হয়েছিল ওই আধ ঘণ্টায়? আফরিন ফরজানাকে জানিয়েছে, দশটা নাগাদ ‘ঠক ঠক’ শব্দ শুনে সে দরজা খোলে। তার পরেই মুখ বাঁধা তিন দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের কাছে কোনও অস্ত্র ছিল না। ভিতরে ঢুকে তারা ব্যবসার কাগজপত্র দেখতে চায়। আফরিন চেঁচানোর চেষ্টা করলে রান্নাঘরে থাকা সব্জি কাটার ছুরি নিয়ে দুষ্কৃতীরা জাফরার গলায় ধরে। এর পরে আফরিনকে আলমারি থেকে টাকা-গয়না বার করতে বলে তারা। মিনিট পনেরোর মধ্যেই কাজ হাসিল করে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয় বলে ফরজানার অভিযোগ।
ফরজানা জানান, রিপন স্ট্রিটে তাঁদের একটি এসটিডি বুথ ও রেশন দোকান আছে। ঘরের ওই হাল দেখে তিনি দোকান থেকে দেওর ইমতিয়াজকে ডাকেন। ইমতিয়াজ ও তাঁর পরিচিতেরা এসে পুলিশে খবর দেন। ওই আবাসনে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। তবে গেট দিয়ে ঢোকার মুখে একটি ঘরে দু’জন কেয়ারটেকার থাকেন। তাঁরা দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে অপরিচিত কোনও ব্যক্তিকে ঢুকতে-বেরোতে দেখেননি বলে জানিয়েছেন। ফরজানাদের আশপাশের ফ্ল্যাটের লোকেরাও কিছু টের পাননি।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চার তলায় ফরজানাদের ফ্ল্যাট লন্ডভন্ড। খাটের উপরে ছড়িয়ে রয়েছে কাগজপত্র। ঘরের ভিতরে দাঁড়িয়ে ফরজানা ও ইমতিয়াজের সঙ্গে কথা বলছেন পার্ক স্ট্রিট থানা এবং লালবাজারের ডাকাতি-দমন শাখার অফিসারেরা। ফরজানা বলেন, “দুষ্কৃতীরা হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিল বলে আফরিন জানিয়েছে।”
ফরজানা পুলিশকে জানান, রেশন দোকানের মালিকানা নিয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁর স্বামীর গোলমাল রয়েছে। এই ঘটনার পিছনে সেই আত্মীয়েরা থাকতে পারেন বলে ফরজানা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে ডাকাতির ঘটনা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশায় রয়েছে পুলিশও। যদিও এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, “অভিযোগ দায়ের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্ত শুরু হয়েছে।” |