সিউড়ি পুরসভায় ‘বিদ্রোহ’ চলছেই
অনাস্থার পরে এ বার বাজেট বয়কট
লেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রথমে অনাস্থা এনেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একটা বড় অংশ। এ বার ফের নিজেদেরই পুরপ্রধানের উপরে জলপ্রকল্প শেষ করতে না পারার দায় চাপিয়ে সাধারণ ও বাজেট অধিবেশনও বয়কট করলেন তাঁরা। ছয় ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল কাউন্সিলরের এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেসেরও তিন জন। তার আগে অবশ্য রীতি মতো বিক্ষোভ দেখিয়ে তাঁরা সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়কে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন।
মাত্র কয়েক দিন আগেই উজ্জ্বলবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন ১৮ সদস্যের সিউড়ি পুরবোর্ডের ১১ জন কাউন্সিলরই (তৃণমূলের ৬ ও কংগ্রেসের ৫)। গত ১৬ মার্চ অনাস্থা ভোটের দিন অবশ্য সেই ফল গিয়ে দাঁড়ায় ৯-৯-এ। অনাস্থার পক্ষে থাকা দুই কাউন্সিলর শেষ মুহূর্তে ‘বিদ্রোহী’দের পাশ থেকে সরে দাঁড়ান। সোমবার সেই দুই কাউন্সিলরকে ছাড়াই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ফের সংঘটিত হলেন ওই ৯ জন কাউন্সিলর। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার পর্যাপ্ত টাকা দিলেও জলপ্রকল্পের কাজ সিউড়ি পুরসভা এখনও শেষ করতে পারেনি। যার জেরে এই গরমে সিউড়ি পুর এলাকায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়বেন। তাঁদের আরও দাবি, কাজ শেষ না হওয়ার নেপথ্যের কারণ হল, উজ্জ্বলবাবুর নেতৃত্বাধীন বর্তমান বোর্ড ওই জলপ্রকল্পের একটা অংশের টাকা অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছে।
জল প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হল না কেন? প্রশ্ন কাউন্সিলরদের। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষে তৃণমূলের কাউন্সিলর দীপক দাস বলেন, “অনাস্থার সময় পুরপ্রধান পরাজয় নিশ্চিত জেনে যে ভাবেই হোক দু’জন কাউন্সিলরকে নিজের পক্ষে ভোট দেওয়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ দিন আমরা দলমত নির্বিশেষে ৯ জন কাউন্সিলর একজোট হয়েছি। পুরপ্রধানকে জবাবদিহি করতে হবে, কেন তিনি জলপ্রকল্পের কাজ এখনও বাস্তবায়িত করতে পারলেন না। আমরা চাই সিউড়িবাসীর কাছে সেই সত্যটা দ্রুত প্রকাশ হোক।” প্রতিবাদে ৯ কাউন্সিলরই এ দিনের সাধারণ ও বাজেট অধিবেশনকে ‘অবৈধ’ বলে দাবি করে বয়কট করেন।
বয়কটের পিছনে দীপকবাবুদের যুক্তি, “গত ১৬ মার্চ অনাস্থা বৈঠক হয়। সই-সহ রেজোলিউশন না হওয়ায় সেই বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। আমরা মনে করি সিউড়ি পুরসভায় এখনও অনাস্থা বহাল আছে। এ নিয়ে আমরা হাইকোর্টেও একটি মামলা করেছি। কাজেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত, অনাস্থা বহাল থাকাকালীন পুরপ্রধান কোনও বৈঠক করতে পারেন না। তাই এ দিনের সাধারণ ও বাজেট বৈঠক বাতিল হয়েছে।” তাঁদের এই যুক্তি অবশ্য উজ্জ্বলবাবুরা মানতে নারাজ। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই জলপ্রকল্পের কাজ কিছুটা বাকি আছে বলে দাবি করে উজ্জ্বলবাবু বলেন, “আসলে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ না হওয়ায় কিছু কাউন্সিলর সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে প্ররোচিত করতে চাইছেন।” তিনি জানান, এ দিনের সাধারণ ও বাজেট বৈঠকে ৯ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। তাঁর দাবি, “সদর মহকুমাশাসক চন্দ্রনাথ রায়চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে সমস্ত নিয়ম মেনেই এ দিন সাধারণ ও বাজেট বৈঠক করা হয়েছে।” যদিও তৃণমূলেরই দীপকবাবুর যুক্তি, “বাজেট বৈঠক করতে গেলে ১৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে কম করে ১০ জনকে উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু এ দিন ৯ জন কাউন্সিলর তো আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। তাই এই বৈঠক সম্পূর্ণরূপে অবৈধ।” সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল পুরপ্রধান অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, “এক তৃতীয়াংশ কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলেই বৈঠক করা যায়। এ দিন বৈঠকে ৯ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। তাই এই বৈঠকের বৈধতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই তোলা যায় না।” একই মত উপপুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়েরও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.