নোবেল চুরির ঠিক আট বছরের মাথায় বিশ্বভারতীতে আবার ঘটে গেল বড়সড় চুরির ঘটনা। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ইন্টারনাল অডিট বিভাগ এবং কনফিডেনসিয়াল বিভাগের দু’টি ঘর থেকে নথি ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক চুরির অভিযোগ উঠল। কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবার ভোরে রক্ষীদের ডিউটি পরিবর্তনের সময় ওই বিভাগের দরজায় ভাঙা তালা নজরে আসায় চুরির ঘটনা জানা যায়। গোপন নথি সরাতেই দুষ্কৃতী-হানা কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও শুরু হয়েছে সমালোচনা।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি কম্পিউটার ও ক্যাশবাক্স আটক করে ঘরগুলি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা এসে ঘরগুলি পরীক্ষা করবেন। বীরভূমের পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।” বিশ্বভারতীর মিডিয়া ইন্টারফেস কমিটির চেয়ারপার্সন সবুজকলি সেন বলেন, “কী চুরি গিয়েছে জানা যায়নি।” পুলিশ ও বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, রাতে ওই কার্যালয়ে দু’জন মাত্র রক্ষী ছিলেন। ভোরে চুরির খবর পেয়ে তদন্তে যায় শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাতের ও সকালের রক্ষী ও ওই দুই বিভাগের কর্মীদের। বিকেলে তদন্তে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবস্মিতা দাস।
নোবেল চুরির পরে এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করতে গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি কিছু সুপারিশ করে। কিন্তু তার অধিকাংশই মানা হয়নি বলে কর্মীদের একাংশের অভিযোগ। এই প্রশাসনিক ভবনে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক ও কর্মীদের যাবতীয় তথ্যের সঙ্গে বিশ্বভারতীর নানা হিসেবপত্র থাকে। সেখানে কেন সিসিটিভি নেই, প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশকর্মীরাও। জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন বিশ্বভারতীর কর্মকর্তারা।
তবে দুষ্কৃতী-হানা নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে একই পদে থাকা কিছু আধিকারিককে সম্প্রতি অন্য বিভাগে সরিয়ে দিয়েছেন। শেষ হতে চলেছে অর্থবর্ষ। তার আগে কিছু নথি সরিয়ে কর্তৃপক্ষকে অপ্রস্তুত করার জন্য কোনও মহল এই কাজ করে থাকতে পারে। কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে, ২০০৯ ও ২০১০ সালে পৌষ মেলা আয়োজনের কিছু হিসেবের নথি অমিল থাকায় কেন্দ্রীয় কর বিভাগ তা চেয়ে পাঠিয়েছে। তার আগেই ওই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চুরির অভিযোগ সন্দেহ জুগিয়েছে। বিশ্বভারতীর কর্মীসভার সভাপতি দেবব্রত সরকার বলেন, “আমরা সিবিআই তদন্ত চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছি।” পুলিশ সুপার বলেন, “সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।” |