উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে রেলে বোঝাই হয়ে ভিন্ যেতে শুরু করল আলু। এক দিকে সহায়ক মূল্যে সরকারের আলু কেনা, অন্য দিকে অন্য রাজ্যে রফতানির জেরে সম্ভবত উঠতে চলেছে খোলা বাজারে আলুর দাম।
সোমবার হুগলির তারকেশ্বর স্টেশনে ৪০ বগির মালগাড়িতে আলু বোঝাই করার কাজ চলছিল। তা পাঠানো হচ্ছে ওড়িষার সম্বলপুরে। সেখানে আরও আলুর চাহিদা রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এর আগে উত্তরবঙ্গ থেকেও আলু রেলপথে অন্য রাজ্যে গিয়েছে। এক সময়ে উত্তরবঙ্গে আলুর মান এবং উৎপাদন কোনওটাই তেমন ছিল না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। মান এবং উৎপাদন দুই-ই বেড়েছে। সেই কারণে সেখান থেকেও আলু অন্য রাজ্যে পাড়ি যাচ্ছে। |
মালগাড়িতে বোঝাই করা হচ্ছে আলু। ছবি: দীপঙ্কর দে। |
মরসুমের একেবারে প্রথম দিকে চাষিরা আলুর দাম ভাল পেলেও পরে কিন্তু চিত্র আমূল বদলে যায়। আলুর দাম নামতে নামতে ৫০ কেজির বস্তার দর দাঁড়ায়১৮০ টাকায়। যা এমনকী চাষের খরচের চেয়েও অনেকটাই কম। এই নিয়ে চাষিদের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছিল। সুযোগ বুঝে বিরোধী দলগুলিও শোরগোল শুরু করেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে সম্ভবত এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি সহায়ক মূল্যে আলু কেনার নির্দেশ দেন। সরকারি কাজে চেনা দীর্ঘসূত্রিতার বদলে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নেমে যায় কৃষি বিপণন দফতর।
প্রথমে তারকেশ্বরের একটি হিমঘরে ক্যাম্প করে আলু কেনা শুরু হয়। দাম দেওয়া হয় কুইন্ট্যাল প্রতি ৫৫০ টাকা অর্থাৎ বস্তায় ২৭৫ টাকা করে। চাষিদের হাতে-হাতে চেক দিয়ে মিটিয়ে দেওয়া হয় দাম।ধনেখালির কানা নদী এলাকার চাষি গোপাল মান্নার কথায়, “আলু চাষ করতে বিঘে প্রতি ১৬-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরকার আলু না কিনলে চাষিরা বিপাকে পড়তেন।”
সরকারি স্তরে এই উদ্যোগ কার্যকর হতেই খোলা বাজারের ছবিটাও পাল্টাতে শুরু করে। এত দিন যে ব্যাপারিরা আলুর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছিলেন না, তাঁরাই ফের আলু কিনতে উদ্যেগী হন। তাতে বাজারদর কিছুটা হলেও বাড়ে। তারকেশ্বরের কেশবচক গ্রামের চাষি গোপাল পাল বলেন, “দু’বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। বাজার পড়ে যেতে চিন্তায় ছিলাম। এ দিন জ্যোতি আলুর প্যাকেটের দাম মিলেছে ২৪০ টাকা। যত দিন যাবে, আলুর বাজার ততই চাঙ্গা হবে বলেই আমাদের ধারণা।”
|